কৃষক মাহমুদ এর গুচ্ছ কবিতা


সাদা হাত

পাঁচ আঙুলের এক সাদা হাত আকাশ আঁকার প্রত্যয় নিয়ে জন্মে আগুন এঁকে বসে আছে । যে আঙুল কলম ধরে পৃথিবীর পথে পথে ধূলো উড়াই আর পাখি বিনাশের আধুনিক গান গায় – অন্তত আমি তাদের প্রাণ চায়ের কাফে ফেলে খেয়ে নিতে পারি নিমিশেই –

তোমার সাদা হাত একটা সংসদ আঁকুক- সংবিধান তৈরী করুক মানবতার ।

তোমার সাদা হাত একটা ধর্ম নির্মাণ করুক – যেখানে ধর্মের নামে ব্যবসা নেই – হবে না ধর্ম কলঙকিত যুদ্ধ।

একটা সাদা হাত ছুঁয়ে দিলে তুমি বেঁচে রবে অনন্তকাল- এ জগতে এখনও বেঁচে আছে মীরজাফরের হাত।

একটা সাদা হাত এঁকে যাক বীষপাত্রের বীষ। মরে যাক কালো রাতের চরিত্রহীন সাপ।তুমি শুধু প্রনাম কর আমায়।স্বর্গ লিখে দেব তোমার নামে।-ব্রিটিশ হাত ভেঙেছি, তোমার হাত ভাঙতে চাই। আমি একাই মরতে চাই তোমার বিরুদ্ধে।

একটা হাত বীষকড়ালের পাতায় পুড়ে যাক তবু সে নষ্টদের থেকে দুরে থাক। তোমার হাত গার্গীর কমর থেকে উঠে আসুক।’ জ্বালাক বিপ্লবী প্রভাত।

মানুষধর্ম

রোজ রাতের শরীরে শুয়ে থাকে একটি লাশ। রাতের মতো কালো।প্রাপ্তবয়স্কৃ স্তনের মতো ফোলা তার দেহ। কিছু নেই-ভীতু।স্বর্গের পথে হাঁটতেও যার দারুণ ভয়।পায়ে ব্যথা পাবে বলে খাঁট থেকে নামে না সাতাশ বছর।

জন্মের প্রতি নেই বিশ্বাস।মৃত্যুকে শ্রদ্ধা জানায় বলে লাশের সাথে ঘুমায়। ঈশ্বর,ঈশ্বরীর প্রতি ভালোবাসার পায়রা দ্বিধার খিচুরী খেয়ে উড়ে যায়।

তোমাদের কোন দিন যা বলতে পারিনি-সেটা আমার সন্তানকে বলে যাব। ঈশ্বরধর্ম আমি কোন দিন’ই চাইনি, মানুষধর্ম ছাড়া। উন্মুক্ত বাতাসে ছুটে চলা প্রেমধর্ম ছাড়া।

.
এসো নিশি বিবাহ করি

যাপনের মন্থন মোহনায় একাকিত্বের ভায়োলিন। শরীরে শরীর ডুবিয়ে জীবনের অবগাহণ। :
: এসো নিশি বিবাহ করি!
:
অসম্মতির চাদর বিছিয়ে মায়া বাড়ালে মনে জল শুকিয়ে চর জাগলেও গায়ে মেশেনি গায়ের গন্ধ। :
: এসো নিশি বিবাহ করি!
:
আমৃত্যু বসবাস-পালকে পালক গুজে পাগলের স্বপ্নসাজ। মৃত্যুর পর ঈশ্বরের মতো তোমায় পাব! এ বিশ্বাস যেন ঘুম ঘুম রাতে-ঘুমের বনবাস।
:
: এসো নিশি বিবাহ করি!
:
তিন ইঞ্চি সাগরে অবণি অবণি খেলা খেলি,আদর করি,ভালোবাসি-পোড়া মাটির শরীরে মহাবিশ্ব আঁকি।তোমার শরীরে লুকিয়ে আমার কাঁন্না হাসি-তবে এ দ্বিধা কেন?
:
: এসো নিশি বিবাহ করি!

বাদলফুলে আদম জীবন

নদী কাননে বৃষ্টি নামে
শ’য়ে শ’য়ে বাদলফুল ফোটে
চোখ,কান নামিয়ে আনি
বৃষ্টি-জলনূপূর শব্দ নিতে।

জল তলে শুয়ে আকাশ দেখি
শব্দ শুনি জলবৃষ্টির –
ভেঁসে যেতে যেতে
ফিরে
তাকায়
প্রিয় রমণী নদীর
আদিম আদরে
আমাকে একাকিত্বের বৃষ্টিছুরিতে কাটো, কেঁটে কুচি কুচি করে ভাঁজো, সেটাকে পারফিউম করে গায়ে,চোখের ভাঁজে ঠোঁটের সমুদ্রে মাখো।
বৃষ্টি নারী
আর ভালোবাসা না
আমাকে শুধু নিয়ে যাও
আদমের জীবনে।

শরীর

শরীর
বাতাস কারখানা।
ভালবাসা
উপেক্ষীত জোয়ার ভাটা।

যত কথাই ভাব
শরীরে এসে শরীর একা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *