গদ্য।। শিল্পবিচার: কে প্রধান কে অপ্রধান।। রাজু আলাউদ্দিন
শিল্প কে কতটা বোঝে তা আমার জানা নেই। তবে কে কার থেকে বড় কিংবা কোনটি অন্যটির চেয়ে সেরা, তার ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণ শিল্পের ইতিহাসে আছে, থাকার কারণ সমালোচনাশাস্ত্র বা রসশাস্ত্র কিংবা শিল্পতত্ত্ব ও কাব্যতত্ত্ব নামে জ্ঞানের শাখাগুলো শত শত বছর যাবৎ রাজত্ব করছে কোনো নৈরাজ্যবোধ থেকে নয়। সেরকম হলে এই শাস্ত্র কেউই মানতো না। দ্বিতীয়ত, স্রেফ একজন ব্যক্তিহিসেবে বড়কে ছোট ,ছোটকে বড় মনে হলে কারোরই কিছু যায় আসে না। কিন্তু সমালোচনাশাস্ত্রের পরহেজগার কেউ অতটা নৈরাজ্য করার অধিকার রাখেন বলে মনে হয় না। শিল্পের সুক্ষ্ণতা ও দক্ষতার কথা বলা হয়, সেটা যদি সবারই সমান হতো তাহলে তো সবাই হয় বড় , না হয় কেউ-ই বড় নয়। কিন্তুু মানুষ স্বভাবতই তুলনাপ্রবণ সত্তা। আমরা যখনই কোনো কিছুকে ‘ভালো’ বলি — হামেশাই তো আমরা নানান জিনিসকে ইঙ্গিত করে বলে যাচ্ছি–তখন স্বভাবতই আমরা ভালোর বিরুদ্ধে এক অদৃশ্য ‘মন্দ’কে কল্পনা করেই সেটিকে তুল্যমূল্যের বিচারে ভালো বলে প্রতিপন্ন করছি। অতএব ভালো এব মন্দ যেমন আছে, ঠিক তেমনি ভাবে বড় এবং ছোটও আছে, আছে সেরা ও গৌণ ভাবার ন্যায়সঙ্গত ধারণা। রসশাস্ত্র কিংবা আরও সুনির্দিষ্টভাবে সমালোচনাশাস্ত্র এই বিচারের যে ঐতিহ্য ও ইতিহাস তৈরি করেছে তা যদি অসার ও অযৌক্তিক হতো তাহলে এই শাস্ত্রের টিকে থাকাই সম্ভব ছিল না। সেক্সপিয়র তার যুগের কেন সেরা লেখক তা নিছক একেকজনের কাছে একেক রকম বা আপেক্ষিক বলে নয়। বরং প্রতিভা ও দক্ষতার এক অসামান্য সমন্বয়ই তাকে তার যুগের সেরা লেখক করে তুলেছে। হোমার আর কায়কোবাদ যে একই উচ্চতার নন তারও কারণ ওই প্রতিভা আর দক্ষতা।