ঈদসংখ্যা কবিতা।। তৌহিদ শাকীল
অন্তত ইন্দুপ্রভা ঢালো
ভালো, ভালো,
সরে যাক সব কালো।
নম: নম: হে নিয়তি নিয়ন্তা প্রভু,
কাগজে কলমের গতি বন্ধ কোরো না কভু।
যে কলম ছড়ায় এমন কাব্যিক আলো,
সে কলমে এক সমুদ্র কালি তুমি ঢালো।
মোমের প্রদীপ নয়, তারে দাও অনি: শেষ আলো,
তার ভালে তুমি প্রভু সূর্য্যের জীবন জ্যোতি জ্বালো।
সে আলোয় অনন্ত পথে অবিরাম পৃথিবীটা চলুক,
কাব্যের এ কোকিল নিরন্তর কুহু-কথা বলুক।
যদি কোনো ভুলের ফলে কোনো দুর্বিপাকে
যদি নিয়তি তার ভিন্ন হয়ে থাকে,
করজোড়ে মিনতি করি প্রভু,
তারে তুমি নিরাশ কোরো না কভু।
না দিলে অরুণের আলো,
অন্তত ইন্দুপ্রভা ঢালো।
শুভ নববর্ষ
কালোতে আলোর ঝোরা চমকাবে স্বর্ণে,
হীরে মণি রত্নের অগণিত বর্ণে
আজ রাতে জ্বলজ্বল
তারাদের দলবল
মায়ার ডাকাত হবে চক্ষু ও কর্ণে!
রুপোলী আলোয় রাঙা অদ্ভুত আকাশে
হয়তো অবিশ্বাসে হয়ে যায় ফ্যাকাশে;
হয়তো বা বিস্ময়ে,
হয়তো বা সংশয়ে।
আশার আলোরা তবু খুব তাতে বিকাশে।
জানা আছে দিতে হবে বহুদূর পাড়ি।
নতুন শপথ নিয়ে উদ্যমে তারই,
মনের ঐ ভাঙা কাঁচে
যতটুকু ছায়া আছে
সে ছায়ার মায়াটান কেন বলো ছাড়ি?
নেয় না তবু মেঘের পুরাণ পাঠ
ভিজে চুলে সূর্যকে আর করে না আহ্বান লাল গরদের শাড়ি।
বিপরীত ঝড়ে উড়ে যায় ঐতিহ্যের প্রসন্ন ঘর বাড়ি।
ভ্রান্তির সড়কে গজায় মেঘ ছুঁই ছুঁই পায়েদের জঙ্গল।
চালচুলোহীন প্রতিবেশীদের কেউ আর এখন করে না মঙ্গল,
ফুলকো লুচিতে মিষ্টি ভ’রে ভাসায় না কেউ ঢেউয়ে জোয়ার জলে।
দুরাচারের কাল সাধনায় দিন ঠেলে দেয় কেবল দহনকালে।
বেদন রোদন হাহাকারে বিষের ছোবল ফুল ফসলে,
ঘরদুয়ারে কবর খুঁদে এই জাতি রয় উন-কপালে।
নিস্তরঙ্গ তরুণ দ্রোহে ম্লান হয়ে যায় বোশেখী রোদের তেজ।
মহাসংকট সংকেত আনে সম্মোহিত বাঙালির উত্থান,
পিতাপুরুষের পদচিহ্নে পা রাখে না উন্মাতাল উত্তেজ।
কালের ছায়ায় বাঙালী মায়ায়, বজ্র কেটে মেলে না পাখা প্রাণ।
দিন চলে যায় বছর পেরোয়
আত্মভোলা এই জাতির আজ এমন করেই কাটছে সময়।
কূলত্যাগিনী শুকনো হাওয়ায় নির্বীর্য বিষন্ন মাঠ-ঘাট,
ঘাসের দেশের মানুষ হয়েও নেয় না তবু মেঘের পুরাণ পাঠ।