হানিফ মোহাম্মদ-এর কবিতা
বিপ্লব ঘটে গেছে বুকের ভেতর
কোনো দৃশ্যমান রক্তপাত নেই
অথচ ঐকান্তিক বিপ্লব ঘটে গেছে বুকের ভেতর।
কী গভীর ক্ষত তৈরি করে
তুমি হেঁটে গেছো নিজস্ব ছায়াপথ ধরে!
দুর্ভেদ্য কুয়াশার পর্দা ফেলে
তুমি এক অচেনা মানবি এখন।
অথচ একদিন একবুক আকাশ সাজিয়েছিলে বুকের বনেটে।
আকাশ ভর্তি তারা ফিসফিস করে বলেছিল,
এইতো জীবন, এখানে নোঙর ফেলো।
মাতৃ-আঁচলের নিশ্চয়তা নিয়ে
আমি নির্ভয়ে করেছি অবতরণ
আর তৎক্ষণাৎ চিরচেনা আকাশ বদলে নিলো নিজস্ব রঙ।
নিজেকে আবিষ্কার করলাম
উথালপাতাল এক ঝড়ো রাতের আঙিনায়।
কেস-স্টাডি
প্রেম নয়, এককেজি আটা বরং এনো।
ফেঁপে ওঠা রুটির উত্তাপ
প্রেমিকার নরম আলিঙ্গন।
রুটির কোমর ধরে
কামার্ত ঠোঁট খেলে
জীবনের খেলা।
উনুনের এজলাসে অবশেষে
রুটিরাই লিখে দেয় ভাগ্যের রায়।
অক্ষমতা
অশ্রাব্য বাতাস এসে ছিনিয়ে নিলো শ্লীলতার হাসি
ভালোবাসি বলে কাল যে পাখি তুলেছিলো সুর
অসুর বেদনার ভারে আজ তার কণ্ঠ থেকে ঝরে যায় ক্লেদাক্ত খুন।
ঘুণে ধরা চশমায় সবুজ কী সবুজ থাকে!
অবুঝ পশুর মতো হিংস্র হয়ে যায়।
যায় যাক, প্রতিবাদের ভাষা ভুলে
তুলে নাও নরম কলম
কথার মলমে উজ্জীবিত হোক অশালীন ভ্রষ্টাচার
শিষ্টাচারের পাঠ নিতে নিতে ভুলে গেছি দায় ও দাতব্যের তফাৎ।
নির্ঘাত আমরা আর লিখতে পারি না কোনো
রক্তঝরা ফসলের গান এই মানবিক জমিনের পিঠে।
বার্ধক্যজনিত
বাতাসের ক্রাচে ভর করে উড়ে যায় দুরন্ত শৈশব
শরীরে জল ঢালার মতো ঝুপ করে সন্ধ্যা নেমে এলে
ক্রমশ সংকুচিত হয় সীমান্তের পাড়
জেলখানা ছোটো হয়ে এলে কয়েদির বসন্ত থাকে না।
অসচ্ছতার দোষে দুষ্ট হবে চশমার কাচ
ভাজ খুলে পড়ে থাকবে বেনামি পোশাক।
অথচ আজ তুমি রাজাধিরাজ
প্রগলভ জোছনায় জলকেলি খেলতে খেলতে
ভুলে গেছো ফিরে যাওয়ার সহজ গলি
ভাবনারহিত হৃদয়ে ফেলছো অমোচনীয় ছানি।
চাটুকার পরিব্যাপ্ত হাতির ভাগ্যেও
লেখা থাকে মাছির প্রস্থান।