নওশাদ জামিল এর কয়েকটি কবিতা
মাটিয়া বুরুজ
ঘােরলাগা শীতকাল দাঁড়িয়ে সমুখে
নীরবে পাতারা ঝরে, সুখে নাকি দুঃখে?
ঝরে পড়বার আগে কাঁদে ফুলপাতা
আমি লিখি পাতাদের সব শােকগাথা!
ইট-চাপা ঘাসের ভেতর প্রাণ থাকে
হলদে পাতার থাকে অনন্ত বিস্মৃতি
চাপে-তাপে উড়ে যায় পাতার প্রাসাদ
ভাঙা-গড়া জীবনের প্রাকৃতিক রীতি?
দুদিনের বাহাদুরি মাটিয়া বুরুজে
জীবনের আয়ুস্মান আর নেই বাকি
ঝরে পড়বার আগে গেয়ে যাও গান
ভালােবাসা কোনােদিন দেয় না তাে ফাকি!
আকস্মিক ঝড়ে উড়ে যাবে পাতাঘর।
মাটির মাজারে খুঁজো না আপন-পর!
অদৃশ্য বন্ধন
বিদায় মানে তাে শেষ চলে যাওয়া নয়
প্রকৃত প্রস্থান নয়, অনুভবে আসা
অন্তরে অনন্তকাল ওড়াউড়ি শেষে
অধিক গভীরে চিরকাল ভালােবাসা
বিদায় মানে তাে চিরতরে শেষ নয়
ছিন্ন নয় আমাদের অদৃশ্য বন্ধন
সন্ধ্যায় যখন নিভে যায় সূর্যবাতি
অন্ধকারে টের পাই তােমার স্পন্দন
বিদায় বিচ্ছেদ নয়, কাছাকাছি আসা
অধিক গভীরে চিরকাল ভালােবাসা !
হৃদয়ের আলপথ
মাঠের ভেতর দিয়ে আমি ছুটে যাব
অনেক অনেক দূরে—সূর্যাস্তের কাছে
জীবনমৃত্যুর মাঝে আবার দাঁড়াব
আবার হৃদয়ে নেব শূন্যতা, স্তব্ধতা
এমন নীরব হব যেন কোনােদিন
ছুঁঁই নি তােমার ঠোঁট, হৃদয়জমিন
এমন স্থবির হব যেন কোনােদিন
শিখি নি সাঁতার অশ্রুনদীতে, সাগরে!
খরস্রোতা নদীর মতন যেতে যেতে
হারাব অচেনা নদীমূলে, অন্ধকারে
মায়ার ভেতরে কেউ যদি ডেকে যায়
আকস্মিক তাকাব পেছনে—তারপর
হৃদয়ের আলপথ দিয়ে ছুটে যাব
অনেক অনেক দূরে —একান্ত নিভৃতে।