হারামজাদি || জাহীদ ইকবাল
বিপদ কখনো বিপদে পড়ে না__হারামজাদি এইটা না বুইঝাই খাড়ার ওপর আমাকে বিপদে ফেললো। শুনেছি শয়তান মরে গর্তে পড়ে। আমি কোনো গর্ত খুঁজে পাচ্ছি না। অদৃশ্য একটি গর্ত মনে মনে খুঁজতে লাগলাম। যেই গর্তে হারামজাদিকে পুঁতে ফেলা যায়। না এই মুহূর্তে আমি কোনো গর্ত খুঁজে পাচ্ছি না__ যে গর্তটা পাচ্ছি এই গর্তটা আমার জন্যেই খোঁড়া হয়েছে। এখানে আমাকেই পড়ে মরতে হবে। গর্তটা আমার দিকে তাকিয়ে আছে। গর্তের রঙ ঘুটঘুটে অন্ধকার। চারপাশে ঘন জঙ্গলে-ঘেরা। এই গর্তে একবার পড়লে আমি দ্বিতীয় বার আর মেরুদণ্ড সোজা করে দাঁড়াতে পারবো না। তাছাড়া বিশাল একটা মান-ইজ্জতের প্রশ্ন। হারামজাদি কঠিনভাবে জাল বিছিয়েছে। আমি আর কত বড় শয়তান__সে দেখছি আমার চেয়েও বড়টা।
না ভয়ে কলাগাছের মতো ভেঙে পড়লে চলবে না। কিছু একটা উপায় খুঁজে বের করতে হবে। তা না হলে এই নরকগর্তে পড়েই আমাকে মরতে হবে। কাউকে মুখ দেখাতে পারবো না। সমাজে আমাকে চরিত্রহীন বলেই প্রতিষ্ঠা পেতে হবে। টেনশনে মাথা আমার ভন ভন করে ঘুরছে। হঠাৎ হারামজাদি আমাকে একটা ধাক্কা মেরে বিছানায় ফেলে দেয়। দরজায় কখন খিল পড়েছে টের পাইনি। নটি আমাকে কিভাবে চটি পরিয়ে এই গর্তে এনে দাঁড় করালো__একটুও টের পাইনি। তার বাবা নাকি খুব অসুস্থ। কোথায় তার বাবা! ঢাহা মিছা কথা! বিপদ আশপাশেই ওঁত পেতে আছে। একটু আহ উহ করলেই ওরা হুমড়ি খেয়ে আমার ওপর পড়বে।
‘নাগর! তুমি মনে হয় ম্যলা ডরাইতাছো?’
‘ডর কিয়ের! মাইয়া মানুষ আমি ডরাই না।’
‘এইডা আমি জানি। তুমি একখান খাসা মরদ। প্যান্ট তো দ্যাখতাছি কামের আগেই ভিজাইয়া ফালাইছো!’
‘আমার ম্যালা পেশাব লাগছে।’
‘হাছাই কইতাছো__না মিছা কথা কইয়া পালাইবা?’
‘দুরো। পালামু ক্যা! তোমারে না দেইহা আজ আমি যাইতাছি না!’
‘হাছাই কইতাছো?’
‘মিছা কমু ক্যা?’
‘তাইলে আমার লগে লগে আহো। আমি তোমারে পেশাব করাইয়া লইয়া আহি।’
‘লও। পোলাপাইন গো লাহান হাত ধইরা রাখছো ক্যা?’
‘তুমি যদি আবার ছুইট্টা যাও!’
‘হা হা হা…মাইয়া মানুষ যে এতো অবুঝ হয় এইডা আগে জানতাম না।’
দরজার খিড়কি খুলতেই দে দৌড়…
আমার জন্য চুতমারানিরে যারা সেট করেছিল তারাই এখন তারে ছিইলাকাইটা লবণ লাগাইবো। তিন দিন পর দেশে নির্বাচন। আমাকে গর্তে একবার ফেলতে পারলেই হলো। টিনচোর, চালচোর কাইল্লাচোরা বাবলা মেম্বার বিনাভোটে চেয়ারম্যান হয়ে যেত। পারে নাই। চেয়ারম্যানগিরি আমি ওর পুটকির মইধ্যে হান্দাইয়া দিমু। নির্বাচনটা আগে হয়ে যাক। এই আব্বাস শয়তানরে ও চেনে নাই। আমার জন্য ও দুই নাম্বার মেয়েমানুষ ফিট করছে! ও জানে আমি মানুষটা মন্দ হইলেও কাজে এক নাম্বার। গ্রামের লোক ভোট আমারেই দেবে।