আমিনা সুলতানা সানজানা’র কবিতা
আলোড়ন
তুমিও বয়ে গেছ সময়ের স্রোতে,
জেনে বুঝে হারিয়ে গেছ
হারিয়ে যাওয়ার পথে।
আমিও বন্ধ করেছি চিরতরে এই দরজা
সম্পর্কের নামে করেছ আমায়
কখনো বাঁকা কখনো সোজা!
একে একে মারিয়েছ পূজার সকল ফুল
পিছু ফিরে আমিও দেখিনি আর
হইনি তোমার জন্যে ব্যাকুল!
হয়ে তুমি ভ্রমর ফুলে ফুলে কর বিচরণ
আমিও সমাধি খুঁড়েছি বুকে
উঠবে না আর এই মনে অপূর্ব আলোড়ন!
অভিমানটা কার সাথে
অভিমানটা কার সাথে?
যে তোমাকে ভালোবাসেনি, তার সাথে?
ভালোবাসায় যে জোর চলে না, বুঝেনি পাগল মন?
অভিমানটা কার সাথে?
যে তোমাকে মনে রাখেনি, তার সাথে?
যার মনে তুমি নেই সে কেমন করে মনে রাখবে?
অভিমানটা কার সাথে?
যে আঘাত দিয়েছে জেনেবুঝে, তার সাথে?
সে যদি তোমায় বুঝতো, তবে আঘাত করতে পারতো?
অভিমানটা কার সাথে?
যে বিশ্বাস ভেঙেছে কাছে এসে, তার সাথে?
বিশ্বাস যার কাছে তাসের ঘর, তার আবার ভাঙাগড়া!
অভিমানটা কার সাথে?
যে তোমাকে মূল্যায়ন করেনি, তার সাথে?
যে তোমার মূল্য বুঝেনি তার কাছে প্রত্যাশা কেন?
অভিমানটা কার সাথে?
যে কষ্ট দিয়ে দিব্যি ভালো আছে, তার সাথে?
তুমিও কি ভালো থাকতে শিখতে পারো না তার মতো?
পারো না অভিমান শব্দটাকে চিরতরে হারিয়ে দিতে?
পারো না আঘাত পাওয়া দরজাটাকে বন্ধ করে দিতে?
পারো না নিজেকে নিজের জন্য এবার ভালোবাসতে?
পারো না?
কবি কিন্তু মানুষ
কবিকে সমর্পণ হতে দিও প্রেমের কাছে
ভাসতে দিও অচেনা স্রোতে।
কবিকে জন্ম দিও একাধিকবার
লিখুক সে ভালোবেসে আর আঘাতে।
কবিকে কষ্ট দিও মূহুর্মূহু
জ্বলতে দিও বিরহে
ঠোঁটে দিও দীর্ঘ চুম্বন
সৃষ্টি করুক কাব্য অসীম সাহসে।
কবিকে আটকে রেখো না,
পারবে না।
ধরতে চেও না ছলায় কলায়।
কবি সে তো বায়বীয় মন
নিজেই জানে না কখন হারায়।
কবিকে পারলে মুক্তি দিও তোমাদের এসব হিসেব থেকে।
দু বেলা শুধু ভালোবাসা দিও
মন ভরে খাবে জীবিকা রেখে।