সময়ের গুরুত্বপূর্ণ কবি ও লেখক নওশাদ জামিলের জন্মদিনে কাব্যশীলনের শুভেচ্ছা

কাব্যশীলন প্রতিবেদন

এ সময়ের একজন সংবেদী ও গুরুত্বপূর্ণ কবি ও কথাসাহিত্যিক হিসেবে নওশাদ জামিলের খ্যাতি ও পরিচিতি সর্বজনবিদিত। কবিতার জন্য অধিক খ্যাতি ও পরিচিত পেলেও সাহিত্যর নানা শাখায় তাঁর অবাধ বিচরণ। কবিতার পাশাপাশি গল্প, ভ্রমণ, প্রবন্ধ, সম্পাদনা, শিল্প-সমালোচনাসহ সাহিত্যের নানা শাখায় কাজ করছেন দীর্ঘদিন ধরে। দেশ-বিদেশের গুরুত্বপূর্ণ সাহিত্য সাময়িকী, লিটল ম্যাগাজিন, জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে তাঁর বহুমাত্রিক লেখাপত্র। আজ ১ লা মে, শুক্রবার। নন্দিত কবি ও লেখক নওশাদ জামিলের জন্মদিন। তাঁর জন্ম ১৯৮৩ সালের ১ মে, ময়মনসিংহের ভালুকায়। শৈশব কেটেছে ভালুকার সিডস্টোর বাজার এলাকায়। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পড়াশোনা সেখানেই। তারপর চলে আসেন ঢাকায়, ভর্তি হন ঢাকা স্টেট কলেজে। উচ্চমাধ্যমিকের পর পড়াশোনা করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে, সরকার ও রাজনীতি বিভাগে। সেখান থেকেই স্নাতক ও স্নাতকোত্তর।

নওশাদ জামিলের পেশা সাংবাদিকতা। সাংবাদিকতার শুরুতে কাজ করেন দৈনিক প্রথম আলোয়। বর্তমান কাজ করছেন দৈনিক কালের কণ্ঠের বার্তা বিভাগে, সিনিয়র রিপোর্টার হিসেবে। তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘তীর্থতল’ প্রকাশিত হয় ২০১১ সালের অমর একুশের গ্রন্থমেলায়। বইটির প্রকাশক ঐতিহ্য। একই প্রকাশনী থেকে ২০১৪ সালে বের হয় দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ ‘কফিনে কাঠগোলাপ’। ২০১৬ সালের গ্রন্থমেলায় তৃতীয় কাব্যগ্রন্থ ‘ঢেউয়ের ভেতর দাবানল’ প্রকাশ করে প্রকাশনা সংস্থা অন্যপ্রকাশ। ২০১৭ সালের গ্রন্থমেলায় ভ্রমণগ্রন্থ ‘লঙ্কাপুরীর দিনরাত্রি’ প্রকাশ করে পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স। ২০২০ সালের গ্রন্থমেলায় প্রকাশিত হয় তাঁর চতুর্থ কাব্যগ্রন্থ ‘প্রার্থনার মতো একা’। বইটির প্রকাশক অন্যপ্রকাশ। এ ছাড়াও সম্পাদনা করেছেন ‘কহন কথা: সেলিম আল দীনের নির্বাচিত সাক্ষাৎকার’ (যৌথ) ও ‘রুদ্র তোমার দারুণ দীপ্তি’ (যৌথ) শিরোনামের দুটি বই ও পত্রিকা।

কবিতা ও সাংবাদিকতার জন্য ইতিমধ্যে নওশাদ জামিল অর্জন করেছেন বেশ কিছু পুরস্কার ও সম্মাননা। কবিতার জন্য পেয়েছেন কালি ও কলম তরুণ কবি ও লেখক পুরস্কার, বিশাল বাংলা সাহিত্য পুরস্কার এবং ভারতের পশ্চিম বঙ্গ থেকে পান আদম সম্মাননা পুরস্কার। অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার জন্য পান ইউনেস্কো-বাংলাদেশ জার্নালিজম অ্যাওয়ার্ড, মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী স্মৃতি পুরস্কার।

জন্মদিন উপলক্ষে নওশাদ জামিল তাঁর ফেসবুক স্টেটাসে অনুভূতি প্রকাশ করে লিখেছেন, ‘জন্মদিন এলো অদ্ভুত এক সময়ে, ১ মে, ২০বিষ! সনদপত্রের জন্মতারিখ নয়, প্রকৃত জন্মদিন আজ। জন্মদাত্রী মাকে মনে করি, আমৃত্যু তাঁর কথা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবো।

জন্মদিন এলো যখন, চারদিকে তখন মারি ও মৃত্যুর মিছিল। এ মিছিলে কখন কে শরিক হবে, তার কোনো গ্যারান্টি নেই। তারপরও আমি বাঁচতে চাই জীবনের কিছু স্বপ্নের জন্য। জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত যে খুব মূল্যবান, এ সত্য প্রথম যৌবনে বুঝিনি। এখন মর্মে উপলব্ধি করি যে, প্রতিটি সময় এবং জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত অত্যন্ত মূল্যবান। যতদিন বাঁচবো, জীবনকে উপভোগ করবো। যতদিন বাঁচবো, জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত সত্য ও সুন্দরের পথে ব্যয় করবো।

এ করোনাকালে, সংকটের দোলাচলেও প্রতীজ্ঞা অটুট আছে আমার। চমৎকার কিছু সাহিত্যকর্ম রেখে যেতে চাই মহাকালের জন্য। এ আমার প্রকৃত স্বপ্ন। উচ্চমানের তেমন কিছুই লিখিনি, এখনও লিখতে পারিনি। সত্যিই জানি না কতদিন বাঁচবো, যতদিন বাঁচবো, প্রতিটি মুহূর্ত চেষ্টা করে যাবো স্বপ্নের জন্য। এ জন্য শরীর ও মনের প্রতি যত্নবান হয়েছি। অনেক ত্যাগ ও তিতিক্ষা শেষে উপলব্ধি করেছি, এ পৃথিবীতে এসেছি যখন, তখন পৃথিবীকে কিছু দিয়ে যাবো। জীবনকে অর্থময় করে যাবো।

করোনাকাল শেষে নতুন পৃথিবী আসবে। মানুষ জীবন ও প্রকৃতিকে ভালোবাসবে। এ প্রার্থনা করি।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *