কবিতা

ভাস্কর চৌধুরীর কবিতা

একা

আজ ক্যামন একটা সন্ধ্যে ফিরে গেলো
আজ সারাক্ষণ ভালোবাসতে ইচ্ছে করছিলো।
খালি হাতে বের হয়ে সব চে বড় চাইনিজে
মুখোমুখি বসার বাসনা ছিলো।
সামনে শূন্য চেয়ার নিয়ে বসে বসে
সময়টা কাটিয়ে দেয়া
গল্প করার সময় মনে হলো
এমন কাল যদি ফের পাই
আবার ভালোবাসার আশায় বেরিয়ে যাবো
আবার শূন্য চেয়ারের সাথে গল্প হবে
কখন যে কে প্রিয় হয়ে যায়
ঘটনায় আগে কেউ বুঝতে পারে না।

ফেটে যায়

মানুষ সবই পারে করতে নাকাল বাড়াতে আকাল
পিঁপড়ার ঠ্যাং ধরে করে দেয় রাত্রি বিকল
ভাতের মতো পড়ে আছে সোনা সোনার মতো ভাত
শুয়ে আছে এক কাতে নারীর মতো রাত
দুটি হাত তার প্লেনের ডানার মতো মেলে আছে
হাতে মাটি ছেঁড়া কয়েকটা ঘাস
কারা এসে বেড়ার বাঁধন কেটে নিয়ে গেছে দেহের নির্যাস
মানুষ সবই পারে। কেটে রাখে নারীর স্তন যৌন ভাগ
অভাগা গরিবের মেয়ে নাইকো জিরাত কোন খাতে দেবে খাজনা রাজার ঘরের দরজায় এসে গেছে ডিক্রি সমন চল সমীরণ
তোর গায়ে যা আছে আয় সকলেই লুটে পুঁতে খাই
মানুষ সবই পারে। প্রতিবাদে তার
বাপ রুখে দাঁড়তেই দুষ্ট ছেলের মতো কেটে দিলো বাপের দুহাত
যেনো বা ফড়িং নিয়ে খেলছিলো কেটে দিলো পাখা ছেঁটে দিলো মাথা উবড় করে রেখে দিলো রোদে
হলো না নিস্তার দিন যদি চলে যায়
মানুষ রাত্রি চায়
আলোর বদলে চায় অনেক আঁধার ফেটে যায় বুক বোতলের মতো ফাটে দুঃখ ফাটে জল অমল অমল কলকল
ফেটে যায় কামুক দেহ থেকে আরেক দেহের ভেতরের কল
উম্মুল যৌবন যায় পথ চিরে যায় সাথে বিচিত্র মহল
ফেটে যায় রে খোলা পথে সাত রানীর ধন সীতার রুপালি যৌবন
সীতা নারী কে বলতে পারি কোর্টের পেছনে বাড়ি মল টানে গানে গানে
সবই পায় পেলো না নিস্তার রাতের আঁধার কেড়ে নিলো সীতাহার
ফেটে যায় গুপ্ত নোহর
মানুষ সবই পারে কারে করে নেবে ধরে রাতের আঁধারে
যেনো কয়েকটি মোরগ চায় রাতের পিকনিক
হল্লাহীন ডোবার ধারে ফাটিয়ে দিলো আল্লাহর দোহাই না মেনে জীবনের ছাই
মানুষও ছাই হয়ে ফেটে উড়ে যায়
সোনার লাহান মাটির বাড়ি সেসব ছাড়ি যেতে হয়
মানুষ সবই পারে থেকে গেলে দুদিন দুনিয়ায়
পরের ঘাড়ে চড়ে চলে যায় কাঠের চিতায়

মনের ভেতর সেই সোনা ঘর হয়তো পাথর কিছুই কাজের নয়
শার্টের মতো গায়ে দিয়ে রক্তের আয়ু প্রাণ বায়ু
ফেটে গেলে বেলুনের মতো আকাশ থেকে হেলতে দুলতে পড়ে যায়।

নির্ধারিত ছিলো সব
ঘটনা ঘটিয়ে ফাটিয়ে দিয়ে জন কলরব
চলে যায় ট্রেন গোটা পৃথিবী তার একটা লাইন।

ইচ্ছেটা

যদি সাগরের জলে মরি মিষ্টি জলে
দেহ ধুয়ে দিও।
মৃত্যুর পর কোনো অনুভব নেই জানি
তবু দ্যাখো প্রতিটি মানুষের শেষ ইচ্ছে থাকে
অনেকেই লিখে রাখে এমনকি ফাঁসির আসামি
আমি কেবলই বললাম, নোনা জলে ভয়
দ্রুত দেহ ক্ষয় হয়
চোখ দুটি গলে যাবে আগে
ভয়গুলো তাড়া করে দ্যাখো
কোথায় মরণ নিশ্চিত না জেনেও বলে রাখি
তোমার চোখের জল মৃত্যুর পর
আমার শরীরে ফেলো না
নোনা জলে বড় ভয় লাগে।

One thought on “ভাস্কর চৌধুরীর কবিতা

  • Forhad Uddin

    ভাস্কর চৌধুরীর কবিতা আমাকে খুব আন্দোলিত করে।

    Reply

Leave a Reply to Forhad Uddin Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *