কবিতা

গুচ্ছ কবিতা ফখরুল আলম

ক্রন্দনহীন একদিন

যদি হঠাৎ একদিন,
বৃদ্ধ মোমের মতো গলতে থাকা শহরে, ধূলিময় বাতাস গায়ে মেখে,
জ্বলন্ত চায়ের ধোঁয়ায় নিজেকে দেখে- দস্তয়েভ্‌স্কির নরক ভ্রমণে ক্ষয়ে
তোমার খোঁজে ছুটে চলা সময়ে তার সাথে দেখা হয়ে যায়,
আমার যুক্তিহীন, মলিন চোখেরা রবে কি সেদিন, ক্রন্দনহীন!

যদি হঠাৎ একদিন,
চৈত্রের চিতার মতো পুড়তে থাকা প্রহরে, বিষাক্ত হাওয়া গায়ে মেখে,
রক্তাভ আকাশের ঢেউয়ে নিজেকে দেখে- জীবনানন্দের বিরহ পাঠে মগ্ন রয়ে
তোমার খোঁজে ছুটে চলা সময়ে তার সাথে দেখা হয়ে যায়,
যদি নিখোঁজ তাকে খুঁজে পাই সুরের আত্মহত্যায়, পুরনো অভ্যাসের
মতো পুনরায় স্মিত হেসে ফিরে আসে ভাবনার প্রবাহে কোনোদিন,
আমার যুক্তিহীন, মলিন চোখেরা রবে কি সেদিন আমারই মতো, ক্রন্দনহীন!

বহুকাল

বহুকাল তাকে দেখিনি, মনে নেই দিনক্ষণ। অঘ্রাণের পড়ন্ত বিকেলের হাওয়ায়
চুলগুলো উড়ছিল যেন, চিতার আগুনের মতো এপাশ ওপাশ ফিরে ফিরে
জ্বলে নিভে দুলে উঠা সাপের মণি, মায়াময় সে চাহনি, বহুকাল দেখিনি।

বহুকাল তাকে দেখিনি, মনে নেই দিনক্ষণ। নতুন প্রেমিকের নরম বুকে
রাত হয়ে যেন নেমে আসা সূর্যের মতো এদিক ওদিক ছুঁয়ে ছুঁয়ে
যাওয়া মন্ত্রমুগ্ধ সেতারের ধ্বনি, শুনিনি, বহুকাল তাকে দেখিনি।

বহুকাল সেই ইবাদাতে মশগুল সব ভুল হয়নি আর সন্ধ্যা প্রদীপে
নতজানু হেঁটে ক্রুর হাসি তার ফেলে চলে এসে বহুকাল পর কেন মনে হয়,
বহুকাল তাকে দেখিনি!

চক্র

এইখানে ঠিক এই শুকনো চামড়ার ভেতরে,
মরে গেছে যে লাশ- পৃথিবীর প্রাচীনতম কারাগার,
গেরুয়া বাতাসে দুজনার অবগাহন, আবেগের আঁচড়ে
ক্ষয়ে যাওয়া, ভয় পেত সে। কবে কোথা হতে কোন
ভিনদেশী রাজকুমার এসে নিয়ে যাবে তারে,
সেই অসমাপ্ত ক্ষত পুনরায় হলে উদয়! এইখানে,
এই শুকনো চামড়ার গভীরে প্রশ্নেরা, বয়ে আনে উত্তর-
১৫৭৯৩৫ টি বীজ হতে তারেই বেছে, অঝর ঝড়েও
সে জন্মাবে নিশ্বাসের মতো বারংবার, ঠিক এইখানে
প্রেমিকার গর্ভে, রন্ধ্রের গোপনে, একবার পেলে আসন,
দেখবে সে কেমন করে ভালোবাসে নারী, কত প্রেমময় তার মন!

২ thoughts on “গুচ্ছ কবিতা ফখরুল আলম

  • Sadab

    অনেক ভালো লিখেছো! দোয়া রইলো! ইনশাল্লাহ আরো অনেক বড় হও!

    Reply
  • kobi showkat alam

    চমৎকার চেতনার বিকাশ, স্বপ্নের মত মনে হল। অনেক সুন্দর হয়েছে। আপনার জন্য বড় হওয়ার দোয়া রহিল।

    Reply

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *