ছোটগল্প

ছোটগল্প।। সেলিব্রেটি ।। রনি রেজা

সরলপুর গ্রামের গৃহবধূ মহিতন বেগম এখন সেলিব্রেটি মাহি সুলতানা। কবি হিসেবে নাম-ডাক তৈরি হয়েছে। তৈরি হয়েছে হাজার হাজার ফ্যান, ফলোয়ার। ডাক পায় কত রকম সাহিত্য অনুষ্ঠান, আড্ডায়। ফেসবুকে কিছু পোস্ট করার সঙ্গে সঙ্গেই বৃষ্টির মতো টপাটপ পড়তে থাকে লাইক কমেন্ট। কেউ কেউ তো কমেন্টবক্স বেয়ে ঢুকে পড়ে ইনবক্সে। কত রকম প্রশংসা, স্তুতিবাক্য! শুধু কি সাধারণ মানুষ? বড় বড় কবি, সাহিত্যিক, সম্পাদকরাও তার লেখার, ছবির প্রশংসা করেন। সব কাজের ফাঁকে তার মনের মধ্যে একটি কথা ভেসে থাকে সারাক্ষণ─ আজ সে সেলিব্রেটি। ভাবলেই শীতল হয়ে ওঠে মনটা। কখনো সখনো
একাই খিলখিলিয়ে হেসে ওঠে। আবার পরক্ষণেই গম্ভীর হয়ে যায়। সেলিব্রেটিদেও গাম্ভীর্য্য দরকার। সেলিব্রেটি ভাবনার সঙ্গে আরেকটি ভাবনা জোড়া হাঁসের মতো লেগেই থাকে। বড়দের মস্তিষ্কের পরিধি কত! কারণ আজকের মাহি সুলতানা হয়ে ওঠার পেছনে যতটা না নিজের মস্তিষ্ক কাজ করেছে তারচে ঢের বেশি অবদান ওই বড়দের মস্তিষ্কের। সে গল্প না হয় পরেই জানা যাবে।
সেলিব্রেটি হওয়ার বাসনা কখন, কিভাবে, কোথা থেকে মহিতনের মনে আবাস গেড়েছিল তা ঠিকঠাক মনে নেই তার নিজেরই। তবে এ যে ছোটবেলার শখ তা স্পষ্টই মনে আছে। দেখতে নায়িকার মতো সুন্দরী হওয়ায় সবখানে একটু বাড়তি আদর-যত্ন পেত। পেত প্রশংসাও। এই প্রশংসার মোহ তাকে অবসরে সেলিব্রেটি হওয়ার বাসনা তৈরি করত। কিন্তু পরক্ষণেই ভাবত─ চাইলেই কি সেলিব্রেটি হওয়া যায়? তাছাড়া একজন সেলিব্রেটির চাল-চলন, জীবন-যাপন সম্পর্কে কোনো ধারণাই নেই। তারা কী খায়, ঘুমানোর সময় চোখ বন্ধ থাকে, নাকি খোলা রেখেই ঘুমায়, ব্যথা পেলে উহ, আহ শব্দ করে ওঠে নাকি মিষ্টি সুরে গান ধরে, ভাত চিবিয়ে খায় নাকি কবুতরের মতো গিলে নেয়… এমন অসংখ্য অমীমাংসিত প্রশ্ন মাথার ভেতর ঘুরপাক খায়; যার কোনোটির জবাবই জানা নেই মহিতনের। কৌতুহল থেকেই পত্রিকার বিনোদন পাতা, বিভিন্ন
ম্যাগাজিন, টেলিভিশনের তারকা বিষয়ক অনুষ্ঠান থেকে জানতে চেষ্টা করেছে সে। কিছু অনুসরণও করেছে তখন। নিজেকে তৈরি করেছিল কিছুটা ব্যতিক্রমভাবে। এই ব্যতিক্রম হওয়াটাই যেন কাল হলো। চোখে বিঁধল বাবা-মায়ের। কোথাকার কোন
ঠিকাদার ছেলের টাকা ও ক্ষমতার কাছে ন্যুয়ে পড়ল তারা। সপে দিল মহিতনকে। মহিতনের সেলিব্রেটি হওয়ার অদম্য ইচ্ছেটাকে। পুরোদস্তর সংসার জীবনে নিজেকে সপে দেয়ার পরও ইচ্ছেটা তার পিছু ছাড়েনি। মাথাব্যথার মতোই হুটহাট হাজির হয় ইচ্ছেটা। তুমুল কাঁপিয়ে দেয় তখন। বিশেষ করে যখন ছেলের স্কুলের বন্ধুদের মা বা কোনো তরুণ ছেলে যখন তার রূপের প্রশংসা করে তখনই সেলিব্রেটি হওয়ার বাসনা চাড়া দেয়। মাঝে মধ্যে নাটক, সিরিয়াল দেখার সময়ও হাজির হয় ইচ্ছেটা। যদিও এখন তা কিছু সংক্ষেপ হয়েছে এতদিনে। ভাবনা─ সেলিব্রেটি মানেই যে নাটক, সিনেমার নায়িকা হতে হবে এমন নয়, যে কোনো উপায়ে নাম-যশ হলেই হলো। মানুষ চিনলেই
