দেবাশীষ মুখোপাধ্যায় এর চারটি কবিতা
রজনীগন্ধায় মিশে যায় গল্পগুলো
কয়েকটা মনকাটা ঘুড়ি উড়ে বেড়ায় আমার আকাশ জুড়ে
অনেক রঙ তাদের বুক জুড়ে
এলোমেলো হাওয়ায় এদিক ওদিক
একে অপরের আকর্ষণে এলেই ধাক্কা
কেটে হাওয়ায় উড়ে যায় দোদুল ছন্দে
অভিযোজিত রাত সখ্যতা করে নেয় ঘুড়িগুলোর সাথে
রজনীগন্ধায় তখন নোনা দুঃখগুলো অচেনা সব
এক একটা স্মৃতি এগিয়ে চলে অপরের আকর্ষণে
মিলে যায় কখনও
কখনও বা খুলে যায় উড়ে যাবার অভিলাষে
মনকাটা ঘুড়ি উড়ে বেড়ায় আমার ভালোবাসার আকাশ জুড়ে
পোড়া ছাই যেকথা বলে নিশিদিন
চিতার আগুনের মুখ লাল গনগনে
দূরের পলাশ মাথা উঁচু করে দ্যাখে দাঁড়িয়ে
তারও বুকে আগুন পোড়ার খেলা
সে জানে জ্বলনের উপপাদ্য
বৈমনস্য রাত শুধু দহনের গল্প বলে
রাত শেষে পোড়া ছাইয়ে জড়িয়ে থাকে অপ্রাপ্তির আলিঙ্গন
পলাশ চেয়ে দেখে শুধু
সে জানে এই ছাই থেকেই জাগবে
নতুন এক সকাল
তার বুকের আগুন নিভে এলে
একটা নিকোনো উঠোনে
লালপাড় শাড়ি আলতা পায়ে এসে দাঁড়ায়
উদ্ধত বুকের স্বপ্নচারণে
জীবন ফিরে ফিরে আসে
জীবন প্রাণের জারণে গল্প বলে সুখনদীর ছলাৎছলে
সুখের কাব্যগান
সন্ধ্যা নামলেই বুকের ভেতর দাপাদাপি করে যে চাঁদ
তার জ্যোৎস্নার রঙ লাল
কানাকানি করে তারারা আকাশের বিছানায়
হয়তো তোমার আমার কথাই বলে
জাগতে থাকা রাতে
শুধু নীরবতার আদরে ভাসি দুজন
স্পর্শের পাঁচালী কতো কথা বলে
যা পড়ে ছিল এতোদিন অদেখায়
লাল চাঁদ ভেজায় উষ্ণ আবীরে
আদুল গায়ে সে আবীর নরম সুখ দিয়ে যায়
একটা পথ খুলতে থাকে দুজনের সামনে
স্বপ্নময় মায়াবী আলোভেজা
আগামীর শপথ জাগে
আঙ্গুলে আঙ্গুল
উড়ে যায় চাওয়ার নীলকন্ঠ পাখিটা
ডানা ঝাপটানোয় বুকের গভীরে বাউলের দোতারা
হাতে হাত শুধু আলোর পথচলা
জীবন আলপনা আঁকে নিত্য
অনেক কিছুই পড়ে থাকে না বলা
অনেক কিছুই পড়ে থাকে অদেখা
সম্পর্কের সূত্র কিছু না -পাওয়ার বিভাবরী হয়ে থেকে যায়
বোঝায় , কিছু চাওয়ার সমাপ্তিতে পাওয়া অধরাই থাকে
কষ্ট বেঁচে থাকে তখন চাওয়ার তৃষিত বুকে
মানতে হয় তা
মানিয়ে নিতে হয় তা
সময় থমকে দাঁড়ালে
জীবন গুটিগুটি এসে হাত ধরে
দুই বন্ধুর গল্পে বিকেল কাঁপে
দুই বন্ধুর গল্পে পাখি ওড়ে
মেঘ বুকে বৃষ্টির আলপনা আঁকে
তাদের চলার পথে জেগে ওঠে সবুজ
নতুন দিনের পথচলার সাক্ষী হতে
উজ্জ্বল এক ঝাঁক পাখির ডানায় ভর করে
আবার প্রাণের গান গাওয়া চলতে থাকে
ক্ষ্যাপা বোষ্টমীর দোতারায়
রাই জাগো রাই জাগো বলে…….