মেঘের ছাউনি ও অন্যান্য কবিতা / জিন্নাত আরা রোজী
এই নিরালাতে
তাঁরা ঝলমল এই জ্যোৎস্না রাতে
এসো বসি দু’জন নিরিবিলিতে–
বলাকা মন কত কথা চায় বলতে ও শুনতে।
তাই অপূর্ণ গোপন ইচ্ছে গুলো
আজ বলবো তোমাকে এই মহেন্দ্রক্ষণে।
হিম হিম পরশে আলতো করে রাখ আমাকে
যেখানে আছে ভালবাসার অনন্ত বিছানা।
আনন্দ উচ্ছ্বাসকে ভালবেসে কষ্ট’কে দেব তাড়িয়ে।
যাপিত জীবনে যদি আসে ঝড়,
দুজন দু’জনার হবো হবো না পর।
এসো জ্যোৎস্নাকে সাক্ষী রেখে আজ শপথ করি
তুমি আমার আমি তোমার কখনো হবো না পর।
একটি চাওয়া
পূর্ণিমা রাতে তুমি কাছে থাকলে
যেন স্বর্গ নেমে আসে আমার দুয়ারে।
আকাশের তারা গুলো থমকে যায় নিমিষে!
চন্দ্র, শশী করে কানাকানি কী হলো আজ?
অন্ধকার শহরে আলো নামে তোমার আগমনে।
রঙের ছটা বয়ে যায় শহরের অলিগলি,
সাত রঙের রঙধনু আকাশ জুড়ে করে খেলা।
ভিতরের অসীম শূন্যতা পালায় যোজন যোজন দূরে!
চারিদিকে আলোর রোশনাই যেন পঞ্চমীর চাঁদ উঠেছে জেগে।
স্মৃতির অক্ষরে হাজার ফুল ফোটে আবেগে তুমি পাশে থাকলে।
জীবনের শুভ অর্থ বলে দেয় জীবনের মানে;
পরস্পরের সাথে দু-দণ্ড মিলে-মিশে একাকার হওয়া
অনন্ত জীবনের পুলকিত আলো হয়ে মিশে যাব দুজ’নে।
মেঘের ছাউনি
এমন যদি হতো প্রজাপতির পাখায় চড়ে,
দেখতাম সারা বিশ্বটাকে রঙিন চোখে।
দুহাতে ধরতাম ঐ নীল আকাশটাকে।
মেঘের ভেলায় বসতাম দু’পা ছড়িয়ে,
মাথার উপর নীল সাদা ঐ আকাশের ছাউনি–
আড়াল করে রাখতো আমার দিবারাত্রি।
একটা দু’টো তারা খসে পড়তো আমার চারিপাশে।
উল্লাসে চোখের পানি গড়িয়ে পড়তো তারার গায়ে।
মিটিমিটি চাইতো ওরা আমার পানে,
দিন গড়িয়ে সন্ধা এলে শীতল পাটি বিছিয়ে দিতাম
বসতো ওরা চুপটি করে আমার পাশে।
কানে কানে বলতো কথা মনের খুশীতে।
শুকতারারা উপর থেকে আসতো নেমে
বৃন্দাবনের মাসী এসে নানান রকম গল্প বলে
আসরটাকে জমিয়ে দিত এক নিমিষে।
বাকীটা সময় না হয় কেটে যেত,
মেঘে ঢাকা তারার সাথে হেসে-খেলে।