হলো। কিন্তু সে সুযোগও পাচ্ছে না কোনোভাবে। শেষে কোনো উপায়ন্তু না পেয়ে মন খারাপ করা ছাড়া কিছুই করার থাকে না। আর যেদিনই এমন মন খারাপ হয় কোনো না কোনোভাবে ঝগড়া হয় স্বামীর সঙ্গে। মনটা আরো ভারী হয়ে ওঠে। এ সময়ে কিছুই ভালো লাগে না। সিরিয়াল, সিনেমা
দেখা বা ফোনালাপ করা; কিছুতেই মন বসাতে পারে না। এমন সময়ে স্বর্গীয় উপহার হিসেবে সামনে এলো ফেসবুক দুনিয়া। শুরুতে এটা সেটা দেখেই সময় কাটত। কী পেস্ট করবে, কিভাবে
লিখবে কিছুই বুঝত না। কথা বলা বা চ্যাট করার মতো তেমন কেউ ছিল না। এখন তার কোনো কিছুরই অভাব নেই। একটা নোটিফিকেশন চেক করতে ঢুকলেও কোথা দিয়ে ঘণ্টা পার হয়ে যায়, নিজেও টের পায় না। আসলে ফেসবুকে সময় দেয়াটা হচ্ছে মূল ব্যাপার। সময় না দিলে জনপ্রিয়তা ধরে রাখা মুশকিল।
তাছাড়া নতুন এই দুনিয়া সম্পর্কে যত বেশি জানা যায় তত ফায়দা। জানতে না পারলে, বুঝতে না পারলে জনপ্রিয়তাই বা বাড়বে কিভাবে? এখন একটু একটু করে সব জানছে আর জাকারবার্গের প্রতি কৃতজ্ঞতায় ন্যুয়ে পড়ছে। এখন মাহি সুলতানার মন খারাপের সঙ্গী এই ফেসবুক। আবার আনন্দ ভাগ করার জায়গাও এই ফেসবুক। এক মন খারাপের সকালে বারান্দার গ্রিল ধরে দাঁড়ানো নিজের একটি ছবি পোস্ট করল। সঙ্গে কবি আবুল হাসানের পঙক্তি থেকে দুই লাইন জুড়ে দিল─
‘কোমলতা নেই, তাই তোমার চোখের নীচে তোমার ভ্রুর নীচে তোমার তৃষ্ণার নীচে
এইভাবে লুকিয়েছি পিপাসায় আকণ্ঠ উন্মাদ আমি’।
অমনি শুরু হলো লাইক কমেন্টের ঝড়। ঘণ্টা পেরোতে না পেরোতেই শতক ছাড়ালো লাইকের সংখ্যা। ততক্ষণে কমেন্টও পড়েছে ৬৭টি।
মুহূর্তে মনটা ভালো হয়ে গেল। লাইক-কমেন্টের আনন্দটা ছিল উদযাপন করার মতো। ক্রমে সে বুঝতে পারল ফেসবুকে এক আজিব দুনিয়া। যার পোস্টে বেশি লাইক, কমেন্ট; তারই মূল্য বেশি। আর বেশি লাইক, কমেন্ট পেতে হলে অনেক কিছু
মেইনটেইন করতে হয়। সুন্দর সুন্দর ছবি পোস্ট করতে হয়। সুন্দর ক্যাপশন দিতে হয়। বেছে বেছে কমেন্টের জবাব দিতে হয়। সেগুলোও সুরেলা, ছন্দময় হতে হয়। সব কমেন্টের আবার জবাব
দিতে নেই। তাহলে সেলিব্রেটি ভাব থাকবে না। ইমেজ নষ্ট হবে। আইডি’র নামও কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। এজন্যই প্রথমে মহিতন বেগম নামে আইডি খুললেও পরে তা পরিবর্তন করে রাখে মাহি সুলতানা। ফেসবুক সেলিব্রেটি হওয়ার এ যাত্রায় অনেকটা এগিয়ে যায় মাহি সুলতানা। তবে অবলম্বন করতে হয় কিছু বাড়তি সতর্কতা। এখন আগের মতো ছবিগুলো আনএডিটেড প্রকাশ করে না। ফেসঅ্যাপ, ফটোশপের সাহায্যে সৌন্দর্য্য কয়েকগুণ বাড়িয়ে তবেই ফেসবুকে ছাড়ে। সঙ্গে গল্প, কবিতার বই ঘেঁটে ঘেঁটে দিতে হয় সুন্দর ক্যাপশন। এসবে এখন খুব পরিশ্রম করতে হয় এমনও নয়। অফুরন্ত ভাণ্ডার রয়েছে তার হাতের
কাছে। প্রথম দিকে যে কোনো কবির পঙতি হুবহু তুলে দিত। তবু অনেকে প্রশংসা করতো মাহি সুলতানার। মানুষ ধরতেই পারত না এটা কার লেখা। সেখান থেকেই কবি হওয়ার বাসনা জন্মে। সেলিব্রেটি হওয়ার সুপ্ত বাসনা সমর্থন জানায়
মুহূর্তেই। নিজে লিখতে না পারলেও কয়েকজনের কবিতা থেকে একটু একটু করে নিয়ে জোড়া দিলেই কিছু একটা দাঁড়িয়ে যায়। কেউ ঘুণাক্ষরেও টের পায় না। সময়ের প্রতিষ্ঠিত বড় বড় সব
কবি, সাহিত্যিকরাও সেসবের প্রশংসা করেন। তারাও বুঝতেই পারেন না। আসলে চারদিকে এত এত কবি, সাহিত্যিক দৈনিক এত এত সাহিত্যকর্ম জন্ম দেয়; কে কারটা পড়ে? ওই ফেসবুকে
যা সামনে আসে তার থেকেই দু’চারটা পড়া হয় বৈ কি! অনেকে তো তা-ও না পড়েই মন্তব্য করে। ─এসবই জানা হয়ে গেছে তার। জানা হয়েছে আরো অনেক কিছু। বড় বড় অনেক কবি, সাহিত্যিক, সম্পাদকের ইনবক্স রূপ দেখেছে। দেখেছে তাদের জ্ঞানের পরিধি। জানার পরিধি। এতেই ক্রমে টপকে যাওয়ার নেশায় পায় তাকে।
ইদানীং একটা মধুর স্বপ্নের ভেতর দিয়ে প্রত্যেক দিন ঘুম ভাঙে মাহি সুলতানার। মধুর সে স্বপ্নের আবেশ থেকে যায় দিনের অনেকটা জুড়ে। শুনেছে ভোরের স্বপ্ন নাকি সত্য হয়। এটিও ভোরের দিকেই আসে। সত্য হতেই পারে। সে দেখতে পায়─
‘বইমেলায় কোনো বইয়ের স্টলে সে বসে আছে আর তার সামনে দীর্ঘ লাইন। ভক্ত, পাঠকরা বই কিনে লাইন ধরে দাঁড়িয়ে আছে অটোগ্রাফ নেয়ার জন্য। টেলিভিশন চ্যানেলগুলোও হুমড়ি খেয়ে
পড়ছে। ক্লান্তি ভাব থাকলেও মুখে চওড়া হাসি টেনে দাঁড়াচ্ছে ক্যামেরার সামনে। ওদিকে ভক্তকূলের হৈ চৈ।’ কোনো কোনোদিন
ওই হৈ চৈ শব্দেই ঘুম ভাঙে। আবার কোনো কোনোদিন ঘুম ভাঙে টেলিভিশনের ক্যামেরার সামনে কথা বলতে গিয়ে। কী বলতে হবে ভেবে না পেয়ে আটেক যায় প্রায়ই। তখন অস্থির লাগে। দম
আটকে আসে। এর ভেতর দিয়েই ঘুম ভেঙে যেন কোনোমতে রক্ষা পায়। আজও ঘুম ভেঙেছে ক্যামেরার সামনে কিছু না বলেই। এতে সে কিছুটা বিরক্ত হলেও লাইন ধরা ভক্তকূলকে অটোগ্রাফ
দেয়ার আনন্দ থইথই ঢেউ উদ্বেলিত করে তার হৃদয়। মুহূর্তেই ফেসবুকে লগইন করে খুঁজতে থাকে প্রকাশকদের। একজনকে লাইনে পেয়ে তাৎক্ষণিক আলাপও জুড়ে দেয়। এক পর্যায়ে কথাও মোটামুটি ফাইনাল হয়ে যায়। তবে ছোট একটি শর্ত জুড়ে
দেন প্রকাশক। মাহি সুলতানা জিজ্ঞেস করে, কী শর্ত?
─কিছু বই অগ্রীম কিনে নিতে হবে। বোঝেন তো এত টাকা খরচ করে বই করবো, যদি বিক্রি না হয়…
─হা হা হা…
─হাসছেন যে?
─আমার জনপ্রিয়তা সম্পর্কে কোনো ধারণা আছে আপনার?
আমার ফেসবুক ওয়ালটা একটু ঘুরে আসুন।
─তা ঠিক আছে। তবু পরে বিক্রি না হলে…!
─বিক্রি না হলে আমি দেখব। ওটা আমার দায়িত্ব।
এই কথার পরই আস্বস্ত হন প্রকাশক। বলেন─ তবে দেরি কেন?
পাণ্ডুলিপি রেডি করুন। এই বইমেলায়-ই বের হোক।
─ওকে ডান
─ডান
প্রকাশকের সঙ্গে আলাপ শেষ করেই ফেসবুকে জানান দেয় তার প্রথম বই প্রকাশের খবর। মুহূর্তেই অভিনন্দ, শুভ কামনা, এগিয়ে যান, অপেক্ষা ফুরলোটাইপ মন্তব্যে টইটম্বুর হয়ে ওঠে কমেন্টবক্স। উপচে পড়ে তার কিছুটা ইনবক্সেও গড়ায়। কিছুটা
বিরক্তও লাগে। আবার উৎসাহ কম নয়। মেসেজগুলো সিন না করলেও নজর রাখে প্রত্যকটিতে। দু’একজন প্রতিষ্ঠিত, নামি, দামি
কবিদের মেসেজের রিপ্লাইন না দিলেই নয়। মেসেজের সূত্র ধরে আলাপও আগায় কয়েকজনের সঙ্গে। এরইমধ্যে মোটামুটি
পরিচিত এক কবি ইনবক্সে এসে সুপারহিট কবি হওয়ার জন্য সব প্রকার সহযোগিতা করবে বলে জানায়। প্রথম বই বলে কথা, একটা প্রকাশনা উৎসব করার পরামর্শও দেয়। পরামর্শটি পছন্দ হয়
মাহি সুলতানার। কিন্তু কিভাবে কী করবে ঠিক বুঝে ওঠে না।
পরামর্শ চাইলে বলে─ আরে ধুর, আপনার একটুও দুশ্চিন্তা করতে হবে না। যা করার আমিই করবো। আপনার মতো প্রতিভাবান, পরিশ্রমী একজন নারী উঠে আসুক সেটাই তো আমরা চাই। এজন্য যা যা করার আমি করবো। ঠিকই কথা রেখেছে সেই কবি। বই প্রকাশের পর তারই একান্ত চেষ্টায় প্রকাশনা উৎসবের আয়োজন চলে। হলরুম ভাড়া করা, ব্যানার করা, অতিথিদের নাস্তার মেন্যু ঠিক করা, অতিথি দাওয়াত করা থেকে শুরু করে পুরোটাই করে ওই কবি। অতিথি বাছাইয়ে
মাহি সুলতানার কিছু পরামর্শ নিয়ে দাওয়াতও পৌঁছে দেয় সে। প্রধান অতিথি হিসেবে দাওয়াত করা হয় সময়ের আলোচিত কবি অমলেন্দু ঠাকুরকে। মাহি সুলতানার নামই শুনেননি কারণে প্রথমে দাওয়াত নিতে অস্বীকৃতি জানান তিনি। কিন্তু ওই তরুণ জানান─ ‘মাহি সুলতানা কবি
হিসেবে নতুন হলেও ভালো লেখেন। প্রতিভা আছে। পরিশ্রমীও বটে।’ শেষে রাজি হন কবি অমলেন্দু ঠাকুর।
অনুষ্ঠানের দিন অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার অনেক আগেই হলরুমে পৌঁছে যায় মাহি সুলতানা। কাছের আত্মীয়, স্বজন সবাই এসেছে মোটামুটি। যে স্বামী এতদিন অসযোগিতা করে এসেছে তাকেও এনেছে। দেখুক লোকটা এতদিন কী ভুলটা করেছে। আরো যারা বাকি আছে তাদেরও ফোন করে ডেকে আনে। মোটামুটি নির্ধারিত সময়ের কিছুক্ষণের মধ্যেই ছোট্ট হলরুমটি ভরে ওঠে। যথারীতি শুরু হয় অনুষ্ঠান। সঞ্চালনার দায়িত্বে ওই সাহায্যকারী কবি। প্রধান অতিথিও এসেছেন

এরইমধ্যে। মোড়ক উন্মোচন করার পর কবি মাহি সুলতানা কাঁপা কাঁপা কণ্ঠে অনুভূতি প্রকাশ করে কোনোমতে। এরপর অতিথিদের শুভেচ্ছা বক্তব্যের পর শুরু হয় মূল পর্ব। প্রধান অতিথি
পাঠ উন্মোচন করবেন। বইটি মাঝবরাবর একটি কবিতা বের করে পড়তে থাকেন তিনি। প্রথম দুই লাইন পড়ে বইটি বন্ধ করে রাখেন। বাকিটা মুখস্থই পড়েন তিনি। উপস্থিতিরা অবাক হয়─
নতুন এই কবির কবিতা কবি অমলেন্দু ঠাকুরেরও মুখস্থ? জ্বলজ্বল করে ওঠে ওই সঞ্চালক কবির চোখ। কবি অমলেন্দু ঠাকুরের পাঠ
শেষে সঞ্চালক বলে ওঠেন─
‘নতুন কবি বলে মাহি সুলতানাকে অবহেলা করেছিলেন আমাদের প্রধান অতিথি। কিন্তু দেখা গেল তিনি তার কবিতা মুখস্থ রাখেন। অর্থাৎ…’
তিরতিরিয়ে ঘামছে মাহি সুলতানা। কিছুটা অন্যমনস্কও। এটা যে কবি অমলেন্দু ঠাকুরেরই একটি কবিতা। একটু এদিক-সেদিক করে লেখা। তার কাব্যচর্চার প্রথম দিককার লেখা। একটা দৈনিকের ঈদ সংখ্যায় প্রকাশ হয়েছিল। পরে আর কোনো বইয়ে যুক্ত করা হয়নি। ওই ঈদ সংখ্যা থেকেই নিয়েছিল মাহি সুলতানা। বর্তমান সময়ের কেউ না জানলেও মাহি সুলতানা তো জানে। জানেন অমলেন্দু ঠাকুরও। তিনি ওই কবিতাটিই
বেছে পড়লেন। এখন তার প্রতিক্রিয়া কী হবে? ভাবতেই গলা শুকিয়ে যায়। ঢোকে তৃষ্ণা গেলে।
কবিতা পাঠ শেষে কিছু না বলেই বের হয়ে যান অমলেন্দু ঠাকুর। মাহি সুলতানার চোখে ক্ষণিকের দৃষ্টি নিক্ষেপ করেন মাত্র। ওতেই সমস্ত প্রশ্ন; বুঝে নেয় মাহি সুলতানা।

৩ thoughts on “ছোটগল্প।। সেলিব্রেটি ।। রনি রেজা

  • Faqir Elias

    রনি রেজা এই সময়ের
    ‘সেলিব্রেটি’ লেখক।
    সাধুবাদ তাকে… 💐

    Reply
    • রনি রেজা

      শ্রদ্ধা জানবেন প্রিয় অগ্রজ

      Reply
  • বাংলার জেলি

    খুব ভালো লাগলো। সত্যি কথা

    Reply

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *