খান মুহাম্মদ রুমেল-এর কবিতা
লকডাউন
তিনচাকা আটকে যায়
লকডাউনের শৃঙ্খলে
নিয়ম বড় কড়া!
চারচাকা চলে যায়
নিয়ে নড়চড় সনদ
গতিময় তাদের বড় ত্বরা।
রহিম শেখের স্বপ্নে ভাসে
লঙ্কা আর নুন
সাহেব শুধু দৌড়ে চলে
টাকার অনেক গুন।
ডিম আগে না মুরগি আগে
জীবন আগে না জীবিকা আগে
মীমাংসা আগে হয়নি কিছুই।
লকডাউন চলছে লকডাউন
গরীব মরে মরুক তবে-
কার কি আসে যায়?
আমরা তবু বাঁচবো শুধু
সুন্দর পৃথিবীটায়!
সঙ্গনিরোধ
এসেছে সঙ্গনিরোধ কাল
দাঁড়িয়ে থাকা হবে না আর-
চৌরঙ্গীর মোড়ে
তোমার অপেক্ষায় ফুল হাতে।
মহামারির নগরীতে চলছে এখন-
বিচ্ছিন্নতার কাল!
দুর্বাঘাসগুলো বাড়বে বেয়াড়া
শিউলিতলা ছেয়ে থাকবে ফুলে
বইবে বসন্ত বাতাস শনশন
প্রকৃতির অপরূপে মিলবে না মানুষ
মিলবো না তুমি আমি!
নির্বাসনের কাল পেরিয়ে-
আসবে আলো- উজ্জ্বল।
হাঁটবো দুজন আবার
অনেক পথ অবিরাম
সংক্রমণ মুক্ত শহরে।
অপেক্ষায় আছি শরীরে মনে
যৌথ উল্লাসে মাতবো সবাই।
ভালোবাসার নগরে আসবে উচ্ছ্বল
রাস্তার পাশের দোকানগুলোতে-
মাস্কের বদলে ফের বিক্রি হবে
রাশি রাশি ফুল।
উচ্ছ্বাসের দিন আসবেই।
যদি বেঁচে থাকি
বেঁচে থাকি যদি আর ক’টাদিন
অতিমারির এই নগরে–
শুধরে নেবো ভুলগুলো সব
জ্যামিতিক নিয়মে।
ভুল বেদনায় রাঙাবো না আর
তোমায় অযাচিত।
বদলে নেবো চশমাটা চোখের
এবং
অভ্যাসগত ভুল কিছু নিজের!
বদলে নেবো চাপা আঁধার সব
অভিমানগুলো জমাট।
তুমি নেই মানে নেই কিছুই
কুড়ি বছরের হতাশা ছুঁয়ে
এসো বিলাসী হই স্বপ্নের!
যদি বেঁচে থাকি ক’টাদিন আরো
অতিমারির নগরে
ফুল হয়ে ফুটবোই আকাশে তোমার
ফেরাবে কিভাবে বলো-
বেঁচে থাকি তোমার নগরে!
অকারণ অপচয় নয় আর বেশি
এসো, ভালোবাসি।
জীবন
নিতান্তই ভালোবাসাহীন
নিরোত্তাপ দায় পালন
সকাল থেকে মধ্যরাত
নীরবে ক্ষয়ে চলা গতিহীন।
পেরেকমারা ক্ষয়ে যাওয়া চটি
রঙহীন শার্ট ঝুলে পরা প্যান্ট
আট ফুট বাই চারফুট কামরা
খেসারি ডাল একটা ডিম
সস্তার সবজি মোটা চাল।
দিনের পর দিন তারপর দিন।
গাঁয়ে রুগ্ন বাবা মা একগাদা ভাইবোন।
জীবনটা কি এমনই চেয়েছিলো
আমার বন্ধু অমরেশ?
অথচ
নোটখাতার লোভে ছিলাম তার পিছু
সে সব কি আজ রূপকথা?
জীবনটা কি এমনই চেয়েছিলো
আমার বন্ধু অমরেশ?
ধিক্কার দেয় না সে, দিতে শেখেনি!