কবিতা

ইরা জেনিথ এর কবিতা

মনের খেলাঘর

আজ বৃষ্টি হচ্ছে, অনেক দূরে কোথাও খুব বৃষ্টি হচ্ছে
দিগন্ত রেখায় বৃষ্টির ছোঁয়া। আমার হৃদয়ের গোপন
গহীনে প্রতিধ্বনিত হয়ে যায় চোরা স্রোতের মতো। তোমার নীল চোখের প্রাচীনতম অনুভূতির টানে সৃষ্টি
হওয়া পরবাসী সুর।
আমি তোমার মাঝে বিলীন হয়ে আমার চোখের মাঝে
ঠাহর করি অবশ্যম্ভাবী আত্মপ্রেম।
আমি কি নিজের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে তোমার হতে পারবো?
আমি নিজের মাঝে ডুব দেই। আমার চোখ দিয়ে তোমার চোখে আমাকেই খুঁজি।
হয়তো খুঁজে ফিরি আমাদের কোনো দিনও
গড়েনা তোলা সমুদ্র সৈকতের শহরের অলিতে গলিতে
ইলিক-ঝিলিক দেয়া মনের খেলাঘর।
হয়তো খুঁজে ফিরি তোমাকেই ভালোবেসেফেলা আমাকে।

একা কিম্বা মেলায়

আজ সকাল থেকেই মনের মাঝে মেলা বসেছে
সোনালী রোদ্দুর, নারকেলের চীরল পাতার ফাঁকে দেখা
মেঘহীন নীল আকাশ, ইথার কাঁপানো বিস্মৃত বসন্ত।
রাস্তার ধারে ঝেঁপে ফুটে থাকা বনজুঁই—
আমার মনের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে পড়েছে তৃষ্ণা।
এই তৃষ্ণা ভালবাসার জলে অবগাহন করবার
যে উষ্ণতা অনুভবে অনুভূতির, তা উদযাপন ভুলে
তোমার অপেক্ষায় থাকতে থাকতে আমার দ্বৈতসত্তা
এখন চৈতি দ্বৈত সূর্যের তীব্র দহনে পুড়ছে।
এতো বৈচিত্র্য নিয়ে যে মেলা বসেছে আমার হৃদয়ে,
তাতে কৃষ্ণচূড়ার কলি না ফোঁটানো পর্যন্ত আমি ব্যস্ত।
তোমার দেয়া একাকীত্ব উদযাপনে।

প্রেমগাঁথা

আমার দিনগুলোতে সোনালী সূর্যের আলো পড়ে
ঠিকরে বেরোচ্ছে স্বর্ণচ্ছটা।
এখানে কষ্টের কোনো কথা নেই।
আমার বিরহের রঙ সোনালী ঘেঁষা খয়েরী
আমার বিরহ প্রাগৈতিহাসিক, তোমাকে অভিবাদন প্রিয়তম।
আমার হৃদয়ের গোপন গহীনে বিরহ প্রোথিত করবার জন্য।
তোমাকে ভালোবাসবার যে দুঃসাহস আমি দেখিয়েছি,
এর জন্য অভিবাদন আমাকেও।
আমার হৃদয়ের গহন বিরহের প্রতিশব্দ আমার অস্তিত্বে বিশ্বাস হয়ে আছে সেই জন্ম মুহূর্ত থেকেই।
তুমি আমার হৃদয়ের ঠাহর করা প্রেমিকের অবয়ব।
এই মিল নেহাত কাকতালীয় ব্যাপার নয়।
এই জন্ম জন্মান্তরের সম্পর্ক গড়ে তোলা বিশ্বব্রহ্মান্ডের কাছে আমার অনুরোধ, ফিরিয়ে দাও আমার অভয়ারণ্য, ফিরিয়ে দাও আমার আমিত্ব।
আমার দিনগুলো হয়ে উঠুক…
নিষ্কলুষ সোনালী।

বিরহ উদযাপন

অনেক কষ্ট করে খুঁজে আনলাম ‘একশো একটি নীল পদ্ম।’ তোমার অপেক্ষায় নীল হয়ে আছি।
এই নীল আকাশে ছড়িয়ে দাও প্রেম।
আমি নীল পদ্মর মালা গেঁথে আমার একাকীত্বের
দীর্ঘ বিরহকাল সহনীয় করে নিবো।
নীল অক্ষরের কবিতায় প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে
কবিতা আর আমার শুরু হবে অধিবাস্তব অপেক্ষার প্রহর।
এই অপেক্ষার প্রহর ভেঙ্গে তোমার আসবার মুহূর্ত কি আসে না?
তোমার কি জানতে ইচ্ছে করে না নিজেকে বুঝতে গিয়ে
আমি কি ভাবে করছি বিরহ উদযাপন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *