কাব্যশীলন উৎসব সংখ্যার কবিতা কবি আসাদ চৌধুরী
কেমন করে তোমার কাছে
কেমন করে তোমার কাছে যাই?
আমার ব্যথা, যাতনা সব, জানি
তোমার প্রিয় উপহাসের খেলা
তখন ছিল যন্ত্রণায় নদী
খরাতে যার হয় নি কোনো ক্ষতি
এটুকু নিয়ে তোমার কাছে যাবো?
অহংকার ক্লান্ত হবে কবে?
অপেক্ষায় শিকড় থেকে আমি
বৃক্ষ হয়ে পুষ্প হয়ে উঠি—
যোগ্য হও, যোগ্য হও, নারী।
ভালোবাসা শব্দটিকে
ভালোবাসা শব্দটিকে মনে মনে জুতো-পেটা করি,
ভালোবাসা শব্দটিকে মনে মনে ভালোবেসে মারি।
ভালোবাসা এই শব্দে মিশে আছে সুখ-দুঃখ-গান।
ভালোবাসা এই শব্দে শুয়ে থাকে শুদ্ধ অভিমান।
ভালোবাসা জানে না যে কৃপণের দর কষাকষি—
ঝড়ের ভেতরে ছেঁড়ে ভালোবাসা নোঙরের রশি।
জীবনের, যৌবনের মূল্য জানে এই ভালোবাসা
এখানে সুন্দর এসে বাঁধে তার চিরস্থায়ী বাসা।
রাখাল জানে না
তবু রাখাল জানে না কোন ঘাসে কতোটুকু দুধ।
ছায়ার ভিতরে, যে-ফ্যাকাশে তৃণ্যের জঙ্গল বেড়ে ওঠে
তারা কতটুকু দুধ দিতে পারে? রাখার জানে না।
লোদ, কাদা, বর্ষার ভেদর, বসন্তে
পেখম ধ’রে রাখে,
তারা কি কৃপণ দুধ দিতে পারে?
এ-সব খবর, হায়, জানে না রাখাল, আমি ও জানি না।
শুধু মনে পড়ে, আমাদের শিশু, বুড়ো অসুস্থ লোকেরা বড়ো বেশি দুধের কাঙাল।
নিরীহ স্ত্রৈণের বিনীত প্রস্তাব
আমার হাতের তাস তুমিতো আগেই পড়ে নিয়ছো।
বেশ মনে আছে,
তোমার চোখের প্রশংসা করে
কয়েকটি পদ্য আমি ঠিকই লিখেছিলাম।
আমার পুঁজিপাট্টা, অভ্যাস, প্রবণতা
এ সব তো তোমার জানাই।
আহ, তাতে কী হয়েছে,
আমাদের জুয়া খেলা বন্ধ হবে কেন?