কিশোর অনু-উপন্যাস।। উদোম বুড়োর গবেষণা রহস্য।। আশিক মুস্তাফা।। পর্ব এক
এই সেদিনও উদোম বুড়োকে মেসেজ পাঠিয়েছে ভূত। কী মেসেজ? প্যালিনড্রোম বাক্যে লেখা- ‘চার সের চা’। মেসেজ পাঠিয়েছে রতেভু ভূতের আইডি
Read Moreএই সেদিনও উদোম বুড়োকে মেসেজ পাঠিয়েছে ভূত। কী মেসেজ? প্যালিনড্রোম বাক্যে লেখা- ‘চার সের চা’। মেসেজ পাঠিয়েছে রতেভু ভূতের আইডি
Read Moreপর্ব : ০২ উদোম বুড়োর গবেষণাগার এই উদোম বুড়ো যে পাড়াগাঁয়ের লোক, তা বুঝতেই পেরেছো। পাড়াগাঁয়ের হলেও তার কাজকর্ম দুনিয়া
Read Moreপর্ব তিন পর্ব : ০৩দৌড়ে আছে লেক্সিকোগ্রাফার এই পেপারটাই কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে উদোম বুড়োর। দেশের প্রথম সারির এক সংবাদপত্রের সাংবাদিক টিকটিকির মতো তার পিছু নিয়েছে। উদোম বুড়ো মানুষের সঙ্গে এমনিতেই তেমন মেশেন না। মেশার সময়ও পান না। কিন্তু এই সাংবাদিক নানা কায়দা- কানুন করে তার সঙ্গে একবার দেখা করে। তার পর নিয়মিত যোগাযোগ রাখার চেষ্টা চালায়।বাধ্য হয়ে একদিন তাকে সময় দেয় উদোম বুড়ো। আর সেদিনই কথায় কথায় তিনি সাংবাদিককে তার স্বপ্নের কথা বলে দিয়েছেন। এতেই ঘটল বিপত্তি। সাংবাদিক সেই কথার সঙ্গে তেল-মশলা মাখিয়ে একটা রিপোর্ট করে দেন। শিরোনাম- উদোম গবেষক ও ভূত-এলিয়েন লেক্সিকোগ্রাফার।এই সংবাদ নজরে পড়ল ভূতদের। তারা মানুষের খোঁজখবর যেমন রাখে, তেমনি মানুষের পত্রপত্রিকাও পড়ে। আর যে খবরের শিরোনামে তারা জড়িত, তা নিয়ে তো একেবারে গবেষণা শুরু করে দেয়। রিপোর্টটি পড়ে উদোম বুড়োর স্বপ্নের কথা জেনে গেল ভূত সমাজও। তার পর ইন্টেলেকচুয়াল অথরিটি রতেভূ‚ ভূতের দলটাকে ডেকে তাদের ওপর দায়িত্ব দিয়ে দিল।কী দায়িত্ব?উদোম বুড়োর স্বপ্ন বাস্তবায়নের দায়িত্ব। তারপর রতেভূ ভূতের নজর উদোম বুড়োর ওপর। নানাভাবে ভূতরা তার গবেষণাগারে এসে বোঝাতে চেয়ে পিছু হটলো। কিছুতেই চিড়ে ভিজল না। উল্টো ভূতদের শাসিয়ে বললেন, শুধু স্বপ্ন নয়; এই মুহূর্তে আমার এইম ইন লাইফ হচ্ছে লেক্সিকোগ্রাফার হওয়া। যদিও এর জন্য সময় প্রয়োজন।তবে ভূতরা সেই সময় দিতে চায় না তাকে। তাই উদোম বুড়ো বলেন, বেশি বাড়াবাড়ি করলে ভূত বানানোর যে গোপন ফর্মুলা গবেষণা করে বের করেছি, সেই ফর্মুলা ধরে নকল ভূত বানানো শুরু করব।এই কথা শুনে ভূতরা একটু অপ্রস্তুত হয়ে পড়ে। এর পর তারা নানাভাবে তাকে অনুসরণ করলেও বিভিন্ন গোপনীয়তা মেনে চলে। তার আনাগোনা যেখানে দেখা যায়, আশপাশেও থাকে না রতেভূ‚ ভূতের দল। থাকলেও পলকে আড়ালে-আবডালে চলে যায়। তবে রতেভূ‚ ভূতের নজরে যে পড়ে তার রেহাই নেই। উদোম বুড়োও রেহাই পাবে বলে মনে হয় না। তারা মাঝখানে কিছুদিন নীরব ছিল। এখন আবার তাদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে উদোম বুড়োকে নাজেহাল করা শুরু করেছে। গবেষণাগারে বসে সে দিন উদোম বুড়ো বৃষ্টি উপভোগ করছেন। আর তখনই একদল ভূত টিনের চালে শুয়ে বৃষ্টির শব্দ বন্ধ করে দেয়। হুট করে আবার সরে যায় চাল থেকে।একটু বৃষ্টি পড়ে। ফের টিনের ওপর শুয়ে বৃষ্টির শব্দ বন্ধ করে দেয়। উদোম বুড়ো এতে বিরক্ত হয়ে একটা বাচ্চা ভূত ধরে এনে পিঁপড়ার ঢিবিতে ছেড়ে দেন। আর অমনি কালো পিঁপড়ার কামড়। একেবারে কামড়ে লাল করে দেয়। বড় ভূতরা ভয়ে কাছে আসার সাহস পায় না।পরে উদোম বুড়োরই ভূতের বাচ্চাটার জন্য মায়া হলো। পিঁপড়ার ঢিবি থেকে ভূতের বাচ্চাটাকে তুলে এনে মুখে এক ফোঁটা মধু দিয়ে ছেড়ে দিলেন। রতেভূ‚ ভূতের দল এই ঘটনার সময় কিছু না বললেও পরে ক্ষেপে ওঠে। উদোম বুড়োর টিনে ঢিল ছুড়তে শুরু করে।গবেষণাগারের ইলেকট্রিক লাইন কেটে দেয়। উদোম বুড়োর গরম পানির ইলেকট্রিক কেতলিটা নিয়ে আসে। এভাবে দিনের পর দিন তাদের জ্বালাতন বাড়তেই থাকে। উদোম বুড়ো সহ্য করতে না পেরে গোপন ফর্মুলা দিয়ে কয়েকটা ভূত বানানোর সিদ্ধান্ত নেন।পরে ভাবেন, নিজের বানানো ভূতের খপ্পরে যদি নিজেই পড়ে যান, তখন অবস্থা আরও ভয়াবহ হবে। তাই এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন। ওদিকে রতেভূ‚ ভূতের অত্যাচার বাড়তেই থাকে।একদিন তিনি তাদের ডেকে বললেন, তোমাদের প্রধানকে বলো আমার সঙ্গে দেখা করতে। গুরুত্বপহৃর্ণ কথা আছে। ওমা, অমনি ছোট্টমোট্ট একটা ভূত দাঁড়িয়ে বলে, আমাদের প্রধানকে ডাকা যাবে না। যা বলার আমাদের বলুন। পরে বয়সে বড়সড় এক ভূত পিচ্চিটাকে থামিয়ে উদোম বুড়োকে বলেন, ঠিক আছে স্যার, আমরা আপনার ইচ্ছের কথা এখনই আমাদের প্রধানকে জানাচ্ছি। শুধু তা-ই নয়, ওনাকে নিয়ে আপনার গবেষণাগারে আসছি শিগগিরই। এই বলে তারা চলে গেল। পরদিন ঠিকই রতেভূ‚ ভূতের প্রধান এসে হাজির উদোম বুড়োর গবেষণাগারে। সে কিছু না শুনেই উদোম বুড়োকে বলেন,প্রিয় স্যার, আমরা ভূতপুরের সবাই আপনার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে চাই।অনেক অনেক পরে যখন আকাশে ভাসমান বিমানবন্দর হবে, পৃথিবী একটা গ্রাম হয়ে যাবে, পাসপোর্ট-ভিসা ছাড়া মানুষ এক দেশ থেকে আরেক দেশে চলে যেতে পারবে, মানুষের কোনো অভাব থাকবে না, হৃপকথার দেশের মতো সুন্দর হয়ে যাবে পৃথিবী, তখন আমাদেরসাইজও ছোট হয়ে যাবে…।উদোম বুড়ো বলেন, এসব আমাকে শোনাচ্ছ কেন?রতেভূ‚ ভূতের প্রধান বলে, স্যার, মানুষ-পৃথিবী সবই উন্নত হয়ে যাবে; হোক। আমাদেরও তো উন্নত হতে হবে। আমরা আপনার মতো মহান গবেষককে আমাদের রাজ্যে নিয়ে যেতে চাই। আর আপনার যে স্বপ্ন এলিয়েন অথবা ভূতদের জন্য অভিধান রচনা করা, সেই স্বপ্ন আমাদের দিয়ে বাস্তবায়ন করাতে চাই। তা ছাড়া বুদ্ধি-বিবেচনায় এলিয়েনরা অনেক আগানো। তাদের জন্য অভিধান রচনা করে লাভ নেই। এতে আপনার পরিশ্রমও বেশি হতে পারে। বয়স হয়েছে আপনার। আমরা চাই আপনি এলিয়েনদের কথা ভুলে ভূত জাতির উন্নয়নে ভূতদের জন্য অভিধান রচনা করুন। আর আমারও লেক্সিকোগ্রাফার হওয়ার শখ। এই দেখুন, একটা কাজ শুরু করেছি- ভূষণ্ডির কাক : যে বহু বছর এবং মৃত্যুর বয়স হওয়া সত্ত্বে ও জীবিত আছে; অন্যায়ভাবে দীর্ঘজীবী [ভূষণ ও মণ্ডিত শব্দের সংমিশ্রণে জাত]।উদোম বুড়ো বলেন, এটা তো টুকলিফাইং। রতেভূ‚ ভূতের প্রধান জিব কামড়ে বলে, ধরে ফেলেছেন তা হলে? [চলবে…]ReplyForward
Read More