ফরিদা ইয়াসমিন সুমি’র কবিতা
বিহানবেলা
ছবি ছেড়ে আমায় তুমি শব্দে গাঁথতে বলো,
এই যে দেখো ঘাসের ডগায়
জলের টলোমলো!
আমার দেহে আফিমফুলের গন্ধ যদি পাও
বিহানবেলা একলা ফেলে কোন ঠিকানায় যাও?
ঘুঘুর ডাকে উদাস দুপুর ছড়ায় যখন লু
আমি তখন গা জুড়োতে চাই যে তোমার ফুঁ!
আমি যদি জোনাকি হই
আগুন জ্বালি রাতে,
নিভে যাওয়া বিহানবেলাও
থাকবে আমার সাথে?
অবিশ্বাসী
ম্যাজিক বা হিপনোটিজম
জানা ছিল না কোনোকালে,
তবু এক উল্কা-ঝরা রাতে
চোখ বুজতে বলে শূন্যে
হাত বুলালাম বারকয়েক;
আমাকে নিস্তব্ধ, নিঃসাড় করে দিয়ে
আশ্চর্য আবেগে আবেশিত হলে তুমি,
আর আমি হলাম সম্মোহনে
পারদর্শী এক ম্যাজিশিয়ান!
উল্কারা মহাশূন্যে মিলালে
নিবিড়তম দক্ষতায়
আবেশ নিলাম সরিয়ে;
সেই থেকে তুমি
পুরোদস্তুর প্রেমিক,
আর আমি অবিচল অবিশ্বাসী!
পুরনো পৃথিবী আর তোমাকেই ভালোবাসি
যাও, একে একে চলে-
বলবার নেই কিছু।
এভাবেই গিয়েছে চলে,
দূর আর নিকট অতীত।
প্রতিবার প্রস্থানে
আড়মোড়া ভাঙে পৃথিবী-
নতুন স্বপ্ন চোখে নিয়ে,
সতেজ স্ফুরণের আবাহনে
সদ্য ভূমিষ্ঠ এক শিশু!
যাও, চলে যাও একে একে
বলবার কিছু নেই-
পুরনো পৃথিবী আর
তোমাকেই ভালোবাসি।
আমরা আমাদের হব
দুঃসময় ফুরোলে আমরা আমাদের দেখব,
আমি আমাকে
তুমি তোমাকে।
পাশাপাশি ঘুমোব;
জমানো বিস্তৃত ঘুম।
গভীর মনোযোগে আকাশ দেখব;
কখনো চিৎ, কখনোবা উপুড় হয়ে।
দুঃসময়কাল ফুরোলে আমরা আমাদের হব
আমি আমার
তুমি তোমার।
বরফে টাটকা থাকে মীন
তৃষ্ণার্ত নক্ষত্রের রাতে চিতায়
দাহ করি একাকিতার শূন্যতা।
কাউকে ডাকি নি মধ্যরাতে,
তবু সে থেমেছিল অপেক্ষাতে।
শরীরভরা শুধু মীন আর মীন
লুকোতে ব্যস্ত হয়ে জানাই,
বরফে টাটকা থাকে মীনেরা!