শেখ নাজিফাহ ইসলাম এর কবিতা
বর্ষা
এসেছে বর্ষা,
আকাশের বুকে জমা মেঘগুলো
ঝরে গিয়ে আকাশ করেছে ফর্সা,
মনে হচ্ছে বুঝি এই পেলাম একটু ভরসা।
সবুজে ধূ ধূ করা মাঠে
আকাশের সমস্ত অভিমান ঢেলে দিয়ে
এলো যে বর্ষা তার নবধারা রঙে রাঙিয়ে।
সবুজ মাঠ বর্ষার প্লাবনে রাঙা হলে
জাল ফেলে মাছ ধরে জেলে,
নৌকা ঘাটে ভিড়িয়ে আমায় নদীর
উপারে নিতে, এলো মাঝির ছেলে।
নদীর উত্তাল ঢেউয়ে
তার ছোট নৌকা এদিকওদিক দুলে,
ভয়ে আর খুশিতে নাচছে মন
উড়ছে চুল বাতাসে।
মেঘ
আকাশে জমাট বেঁধেছে কালো মেঘ
ওরে,তোরা একবার তাকিয়ে তো দেখ।
রেগে আছে আকাশ কন্যা,
এই বুঝি নেমে এলো বন্যা।
মেঘে মেঘে হলে দ্বন্দ্ব-ঝগড়া
আকাশেতে দেখা যায় বিদ্যুৎ ঝলকা,
মেঘে মেঘে হলে ঘর্ষণ
হয় বজ্রপাত- বৃষ্টি ভীষণ।
উঠানের মাটি গেলো ধুয়ে,
নদীতে পলি জমে নদীর মোহনা গেল ক্ষয়ে।
ওরে উঠোনের শুকনো ধান গেল সব ভিজে,
কৃষকের চোখের জল আর বৃষ্টির ঢল
সবই হয়ে গেল একাকার জল।
মেঘলা আকাশের সূর্য
দিনভর বৃষ্টির পর,
সুবিস্তর আকাশ জুড়ে যখন সূর্য উঠে,
সবারই মন তখন আনন্দে নাচে,
শুষ্ক-ভেজা সব রোদে শুকাতে হবে।
ভেজা আকাশের ওই
উদ্দীপ্ত সূর্যের দিকে তাকিয়ে,
ঠোঁটখানি বাঁকিয়ে,
সূর্য সবারই মুখে
হাসি তুলে ফুটিয়ে।
পৃথিবীর বুকে মেঘলা আকাশের সেই ছায়া কাটিয়ে,
পৃথিবীর ভেজাভাব শুকিয়ে
সেই আনন্দ সূর্যই আনে আবার ফিরিয়ে।
মেঘের মতো মন
আকাশের বৃষ্টির মতো যদি
নির্মলই হতো মানুষের মন,
ঝরে যেতো জীবনের সব মিথ্যা সন,
জীবন এখন পাপে ভরা বন।
কভু কি মেঘের মতো
ঝরে পড়বে এই মিথ্যা মন?
আকাশ যখন কালো মেঘে ছেয়ে যায়
বজ্রপাতের প্রচণ্ড শব্দে
ভেঙে হয়ে যায় ছাই,
মানুষ তখন করে হায়,হায়।
কালো মেঘের মতো
পৃথিবী হয়েছে মানুষের পাপের ঘরা,
কভু কি দেখা যাবে বৃষ্টি হয়ে পাপের ঝরে পড়া?