কবিতা

কানিজ ফাতেমা সোমার গুচ্ছ কবিতা

ছায়ামূর্তি

ক্লান্ত দেহে অচিরে নুয়ে পড়ি-
হঠাৎ আচমকা সে পেছনে এসে দাড়ায়!
একটা প্রশ্নতে কাঁপিয়ে দেয় বুক,
জাগাতে আমায় খোঁচা মারে খুব।

বসে ভাবছো কী তুমি?
আমি হতচকিতভাবে তাকাই ধুম।
খুব বেশি হতভম্ব হয়ো না!
অতলে-তলিয়ে যাবে।
“দক্ষ-সাঁতারু নও তুমি”
আমি নির্বাক!

জিরো থেকে শুরু চাও?
তা সম্ভব নয়!
ফসল ফলার সময় এসে গেছে,
আমি ডুবে আছি পিচ্ছিল জলে।
হাতড়ে বেড়ায় স্বপ্ন ঘুড়ি,
জবুতবু হয়ে চোপসা মুখে নুয়ে পড়ি।

নিধনের পথ হতে ফিরিয়ে আনো;
হে ছায়ামূর্তি।

মায়াবী প্রেম


মায়া এক উষ্ণতায় সুখদুঃখাদির বোধ
মননে বোনা এক প্রেমের মায়াজাল।
উথাল ঊর্মিতে অন্তরে জেগে ওঠি।
বিলকুল মাস্তিতে-
মাতিয়ে ওঠে টইটম্বুর নীড়ে।
দিবাকর নয়নে সুধায় আমাতে তুমি!
অমৃত সুখ হৃদয় জুড়ে।
ছায়াতলে ভেসে ওঠা অবয়বে মায়াবী রূপ
কস্তুরী হরিনের সুগন্ধ ছড়ানো এক প্রীতি-প্রেম।
অনন্ত সুবাস,অমৃত স্বাদ।

তুমি দূরে গেলেই ঝরে পরে
স্মরণেচোখের অশ্রুজল
ঔদাসীন্যে দিনরাত্রি আমার।

তুমি যেন এক মায়ায় ঘেরা
প্রশান্ত মহাসমুদ্রে ছায়াতরু,
মায়াবী প্রেমের বক্ষঃস্থল।

বুক চাপা ক্রন্দন

তোমার এতো করুণ দীর্ঘশ্বাস!
বুক পাঁজরে শোকের গুঞ্জন সশব্দে বাজছে-
আমার হৃদয় সংকেত দেই!
বিষণ্ন বেদনার জ্বলন্ত তাপে চোখের অশ্রুজল হয়েছে বিলীন- আমি দেখতে পাই!

ঘনীভূত ধূসর মেঘের রাজ্য-
তোমার ওই বদন টুকরোখানি।
আমার অন্তরে যেন বয়ে যাই সহসা দুঃখ অহর্নিশি।
তোমার ওই চাপা ক্রন্দন নীলাভ আকাশটা হয়ে ওঠে ধূসর-
ওই উদাসীনতায় সমস্ত কেঁপে ওঠে রাজ্য।

তুমি ওই করুণ-করুণ দৃষ্টি-তে চেয়ো না আমায়!
তোমার অশ্রু জল যেন আমার অঙ্গ হতে ঝরে পরা প্রতিটি ঘাম ফোঁটা।
নদীও শুকীয়ে যায় তোমার রোদনের চাপায়।
বেরিয়ে এসো-
বিষণ্ন বেদনার জ্বলন্ত তাপ হতে।
আমি তোমাতে জ্বালাবো সুখের দীপ্ত প্রদীপের মশাল।

অহংকার

এতটুকু পেতে নেই,
যতটুকু পেলে, হারাবে পথ ভুলে।
এতটুকু পেতে নেই,
যতটুকু পেলে, চলে যাবে অচেনা কূলে।
এতটুকু পেতে নেই,
যতটুকু পেলে, ডুবে যাবে গভীর জলে।
এতটুকু পেতে নেই,
যতটুকু পেলে, তুমি হবে অহংকারের দলে।
এতটুকু পেতে নেই,
যতটুকু পেলে, তুমি হবে অবিশ্বাসের মূলে।
এতটুকু পেতে নেই,
যতটুকু পেলে, হারাবে দূরত্বের আড়ালে।
এতটুকু পেতে নেই,
যতটুকু পেলে, ফেঁসে যাবে অনন্তকালের বেড়াজালে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *