অণুগল্প।। ঈশ্বর বহুদূর।। নূরে জান্নাত

—ঐ মাগি- ভাতার বাড়ি কয়দিন কাটাইয়াই ভুইল্যা গেলি এই চন্দনা দীদারে? আগের মতন কতা কস না, গরেতথন বাইরোস না?
—পিদীম কথা বলে না। পিদীমের এই আচারণে চন্দনা তার মায়ের কাছে গেল।
—ক্যারে মল্লিকা, তোর মিয়াডার কি অইছেরে? ভাতার বালা না নাহি? মাগির কেবা জানি মন মরা!
—মল্লিকা মরিচ বাটতে যেন আরো বেশিই জোর দিলো।গজ গজ করে বললো-
—আপনের কি মাইনসেক গুতা পারার স্বভাব যাইবোই ন্যা?
—চন্দনা কথাগুলো মাটিতে পড়তেই দিলো না-
—এই মাগির বিটি মাগি! আমিকি মন্দ কিছু কোছিলো? আমাক ক, ভাতার বালা না ওলি, বালা না বাসলি ত্রান্ত্রিক আছেকতো।
—উঠনে কথোপকথন চলছে। ঘরে মৃত বাবার ছবিতে ভেজা চোখে মনের কথা চালায় পিদীম।
—আব্বা, তুই যেদিন মোইর‍্যা গেলি, হেদিন ভিয়ান বেলাও তোর গলাজড়ায় কতো আদর সোয়াগ নিছিল্যাম! যার হাতে আমাক বিয়া দিছে হেইওতো তোর মতন মরদ নোক! তয় হেয় আমারে তোর মতন যেইপ্ট্যা নিয়া গুমপাড়ায় না সোয়াগ হরে না ক্যা? হেই যে আমারে কিসব হরে! এইল্যাঝেইল্যা হোইর‍্যা হালায়! আমার কষ্ট অয়! মায়েরে সব কোইছি! মা তাও যেইব্যার কয় ঐ বাড়িত!
—পিদীম আট বছরের মাথায় বাবাকে হারিয়ে শোক পাওয়ায় মানসিক এবং শারিরীক ভাবে সমবয়সী মেয়ে গুলোর থেকে অনুভূতি ও গাঠনিকভাবে পিছিয়ে। পিদীমেত বার বছর চলছে! ঋতু্ শুরু হলেও অস্পষ্ট স্তনের গাঠনিক অবস্থাতেই মল্লিকা নিজের জড়ায়ু ক্যন্সারের চিন্তায় মেয়ের বিয়ে দিয়ে গতী করেছে। লোক সমাগমিত তান্ত্রিকের ঊঠনে এখন মেয়ের সংসার টেকাতে এসেছে। চন্দনার দেওয়া তথ্য, আসনে বসে এমনভাবে বলছে ত্রান্ত্রিক – যেন সব জ্বলজ্যান্ত চোখে দেখছে!
—পিদীম ও তার স্বামীর বিয়ের প্রথম রাতে ব্যবহৃত কাপড়ের সূতো, মাথার চুল, বাম কানের ময়লা ইত্যাদি ত্রান্ত্রিকের কাছে জমা দিয়ে আসার বহুদিনেও পিদীম অপরিবর্তনীয় থাকায় জোরপূর্বক স্বামীর ঘরে পাঠানো হয়। রাত দেখলেই আঁতকে ওঠে পিদীম! আজও রাত! সি এন জি চালক স্বামী ঘরে ফিরেই ঝাপিয়ে পড়ে পিদীমের মাখনের মতো নরম শরীরে! যৌনতা যেন তার ভালোবাসা প্রকাশের একমাত্র মাধ্যম! ঘুমহীন চোখে পিদীম অন্ধকারে ঈশ্বর খোঁজে! মুক্তি চায়তে! কিন্তু সে কেবল তার শরীরের উপর ভারি একটা বস্তু, ঘোত ঘোত শব্দ আর অসহ্য যন্ত্রণা খুঁজে পায়!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *