বিজনকান্তি বণিক এর গুচ্ছ ছড়া
আসছে শরৎ
ঝিরিঝিরি বইছে বাতাস
আজ শরতের ভোরবেলা-
নীলাকাশে বরুণ মেঘের
চলছে লুকো চোর খেলা।
মৌ মৌ মৌ গন্ধে ব্যকুল
শিউলী ফুলে সুবাসে-
সিগ্ধ আলো ছড়িয়ে দিয়ে
রাত্রি হলে চাঁদ হাসে।
শান্ত নদী বয়েই চলে
মৃদুমন্দ ঢেউ তুলে-
কাশের বনে ধ্রুপদনাচের
দৃশ্যটি কি কেউ ভুলে?
প্রকৃতির এই খেলা দেখে
উদাস বাউল গান ধরে-
দীপক রাগে বইছে বাতাস
সুরে সুরে তান ধরে।
হিম কুয়াশারর চাদর ঢেকে
যায় হেঁটে যায় বধুরে-
শরৎ রাণী আসছে দেখো
দিগন্তের ঐ সুদুরে।
আরকি ভোলা যায়
বোশেখ মাসের ভর দুপুরে
ইচ্ছে করে যেই-
ছেলে বেলার স্মৃতির মাঝে
হারিয়ে ফেলি খেই।
ছোট্ট গাঁয়ের পুকুর ডোবায়
পাড়ার সাথী মিলে-
সারাদিনই কাটিয়ে দিতেম
বিল মাগুরার ঝিলে।
বিল মাগুরার অনেক স্মৃতি
আজো ভেসে ওঠে
সেই বিলেতে এখনো কি
শাপলা-শালুক ফোটে?
ইচ্ছে করে সেই সে বিলের
কাজল জলে নাইতে
উদাস সুরে ভর দুপুরে
ভাটিয়ালী গাইতে।
শীতের ছড়া
শীত এসেছে শীতের বুড়ি
তরতড়িয়ে হাটে-
হিম কুয়াশার চাদর ঢেকে
পালিয়ে গেলো মাঠে।
শীতের বুড়ি
আনলো ঝুড়ি
ভর্তি করে পিঠে-
মা রাধলো
খেতে সাধলো
পায়ে পুলি মিঠে।
শীতের বুড়ি কই পালালো
সংগে খেজুর হাঁড়ি-
বসন্তকাল আসবে বলে
চললো তাড়াতাড়ি।
আমার বসুন্ধরা
ঐ দেখা যায় কাঁঠালডাঙ্গা
ঐ আমাদের গাঁ-রে
ঐখানেতে বাস করযে
আমার প্রিয় মা-রে।
কাকা-জ্যাঠা, পিসি মাসি
ঐ গাঁয়েতেই বাড়ি
এইখানেতে বৃক্ষ হাজার
সবুজ সারি সারি।
এই খানেতে দিদা দাদুর
শান্তি সুখের বাস
এই গাঁয়েতেই শেষ ঠিকানা
আজন্ম বিশ্বাস।
এইখানেতে পূর্ব পুরুষ
বলতো কত কথা
আজ সেখানে বিরাজ করে
স্তব্ধ নিরবতা।
এ গাঁ আমার হাওর নদী
স্বপ্ন দিয়ে গড়া
এ গাঁয়েতেই পাইরে খুঁজে
আমার বসুন্ধরা।