ঈদসংখ্যার ছড়া।। আবুল খায়ের নূর
শীত
হিম শীতেরই প্রভাত ভোরে
শিশির ভেজা ঘাসে,
অরুণ বরণ কিরণ রোদে
মুক্তা দানা হাসে।
ঘন কুয়াশা চাদর ঢেকে
তুষার বায়ু ঝরে,
গরম কাপড় অভাব হলে
শীতে কাঁপন ধরে।
রসের হাড়ি খেজুর গাছে
গুড় পাটালি হয়,
পিঠাপুলি চিতই ভাপা
শীতেই মজা হয়।
রমরমা রম আমন ধানে
উঠান ভরে উঠে,
ঘরে ঘরে চাষির মুখে
সুখের হাসি ফুটে।
নাড়ার আগুনে কুন্ডু জ্বেলে
পোহায় আগুন ভোরে,
গাঁয়ের চাষি দমে দমে
হুক্কা টানে জোরে।
রাতের বেলা ঘুমের ঘোরে
রেলের বাঁশি হানে,
ঝক ঝকাঝক শব্দ তুলে
শিষ দিয়ে যায় কানে।
হিম শীতেরই কঠিন ফাঁদে
পশু পাখি কাঁদে,
আড়াল হলে তুষার মেঘে
গুমড়ে কাঁদে চাঁদে।
ফড়িং নাচে
বাবুই দোলে তালের শাখে
ফিঙে ছায়া তলে,
দোয়েল শালিক শিমুল ডালে
ডাহুক গহিন জলে।
পানকৌড়ি হে আহার খুঁজে
নদী কিংবা বিলে,
দূর পাহাড়ে আবাস গড়ে
হিংস্র শকূন চিলে।
ফড়িং নাচে কাঁশবনে ভাই
ডালিম গাছে টুনটুনি,
কাঠবিড়ালি খায় পিয়ারা
খুকি বাজায় ঝুনঝুনি।
দোয়েল শ্যামা শিষ দেয়
লেবু গাছের ডালে,
খোকা খুখি মেলায় সুর
তারোই তালে তালে।
জন্মভূমি
জন্ম আমার ধন্য হলো
মাতৃভূমির কোলে,
যে মাটিতে স্নিগ্ধ সোহাগ
লাল সবুজে দোলে।
স্বপ্নের রাজ্যে হারিয়ে যাই
হাজার ফুল বাগে,
পানসি ভাসে নদীর জলে
দেখলে উচ্ছ্বাস জাগে।
কবির কন্ঠে ভাষা -ছন্দ
রাখাল বাজায় বাঁশি,
শিল্পীর কন্ঠে ঢেউখেলে যায়
গানের মুক্তা রাশি।
তাইতো এ দেশ আমার
জীবন মরণ হাসি,
যেথা যাই যেথা থাকি
প্রাণের চেয়েও ভালবাসি।