জেসমিন দীপা’র কবিতা
বাতাসে আতরের সুবাস
এই যে নিশ্ছিদ্র নৈশব্দ নিস্তরঙ্গ উর্মিমালা
ঢেউয়ে ঢেউয়ে বয়ে চলেছে কত সাল কত যুগ
বাতাসে আতরের সুবাস, তীব্রতা ভোতা করে
স্নায়ু গ্রন্থি।
দীর্ঘশ্বাস বয়ে নিয়ে যায় সুদূর হৃদয় কিনারে
আকাশের গা বেয়ে জোছনা গলে গলে
রুপালী থালা উছলে পড়ে পৃথিবীর সীমানায়,
সে কোথায়? এই যে বেঁচে আছি,
অার লাশ হওয়াতে কোন পার্থক্য নেই!
নিজেকে ছুঁয়ে নিজ অস্তিত্ব অনুভুত হয়না
উগ্র শীতলতা স্তব্ধ করে রেখেছে অনুভূতির পাঁজর,
সবটুকু বিষাদ উগ্রে দিয়ে—
যন্ত্রনা কাতর করে, আমাকে মৃত করে দিয়ে
নিজ গুহা ভুবনে আত্মমগ্নতায় তৃপ্ত মুসাফির৷
যে জীবন শ্বাস প্রশ্বাস হীন পচন ধরেছে,
পোকামাকড় মশা মাছি জুটেছে
সহসা সেখানে আমি ডাকিনা
কোন শুভ্রতাকে জ্ঞানে অজ্ঞানে!
দেখে শুনে মনে জাগে
উৎসব কাঁদে শোকের মাতমে
মৃত্যু এসে উল্লাস করে কেন?
একটু বাড়তি মাংসের জন্যে!
খালি বাসে ভয় কিসের
চলন্ত রাজপথে লাফিয়ে বাঁচা কেন?
একটু বাড়তি মাংসের জন্যে!
ঘরে বাহিরে স্কুল কলেজে ক্যাম্পাসে
কিশোরী যুবতী গৃহবধু আঁধারে কাঁপে কেন?
ঐ একটু বাড়তি মাংসের জন্যে!
বিবেক বুদ্ধি লাজ লজ্জা পরাভূত
বিচারের বাণী নিরবে নির্বাসিত কেন
ঐ একটু বাড়তি মাংসের জন্যে!
পশুগুলো উলঙ্গ আস্ফালনে
উম্মাতাল দিগবিদিক শূন্য দিশেহারা কেন
ঐ তাদের…
তোদের ঐ বাড়তি মাংসের জন্যেই!
তিক্ত অর্জনের অন্তরাল
ঠিক কবে কখন থেকে যেনো তোমার
হৃদয়ের পথে পথে…
হাঁটতে হাঁটতে বাঁধা পড়ে গেছি….
অগোছালো কবিতার মিছিলের প্রতিটি
অক্ষরে অক্ষরে মিশে থাকা প্রণয় তুমি…
ধরা, ছোঁয়া যায় না তাই হারিয়ে যাওয়ার
ভয় নেই …
মৃত্যুর পর যদি আবারও জন্ম হয়…
মনে বিস্ময় নিয়ে যদি কোনদিন জানতে চাও…
কি চাও?
সেদিন ও অশ্রুসিক্ত কন্ঠে বলে উঠবো…
আর কতবার শুনতে চাও…
শুধুই তোমার হতে চাই…
দেখে নিও মৃত্যুর পরও আমি
বেঁচে থাকবো…
তোমার শুন্য চোখে হাহাকারের
ভাসমান সমুদ্র হয়ে…
যে হৃদয়ে বিষাদের কলঙ্ক নেই
আছে শুধুই বুক ভরা বিশুদ্ধ প্রেম।
সেই অমৃত পাত্র তোমায় ধার দিয়ে যাবো
অপেক্ষার তৃষ্ণার্ত দহনে পান করে…
অনুভুতির অন্তরালে ঢেকে রেখো কুয়াশার আস্তরনে…
এমনিই কিছুকাল না হয় চলুক তোমার…
একান্ত হেয়ালির খেয়ালি
অাধিপত্ত অবহেলায় অযত্নে রেখো
তোমার পাথর হৃদপিণ্ডে
অনন্ত অদমনীয় প্রেম
তাকে বিক্রি করে দিওনা…
তবে যে, আমার কাছে
দেনার দায়ে তোমার অবশিষ্ট বাসনাগুলোও
বিলীন হয়ে যাবে তিক্ত অর্জনের অন্তরালে!