অণুগল্প।। বন্ধুত্ব।। শেখ নাজিফাহ ইসলাম
জন্মের পর থেকে পরিবর্তিত হতে থাকে আমাদের অবস্থান, পরিবেশ,পরিস্থিতি, সম্পর্ক। জীবনের সবচেয়ে সুন্দরতম সময় আমরা অতিবাহিত করি আমাদের শৈশবে। দুরন্তপনার শৈশবেই আমরা হামাগুড়ি দিতে শিখি, হাটিহাটি পা-পা করে এগিয়ে চলি সামনের দিকে। এই যে জীবন, জীবনে চলার পথ; এই পথেই তৈরি হয় অনেক নতুন নতুন সম্পর্ক। সম্পর্কের বেড়াজালে আবদ্ধ হয়ে যায় ক্ষনস্থায়ী এই মানবজীবন।
সেই সম্পর্কের এক মধুর অনুভূতির নাম বন্ধুত্ব।
সবকিছুরই একটা সীমানা থাকে, কিন্তু বন্ধুত্ব!
না, এর কোনো সীমানা নেই। এ যেন এক বিস্তর আকাশের মত সীমানাবিহীন কোনো ছাদ যার গভীরতা এক মন থেকে আরেক মন পর্যন্ত বিস্তৃত। মানুষের সাথে মানুষের দূরত্ব যতই হোক বন্ধুত্বের সাথে বন্ধুত্বের দূরত্ব ঠিক যেন একটা পরমাণুর সর্বশেষ কক্ষপথের দুটি জোড় ইলেকট্রনের দূরত্বের চেয়েও কম।
বন্ধুত্বের সংজ্ঞা একেকজনের কাছে একেকরকম। ব্যক্তিবিশেষে এর বিভেদ দেখা যায়। কিন্তু একজন প্রকৃত বন্ধুর কাছে কখনো কোনো দূরত্বই তার বন্ধুত্বের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে না। বন্ধুত্বের পথে যে জিনিসটা বাধা হয়ে দাঁড়ায় তা হচ্ছে মনের দূরত্ব। আর মনের দূরত্ব বেড়ে গেলে দুটি মানুষ আর কখনোই বন্ধু থাকে না।
বন্ধুত্ব আমাদের হাসায়,কাঁদায়,আনন্দ দেয়,সঙ্গ দেয়,কখনোবা আবার আমাদের একা করে দিয়ে চলে যায়। বন্ধুত্বের ভালো মন্দ দিক বিবেচনা করে আমরা কোন ধরনের মানুষের সাথে এই সম্পর্ক তৈরি করবো তার উপর অনেকখানিই নির্ভর করে আমাদের ভবিষ্যৎ জীবন। কেননা বলা হয়ে থাকে, তুমি হচ্ছো তোমার পাঁচ জন ঘনিষ্ঠ বন্ধুর সমষ্টি।
বন্ধুত্বের আচরণ দ্বারা আমরা প্রভাবিত হই। কাজেই বন্ধু নির্বাচনে সর্বোচ্চ সচেতনতা অবলম্বন করা উচিত। একজন ভালো বন্ধুর হাত ধরে তুমি যেমন সাফল্যের সর্বোচ্চ চূড়ায় আরোহণ করতে পারো তেমনি একজন বন্ধুর দ্বারাই তোমার জীবনে নেমে আসতে পারে ব্যর্থতার কালো মেঘ।
কাজেই বন্ধুত্ব হোক ভালোর জন্য, আলোর জন্য, তোমার জীবনের জন্য আর দেশ ও জাতির সার্বিক ও সামগ্রিক কল্যাণের জন্য।