কাব্যগ্রন্থ ‘গহিন গাঙের ঢেউ’ নিয়ে মেলায় আসছেন কবি নুসরাত সুলতানা

কবি নুসরাত সুলতানা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তথ্যবিজ্ঞান ও গ্রন্থাগার ব্যবস্থাপনা বিষয়ে অনার্স ও মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন।
বর্তমানে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনস্হ মিলিটারি ইন্সটিটিউট অফ সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি (এম আই এস টি) এর স্টাফ অফিসার।
“গহিন গাঙের ঢেউ ” কবির ২য় একক কাব্য গ্রন্থ।

কবির ভাষ্যঃ

লেখালেখি শুরু করার পর অনেক বড় বড় আবার অনেক ছোট মাঝারি নান্দনিক গ্রুপ(ফেসবুক ভিত্তিক সাহিত্য গ্রুপ) এডমিন হতে বলেছে। অনেক গ্রুপ, সংঘ ডেকে পদক দিতে চেয়েছে। কিন্তু আমার কখনও মোহ তৈরি হয়নি। অনেক ইনভাইটেশন পাই বিভিন্ন প্রোগ্রামে কিন্তু সময়ের অভাবে যাওয়া হয়ে ওঠে না। আমার মোহ বা মায়া পুরোটাই পাঠকের ভালোবাসার কাছে। আমি নিজেকে ঋদ্ধ করে আপনাদের ভালো লাগার মতো, আপনাদের মননশীল হওয়ার মতো কিছু লিখতে চেষ্টা করেছি সর্বদা। আর ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে একটা আদ্র লেখক জীবন চেয়েছি। আপনাদের ভালোবাসা আর মহাকালের খেয়ালি ইচ্ছায় এক কবি আর লেখকের জন্ম। প্রথম কাব্য গ্রন্থ “ছায়া সহিস” আপনারা পরম শ্রদ্ধেয় পাঠকরা আপন করে নিয়েছেন নিবিড় ভালোবাসায়। সেই ভালোবাসার বৃষ্টিতে স্নান করেই আমি আবারও সাহসী হয়ে উঠেছি এবছর ও একক কাব্য গ্রন্থ “গহীন গাঙের ঢেউ ” প্রকাশের। এবারও আপনাদের পাশে পাবো এটা একান্ত আত্মিক চাওয়া। “গহীন গাঙের ঢেউ ” এ আমি আপনাকে, আমাকে, আমাদের, মা, মাটি, দেশ, পতাকা, প্রেম, স্বপ্ন সবকিছুই লিখেছি। ছুঁয়ে দেখুন প্রিয় পাঠক বন্ধুরা আপনি আপনাকেই খুঁজে পাবেন। দেখা হবে বিশুদ্ধ বিপ্লব আর ভালোবাসায়।

গহিন গাঙের ঢেউ এর তিনটি কবিতাঃ

প্রলেপ

তুমি বলো জোৎস্না,
আমি বলি ভানুর প্রতিফলিত আলো!
তুমি বলো কবিতা,
আমি বলি আত্মার আহাজারি!
তুমি বলো প্রেম,
আমি বলি প্রয়োজন!
তুমি বলো সভ্যতা,
আমি বলি শ্রমিকের রক্ত ঘাম হওয়া ফসল!
অতঃপর তুমি বললে;
বাইরের ঐ প্রলেপটুকু মুছে গেলে,
মানুষ ও শুধুই এক প্রানি!
অনুধাবনে ঋদ্ধ হলাম আমি,
ঐ প্রলেপটুকুই মনুষ্যত্ব, সভ্যতা আর সৌন্দর্য!

সাধারণ

কি নিদারুণ উপেক্ষায় তুমি তোমরা
আমাকে অসাধারণ করে তোল!
অথচ আমি কখনো অসাধারণ হতেই চাইনি!
আমি চেয়েছি সাদা কালো বিড়ালটার মতো আহ্লাদী মেয়ে হতে!
আমি চেয়েছি অফিস শেষে বাসায় ফিরে সুতি শাড়ি পরে তোমার জন্য অপেক্ষা করবো!
ব্যাল্কনিতে বসে দুজনে চা খাবো আর সারাদিনের গল্প ভাগাভাগি করবো!
আমি চেয়েছি ছোট্ট একটা ঘর!
অথচ আমার হল বিশাল আকাশ, সমগ্র বসুধা!
আমার ও খুব চাওয়া ছিলো
জন্মদিনে কেউ কপালে ছোট্ট একটা চুমু দিয়ে বলুক;
শোন অভিমানী রাজকন্যা স্রষ্টাকে ধন্যবাদ
তিনি পাঠালেন তোমাকে এই ধরিত্রীতে!
না হলে যে আমার জীবন এক মহাশূন্য হত!
অথচ আমি তোমার হলাম না! তোমাদের হলাম না!
আমি হই আকাশের, আমি হই পথের
আমি হই জনতার আকাঙ্ক্ষিত কবি!

আত্মা

দেহের সাথে আত্মার বিচ্ছেদকে বলে মৃত্যু!
আত্মা অবিনশ্বর!
দেহের জন্ম কি তাহলে;
শুধুই পাপ, তাপ, ক্ষয়ে যাওয়া আর পচে যাওয়ার জন্য!
সকল ব্যাথা তাহলে কোথায় বাজে?
তবে কি;
দেহে অনুভূতি, আত্মায় অনুভব!
দেহে সুখানুভূতি, আত্মায় শান্তি অনুভব!
দেহ কেবলই আত্মার কারা!
আত্মার কারাবাসের নাম জীবন!

পাঠকের ভালোবাসাই আর আত্মার মুক্তি ই কবির আরাধনা। নাম যশ খ্যাতি কোনকিছুরই মোহ কবির নেই।

বইয়ের তথ্যঃ

কাব্য গ্রন্থঃ গহিন গাঙের ঢেউ
প্রচ্ছদঃ লুৎফুল হোসেন
প্রকাশকঃ রচয়িতা
স্টলঃ ৬৩২
মুল্যঃ ২০০(বইমেলায় ১৫০)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *