মৃধা আলাউদ্দিন এর গুচ্ছ কবিতা

খোয়া ওঠা অমাবস্যা রুগ্ন রোড

খোয়া ওঠা অমাবস্যা রুগ্ন রোড

দুপাশে পুষ্টিহীন গাছ, ডাঙ্গা

কালিক মেশানো ন্যায্যমূল্যের বাতাস;

ছিন্ন বিদ্যুৎ-

এবঙ এখানে আমি একা হেঁটে যাই অন্ধ চোখে-

যাই কুয়াশার তাঁতে বোনা বিচ্ছেদের ভীষণ শরীরে

ভাঙা কার্পেট

খরস্রোতা যৌবনে।

প্রতিদিন ভুলে থাকি মর্ত্যরে মানুষ-আম-আপেল

জবড়জং এই জীবাশ্ম, জন্ম-জন্মের অলৌকিক আয়োজন।

রুটি, ভাত-কাপড়, জুতা-স্যান্ডেল; নাস্তার টেবিলে কিছুই পাই না

ভরা ফার্মেসির জানালায় ওঠে নষ্ট হওয়া নারী ও বৃষ্টি-

দাগী, দৃষ্টিহীন শীষের মতো লকলক করে চেয়ারম্যান

চেয়ারম্যানের চোরা চিন্ময় জিহবা…।

যেনো চোখে ভাসে খোয়া ওঠা অবাবস্যা রুগ্ণ রোড

আনন্দ-অশ্রু, ম্লান শিশির কণা-ভাঙে কুমারী মন

আর এইভাবে আর্তনাদ ওঠে অবহেলিত

পৃথিবীর পুষ্টিহীন পিঠে, ফসলের মাঠে, খালে-বিলে

কাশবনে

এবং আমি একা এখানে হেঁটে যাই অন্ধ চোখে

খোয়া ওঠা অমাবস্যা রুগণ রোড কালিক মেশানো পুষ্টিহীন গাছ-মাছ

রাত-রৌদ্র, পচা আম-আপেল সব আমারই থেকে যায়

থেকে যায় অসহায়, আর্তনাদ ভেজা ভারবাহী বৃষ্টির মতো।

পৃথিবী বাড়ন্ত বৃক্ষ ঝরনা হবে

তোমরা নদীর জলে রৌদ্রের সার দাও

ঢেউ লাগাও মাটির মার্গণ মউলে

এবং দেখে নিঅ রাত্রিরে, একদিন

নদীও মাটিরা গর্ভবতী হলে

মানুষ ফিরে পাবে কল্যাণময় কস্তুরি রাত…

তোমরা রেলের দৌড়ের সাথে পাল্লা দাও

পাল্লা দাও ঘড়ির কাঁটার সাথে

তোমরা পাল্লা দিলে গাছেরা ফিরে পাবে

বর্ণালী বরাঙ্গ বোধ।

তোমরা আকাশে সূর্যের দিকে তাকাও

আমি সূর্যকে স্বর্ণের থালা বানিয়ে দিয়েছি:

সূর্য থালা হলে তোমরা বাড়িতে বাড়ন্ত বৃক্ষ পাবে।

এবঙ এখন প্রতারক পাখি, পাখিদের ফিরে যাওয়ার কথা

পাখিরা ফিরে গেলে আজই

আম্বর-মেশকে মেশানো পৃথিবী ঝরনা হবে।

জবড়জং জেলি জোছনার গান

কখনও রাগে রৌদ্রকে ফালা ফালা করি

রাত্রিরে আমূল খেয়ে ফেলি জোছনা

আম-আঁটি

জবড়জং-জেলি

জায়ফল, জাক্কুম বৃক্ষ-

এবঙ একদিন আসমান তেতে ওঠে ভয়ে, ভুরভুর ভাটির টানে

ভেঙে দুমড়ে-মুড়চে যায় সন্দল সাদা প্রতারক ঘোড়া;

চোখের চাবুক দিয়ে খেয়ে ফেলি সবটুকু নোনা জল

বন্যা-বন্যা

দূষিত পানি

খড়-কুটো-খড়-

আবার ঠান্ডা হয় রাগ-রৌদ্দুর, রোষাগ্নী- রোসমৎ

গাছেরা-মাছেরা, জায়ফল-জাক্কুম বৃক্ষ সরে যায় রাস্তা…

এবং পৃথিবী তোমরা শোনো!

মানুষ আজীবন থেকে যায় মানুষ।

রাগে কখনও রৌদ্রকে ফালাফালা করি।

রাত্রিরে আমূল খেয়ে ফেলি জোছনা

আম-আঁটি জবড়জং জায়ফল জেলি

এবং রাগে রৌদ্রকে ফালা ফালা করি।

সিদ্ধ পৃথিবীর জন্য পঙক্তি

একটি আলোময়, অলৌকিক হ্যাঙ্গারে

বিশাল ঝুল বারান্দায় অথবা সমমান সমুদ্রে

নীল সমুদ্রে আমি সিদ্ধ দেবো আজকের নিমজ্জিত সভ্যতা।

প্রতিটি স্বাস্থ্যকর প্রজ্ঞাময় নুনের ফোঁটার মতো

সিদ্ধ হবে এই গ্রেনেড হামলা করা পৃথিবী।

পুঁজি আর সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে এই সিদ্ধ।

অবাক, অন্ধ ঈগলকে বোল শেখাবার জন্য এই সিদ্ধ।

আঁধার অথবা পোড়ো জমিতে ফুল ফোটাবার জন্য এই সিদ্ধ।

আমরা উদ্বেলিত উজ্জ্বল চাঁদ

আমার সামনের রৌদ্রগুলো এখন

দলজা নদীর মতো বেদনার্ত

প্রিয়তম বাংলাদেশ! তোমারও কী তাই?

আমার সামনের নদীগুলো পূর্ণিমা

চাঁদের মতো উজ্জ্বল

প্রিয়তম বাংলাদেশ! তোমারও কী তাই?

তবে কী আমরা পৃথিবীর পচা বমি অথবা গ্রেনেড

না, না, আমরা উদ্বেলিত চাঁদ-উজ্জ্বল মহানক্ষত্র।

One thought on “মৃধা আলাউদ্দিন এর গুচ্ছ কবিতা

  • অক্টোবর ২৯, ২০১৯ at ২:৪৪ অপরাহ্ণ
    Permalink

    হে প্রিয় সম্পাদক ! আমার গুচ্ছ কবিতা ছাপানোর জন্য তোমাকে হেমন্তের এই শিশির-সুন্দর, সোনালি রোদের ভালোবাসা দিলাম। আমি তোর এ সুন্দর কাজে আবেগ-আপ্লুত না হয়ে আর পারলাম না, যেমন মানুষ তাজমহল ও নায়েগ্রা জলপ্রপাত দেখে আবেগ-আপ্লুত হয়। ধন্যবাদ প্রিয়জন, প্রিয় বন্ধু আমার।

    Reply

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *