আন্তর্জাতিক নারী দিবসে কাব্যশীলনের বিশেষ আয়োজন ছড়া-কবিতা সংখ্যা।।
মুক্তি পায়নি নারী
এনাম রাজু
পায়ের নিচে আগুনে তৈরি আতসী কাঁচের রাস্তায়
পড়ে আছে স্বাধীনতা! দেখছো না কেনো, আছো তাকিয়ে
ওর মুখে কী খুঁজে পাও?
বিবস্ত্র নারী স্বদেশেই আজ বিরাঙ্গনা যেনো!
পাকের ছোঁয়াছে রোগে পেয়েছে
কিছু কিছু লেজহীন বানরের মন।
মুক্তি পায়নি নারী; সুস্থ হয়নি বাসা
অথচ করছি পালন কিন্তু কীসের জন্য
দিবসে গড়া রাণীর মঞ্চভাষণ?
পায়ের নিচে আগুনের তৈরি
আতসী কাঁচের রাস্তায় পড়ে থাকা স্বাধীনতায়
নারীকে এসে দাও সুখ, দুঃখ ছাড়া মুক্ত বাতাস
দিবসে দিবস হাঁটা পথ ছেড়ে।
বেশ্যা ও নগ্ন পাহারাদার
বীথি রহমান
শহরে কিছু বেওয়ারিশ প্রেমিক দেখা যায়
শিকার খুঁজে মাংস শুঁকে শুঁকে
মাথার উপরে যৌবনা চাঁদ; সেদিকে ভ্রুক্ষেপ নেই
এরা যৌবন খুঁজে রাস্তায়
নখ-দাঁত কেলিয়ে চুকচুক করে ঠিক যেন লালাযুক্ত কুকুরের জিভ এক।
আর শরীরে অচ্ছুৎ লেগে যাওয়ার ভয়ে
মেয়েরা সব ঘরমুখো হয় সন্ধ্যা নামার আগেই
পাছে গণিকা আর প্রেমিকা এক করে ফেলে ক্ষুধার্ত প্রেমিক!
অকস্মাৎ শহরে নেমে এলো দশহাতি এক দেবী
সেই থেকে খৈ ফোটা প্রবারণা পূর্ণিমায় নারী একাই যায় জ্যোৎস্নাস্নানে
যে শরীর খাবলে খেত শকুনে চোখ
সেই শরীরে ঢেউ খেলে ভরা পূর্ণিমার উছলানো জোয়ার।
একা? এই মধ্যরাতে?
বেশ্যা নিশ্চয়ই! বেরিয়ে এসেছে কাজ সেরে।
জ্বী হ্যাঁ জনাব, ঠিক শুনেছেন
এই শহর এখন এইসব বেশ্যায় ভরে গেছে
এরা রাতভর হেঁটে বেড়ায় খোলা রাস্তায়
আকাশ থেকে খসে খসে পড়ে আলোর কণা
আর এরা সিনা টান করে ছুটে চলে উত্তর থেকে দক্ষিণ খান।
মাংসের বদলে যাদের বুকে থাকে জ্যোৎস্নার ঘ্রাণ
তারা কখনো অন্ধকারাবৃত হতে পারে না
তারা নারী, তারাই বেশ্যা
তারা অসভ্যতাকে তুড়ি মারে শুদ্ধতার জলে
ওদিকে, বেশ্যা আর নারীর তফাৎ খুঁজতে খুঁজতে মুখ থুবড়ে পড়ে থাকে একদল নগ্ন পাহারাদার।
জাগো নারী
আয়েশা মুন্নি
জাগো ভগিনী মাতা রমণী
মানবতা গেছে ক্ষয়ে,
আর খেলা নয় অবহেলা নয়
তোমার সম্মান লয়ে।
জাগো একবার, হও দুর্বার
নও তুমি সুধা কামিনী,
জরা মনুষ্যত্বে কড়া নেড়ে যাও
হও অসুর নাশিনী।
জাগো ভগিনী জাগাও যামিনী
নয় আর সুখ হরণ
অপ্রেমিকের শিশ্ন নাশে
কর দৃঢ় পণে রণ।
সম্ভ্রম যার অস্ত্র সবার
নয় আর বিচার বিচার চিৎকার,
বিচারের ধ্বনি শোনে কোন গুণী?
লুটে নাও অধিকার।
জাগো নারী জাগাও তরবারি
কর নষ্ট চেতনায় আঘাত,
যন্ত্রণা সয়ে কেন আছো নুয়ে?
কর– কর প্রতিঘাত।
শিশু ধর্ষণ কোন দর্শন
কেন হত্যা – নির্যাতন?
প্রতিরোধে প্রতিশোধে জাগো নারী
ঘটাও পশুত্বের পতন।
নারীর জয়গান
ফাহমিদা ইয়াসমিন
কলমে চলুক বিপ্লবী লেখা কণ্ঠে স্লোগান
পৃথিবীর নারীখাদককে জানিয়ে দাও নারীর জয়গান
মেয়ে তুমি ভয় পেয়ো না গলা ফাটিয়ে করো চিৎকার
পৃথিবীকে জানিয়ে দাও নারী তুমি সত্যি চমৎকার।
আর্তনাদ ভয় ছুঁড়ে ফেলে এগিয়ে যাও সামনে
ঘরের কোণে বন্দী হলে, আলো আসবে কেমনে?
নারী তুমি প্রেয়ময়ী, নারী তুমি সমরে করো যুদ্ধ
নারী তুমি নেতৃত্ব দিয়ে দিয়ে পৃথিবীকে করো শুদ্ধ।
নারী তুমিই ভালোবাসা দিয়ে সংসারে ফোটাও ফুল
এগিয়ে যেতে আপন গতিতে করো না কভু ভুল।
ললনার জীবন লহরী
শামীম আহসান
আমার ছোট বেলায় খুব ইচ্ছে ছিল জানেন নাচের।
খুব ইচ্ছে!
আমি নাচ করবো, মুগ্ধ হয়ে হাজার হাজার মানূষ স্তব্দ হয়ে দেখবে।
শিখতে গেলাম নাচ,শিখলামও।
হঠাৎ তিনি একদিন নাচের ক্লাস শেষে থাকতে বললো, থাকলাম।
মা সেদিন আসেননি ।
তিনি আসলেন কাছে,
খুব কাছে!
আমার কষ্ট হচ্ছিল খুব, খুব!
আমার কোন কথা শুনলাম।
ঘাম শুকিয়ে তারপর এক গ্লাস পানি খেলেন।
একটু বয়স হলো।
আমার শরীর ফুল হয়ে ওঠছে।
কবিতা!
কবিতার দিকে মন গেল খুব।
কবি হবো,
কবিতা লিখবো।
একদিন নবদার সাথে আলাপ হলো।
খুবই ভালো মানুষ।
তিনি আর আমি হাজার ঘন্টা কবিতা নিয়ে আলাপ করেছি।
মনে হচ্ছিল কবিতার কবিতাকে আবিষ্কার করেছি।
নবদা বিবাহিত,বউদির খুব কন্ঠ সুন্দর,
কবিতায় সেই মায়া ঢালতো।
নবদা এক বিকালে ফোন করে বললো,অনু বিকালে আসিস তো।
গেলাম।
নবদাকে নবদা মনে হলো না।
গল্প করতে করতে স্তনে হাত দিলো,
চাপ দিলো!
কষ্ট হচ্ছিল,
দম বন্ধ হয়ে আসছিল।
তারপরে সেই আবার!
কলেজে ওঠলাম!
বন্ধু বান্ধব,ভালোই ছিলাম।
হঠাৎ শুনি কলেজে একটা বড় দাদা থিয়েটার খুলবে।
বাহ!
পারবো আমি,
অভিনয় পারবো।!
শুরু করলাম।
৭টা নাটকে অভিনয় করলাম।
সুশীলদা আমার প্রিয় হলে উঠলেন।
এতো সুন্দর মানুষ জীবনে কম দেখেছি।
চাহনি!
আহ্!
সুশীলদাকে ছাড়া কিভাবে বাঁচবো?
যে মানুষটার সাথে দিন পরদিন রাতের পর রাত পারলাম।
সুশীলদা…
সুশীলদা আর আসেনা,
আসেনা
আসেনা
আসেনা
একদিন শুনলাম সুশীলদা বিয়ে করেছে!
শরীরটাকে খুব বিচ্ছিরি মনে হতো, খুব!
শরীর না থেকে যদি মন নিয়ে বাঁচতে পারতাম,
তাহলে হয়তো সত্যিই বাঁচতাম।
একদিন বসে আছি।
মা খুব আদর নিয়ে এসো বললো,তর্ণা আজকে তোকে দেখতে আসবে।
কে?
কে আসবে?
পাত্র পক্ষ!
বিয়ে হলো।
হয়ে গেলো।
মনে তাও হয়েছিল সংসার করবো।
সং…সার!
পারলাম না।
শরীর,
শরীর,
শরীর!
প্রথম প্রথম প্রায় রাত।
কষ্ঠ…
কমেছিলো!
তাও মনে হতো,
এতো শরীর চায়,
শরীর।
নদী ও নারী ২
রাবাত রেজা নূর
নারীর ভিতর নদী বয়ে যায়; পদ্মা কিংবা যমুনা নয়; মিসিসিপি মিসৌরি।
অতবড় নদী দেখি নাই কোথাও আর; ঢেউ তার বারোমাসি।
সীনার ভিতরে উন্মাতাল যৌবন; প্রেম আসে কাল বোশেখীর মতো বেলা অবেলায়।
যতই তীরে উঠতে চাই দ্বিগুণ জোরে আঁকড়ে ধরে ততো; লতানো বাহুর মতো।
বয়সের সাথে নদী শাখা প্রশাখা বিস্তার করে দূর্বা ঘাসের মতো; নিটোল সবুজ।
কখনো প্রেম আসে কখনো হাওয়া আসে কখনো বা তীব্র মায়া জোনাকির ডানায় গন্ধ মেখে।
নখের মধ্যে কুয়াশার বরফ; জুলফিতে আটকে থাকে নিশ্বাস
খোয়াবের ভেতরে রঙিন গোলাপ ; পরাগে উজ্জ্বল ঠোঁট। নারীর ভেতর নদীর সীমাহীন স্রোত।
নদী ও নারীর শরীর অতি পবিত্র এক আরাধ্য ভূমি;
নরম পলির মত স্নিগ্ধ শীতল।
চরের বুকে বাসা বাঁঁধা ডিমপারা বাঁলিহাস জানে নদী তার কতটা প্রিয়।
শৈশব পেরুনো কিশোর জানে নারী তার কতটা প্রিয়।
মানুষ হয়ে জন্মাবো
জান্নাতুল রিকসনা
আবার যদি কখনও জন্ম নিই
তবে নারী নয়,মানুষ হয়ে জন্মাতে চাই।
আমারও ইচ্ছে করে,প্রজাপতির মত উড়তে।
ইচ্ছে করে মুক্ত বাতাসে ঘুড়ি উড়াতে।
আমারও ইচ্ছে করে,স্বাধীনতার
সুখ পেতে।
আবার যদি কখনও সুযোগ হয়,তবে নারী নয়,মানুষ হয়ে জন্ম নিবো।
আমিও চাই আমাকে কেউ সম্মান করুক।
আমার অধিকারগুলো ফিরিয়ে দিক।
আমিও বাঁচতে চাই মানুষের মত।
আবার আমি মানুষ হয়ে জন্মাতে চাই।
রুখে দাঁড়াও নারী
সবুজ আহমেদ
তোর নীল চোখের নীলাভ চাহনিতে বিরাজ করছে চাপা ক্ষোভ
অনেক দিন থেকে দেখছি তোর আকাশে ভরাট কালো মেঘ।
প্রানন্তকর তুই হঠাৎ থমথমে গুমোট গগনে সুতা ছেঁড়া ঘুড়ি
কী হল হঠাৎ? তোর লাল মুখটা ঘোলাটে ত্বকের নীচে ক্লেদ।
তোর আনমনা চেহারায় ভাসে ঘৃণার আগুনের স্ফুলিঙ্গ‐অগ্নিরূপ!
ধর্ষণের সমাজ অনাবৃষ্টি বর্ষণের অবক্ষয় তোকেও স্পর্শ করেছে বোধহয়
তাহলে শাসনের চাবুক খুঁজে নেয়। চাইলে হাতিয়ার দিতে পারি
যদি চাবুকের উপর্যূপরি কঠিন বেত্রাঘাত্রের আঘাত দিতে কার্পণ্য নয় রাজি।
তবে জনসন্মুখে ধর্ষকের বুক আর পিঠের চামড়া তুলে পেরেগ মেরে দেখা
তবে তাতেই থামবে বিকৃত লালসার উত্থিত উৎসমূল লালা ঝরা জিভ।
যুগল কবিতা-সকাল রয়
কুঞ্জল রথ-৭
রাত্রিস্নানের পর সে অন্তর্বাস খুলে দিকনদিক পাহাড়ে দাঁড়িয়ে অন্তর্যাস নিতে শুরু করেছিলো আর আমি নিকষ বর্ণে রাখাল সেজে বসে ছিলাম ওই মুখায়ব দেখার জন্য কিন্তু চাঁদ উঠে হঠাতই আমার ফাঁদ নষ্ট হয়ে গেলো।
নিরস হৃত চোখ বন্ধ করতেই মনে পড়লো আসলে আমি কে? পরিচয় জানতে যেতে হবে দশম আলোকবর্ষ দূর। যখন পৃথিবী ছিলো শতরুপার দখলে। ভবকৃষ্ণনদের পাড়ে একদিন পথ ভুলে ছিলাম বসে। আকাশ জুড়ে চলছিলো নক্ষত্রার্পন মিছিল।
এভাবেই একসময়…
বৃহস্পতি থেকে নেমে এলেন প্রজাপ্রতি, ত্রিনয়না সৃষ্টি করলেন নিদবৃক্ষ। ডেকে বললেন তোমার জন্য নয় তৃণভূমি, তুমি বরং বসে যাও এই বৃক্ষের নিচে তোমাকে দিচ্ছি শত বছরের ঘুম। অপূর্ণ সকল হয়ে উঠবে পূর্ণ। পিঙ্গলা শিশু হয়ে পর্বতে-জল-অরণ্যে তুমি বরং ছড়িয়ে দাও ঘুমের অনল। মুঠো খুলে উড়িয়ে দাও জোনাকদল।
তারপর থেকে দশম আলোকবর্ষ ধরে বাস এই দিকনদিক পাহাড়ে।
সম্যকরূপে দর্শন
নাহিদ মিশুক
চোখ থেকে কপাল সমান দূরত্বে তুমি থাকো
আরো কাছে এলে হয়তো মরে যাবো;
হয়তো মিঠে পানির ফোঁয়ারা নিভে যাবে।
মানুষ তো মানুষ হয়েই অসুখী!
সে কর্মটা সাধন হবে না এ-জন্মে।
লালসায় টইটম্বুর জ্বিভ লকলক করছে,
বিছিয়ে নিতে চাইছে টক দেহটা-
তুমি রমনী, তুমি রূপসী, তুমি নারী।
সুন্দরী নারীকূল শুনে রাখো-
পুরুষের দোষ ভর পেট খাওয়া;
নারীর অপরাধ নারী হওয়া।
শিক্ষামাতা বেগম রোকেয়া
সাজেদা পারভীন
কে তুমি? আলোকবর্তিকা হাতে দাঁড়িয়ে আছ
সহস্র বছর ধরে,
শুধুমাত্র নিজের নয়, সব নারীর সহস্র বছরের
অতৃপ্ত বাসনারে পূর্ণ করিবার তরে।
কে তুমি? ফ্লোরেন্স নাইটিংগেল অথবা স্বর্গের কোন দেবী? যার হাতে হাতে প্রজ্জ্বলন অগ্নিশিখা-
না না তুমি তা ও নও,
তুমি যে নারীর চোখ খুলে দেয়ার প্রয়াসে
যুগ যুগ ধরে অক্লান্ত পথিকের মতো
অসহায় দৃষ্টিতে দাঁড়িয়ে রও।
অবশেষে তুমি এলে-ঠিক সেভাবে
মহালয়ার দিন দেবীকে চোখ দান করার মত,
সমস্ত বাঙালি নারীর চোখে,
শিক্ষার কাজল পড়িয়ে দেয়ার জন্যই বোধহয়
তোমার এই আগমন ধরনীর বুকে।
আমরা সেই চোখেই আজ অনেক কিছু শিখছি,
অথচ তোমার আগমনী পূর্বে চোখ থাকা সত্বেও
ছিলাম আমরা অন্ধ,
বুঝতেই দেয় নি কেউ এ জীবনে
কোনটা ভাল, কোনটা মন্দ।
আজ একবিংশ শতাব্দীতে দাঁড়িয়ে দেখি
সর্বত্রই নারীর জয় জয়কার !
কত চ্যালেঞ্জ, কত ঘাত প্রতিঘাতেও
পড়ছে মাল্য রাজটীকার।
তাই নতজানু শিরে শ্রদ্ধায়
প্রতিগৃহ ওঠে ভরিয়া,
সে যে তুমি মোদের শিক্ষামাতা
রংপুরের বেগম রোকেয়া।
রত্নগর্ভা
পারভেজ পারু
তোমার পড়ে কি মনে গর্ভ জুড়ে বহুমাসের অবস্থান,
তোমার পড়ে কি মনে হাত-পা ছড়ায়ে কলিজায় দিয়েছ টান।
তোমার এপাশ-ওপাশে জাগতো ভীষণ মায়াবী এক নারী,
শীত-বর্ষা-গরম এলেও রেখেছে কোলে জুড়ি।
কষ্ট সয়ে অনিচ্ছাবশত আহার করেছে কেন জানো…?
রত্নগর্ভে রতন ঘুমায় তার তরেই সাজানো।
তুমি আসবে বলে মলিন মুখেও মাখতো চাপা হাসি,
মৃত্যুকে সে কাছ থেকে দেখে লাগায়ে নাভির রশি।
তুমি আসলে যখন অচেতন সে ক্ষণ সাময়িকী,
জাগলে চেতন খুঁজে সে রতন,”আমার কোলে দাও দেখি!”
এক পৃথিবীর সব হাসি যেন মায়ের মুখে ভাসে,
রক্তে ভেজা ছোট কপালে চুমু খেয়ে সে হাসে।
হাসরে মানিক কান্না থামায়ে চেয়ে দ্যাখ আমি কে,
রত্ন গর্ভে ঘুমায়ে ছিলি যার- “আমি রত্নগর্ভা সে।”
দুই পৃথিবীর সুখ বুঝি হায় বুক পাহাড়ে নামে,
মাথা গুজে আজ ঘুমায় রতন শ্রেষ্ঠ আর এক রোমে…
বোধোদয়
রাসেল খান
রঙিন ব্যানার যেথায় সেথায়
নারীর দাবি তুলি
যেই চলে যায় নারী দিবস
এসব কথা ভুলি।
মুখে বলি সমাধিকার
লোক দেখানো দায়ে
পুরুষ হয়ে যায় না মানা
আঘাত লাগে গায়ে।
নারী মানে হীন ওরা
ভীষণ অভিশপ্ত
এমন নীতি মনের ভেতর
করছি রোজই রপ্ত।
মা আমার
শাহ্জাহান সিরাজ
মা আমার অমূল্য ধন
নন সাধারণ নারী
যদিও মা যাননি স্কুলে
নয়কো ডিগ্রিধারী।
মায়ের কভু হয়নি দেখা
অনেক বড় দালান
ম্যানেজমেন্টে না পড়েও
নিপুণ সংসার চালান।
মা আমার নয়কো ভাই
লেখাপড়ায় বড়
তবুও মা ভয় বিপদে
হননি জড়সড়।
মা তুমি এই জগতে
সবার চেয়ে দামি
মায়ের সেবায় খুশি হন
মহান অন্তর্যামী।
জাগো নারী
এনাম আনন্দ
নারী তুমি, সৃষ্টিকর্তার এক অপরুপ সৃষ্টি
তাই তোমার দিকে যায় সকলের দৃষ্টি,
নারী তুমি,পথহারা পথিকের নীড়
তোমার জয়ধ্বনি শুনে করবে সবাই ভিড়।
নারী তুমি, দিকহারা নাবিকের দিশা
তোমার জয়ধ্বনি শুনে করবে সবাই ঈর্ষা,
নারী তুমি, ট্যামু ম্যাসিফের আগ্নেয়গিরির লাভা
ছড়িয়ে দাও তোমার কর্মের হাজার রকম আভা।
নারী তুমি, কাজে-কর্মে,রুপে গুনে অনন্যা
তুমি সকল মেরুতে বয়ে দিবে জয়ের বন্যা।
নারী
ইব্রাহীম রাসেল
যুগে যুগে নারী তুমি ত্যাগের নমুনা
এই পদ্মা, এই মেঘনা, তুমিই যমুনা।
তোমার পায়ে মূর্ছা যায় বঙ্গোপসাগর
ভালোবাসার উত্তাপে গলে কঠিন পাথর।
বীর পুরুষের সিংহাসন সাজিয়েছ তুমি
মমতার জলে সিক্ত করেছ প্রিয়ভূমি।
যেনো পাখির নীড় তুমি শান্তির আশ্রয়
সহসা ফুঁসে ওঠো, ক্রোধে শত্রু ক্ষয়।
কখনো কন্যা তুমি, ভগ্নি, কখনো মাতা
প্রখর রৌদ্রে তুমি মেঘ-বৃষ্টি ছাতা।
ধন্য করেছো ধরণী তোমার অবদানে
ইতিহাসে হোক সেরা তোমার অবস্থান।
নারী
শাজাহান কবীর শান্ত
নারী পারেন সঙ্গী হতে
সকল কাজে নরের,
তবেই সফল সকলখানে
বাইরে এবং ঘরের।
নারী পারেন আনতে আলো
আঁধার জলে মিশে,
নারীর মেধা তবে বলো
কমটা এখন কিসে!
নারী করেন উর্দ্ধে গমন
সাহস নিয়ে বুকে,
লিখে রাখে তা মহাকাল
কপাল খানা ঠুকে।
নারী এখন ওঠেন দেখি
মেধার জোরে জ্বলে,
উন্নত হোক বাড়ুক তারা
দেশমাতারই কোলে।
নারীর প্রতি ভালোবাসা
মো.ইউনুছ আলী
নারীর প্রতি ভালোবাসা
কেমন হবে বলো?
কেমন করে বাসলে ভালো
আসবে দারুণ ফলও?
বলছি আমি, আমার কথা
খেয়াল করে শোনো,
নারী হলো মায়ের জাতি
নরের প্রিয়জন ও।
তাঁদের দিবে সাধ্যমত
ভালো খাবারদাবার,
দিতে হবে নিজের মত
স্বাধীনভাবে ভাবার।
ভয়ের বদলে দিতে হবে
ভুবনজয়ী আশা,
দিতে হবে সাগরসম
আদর-ভালোবাসা!
এমন হলে ঘরের মাঝে
বইবে সুখের বায়ূ,
বাড়বে তোমার শান্তি-সুখ আর
বেঁচে থাকার আয়ু।
নারী
ইমামউদ্দীন ইমন
কখনো তুমি মাতারূপী
কখনো ঘরের বউ,
কখনও তুমি বোন বা কন্যা
আপন জনের কেউ।
মায়ের কাছে সবাই ঋণী
একথা সবাই জানে,
স্বামীকে যে মানতে হবে
একথা ক’জন মানে?
কলির যুগে অনেক নারী
করছে অনেক কিছু,
বলতে গেলে যুগ বলে যায়
আমি আছি তার পিছু।
চার দেয়ালে বন্দী হয়ে
আর কতকাল থাকবো,
দয়া করে আমায় ছাড়ো
জগতে চোখ রাখবো।
চলার পথে তাদের দেখি
নেই কোন আজ বাধা,
প্রেমানলে পুড়তে তারা
হয় কখনো রাধা।
ভালো আয়োজন হয়েছে।
লেখাগুলো বেশ ভালো