গুচ্ছ ছড়া-জগলুল হায়দার
মাস্ক সার্ভিস
আসেন আসেন আসেন সবাই
জলদি চড়েন আজকে
আমগো বিমান পুরাই ঢাকা
মস্ত বড় মাস্কে।
দিল্লী দুবাই লাহোর লন্ডন
যেথায় খুশি ইচ্ছা
যাইতে পারেন ফুল নিরাপদ
একটুকু নয় কিচ্ছা।
মুখ ঢেকেছি নাক ঢেকেছি
ঢাকছি ইভেন নেত্র
এই বিপদে করছি দখল
আমরা বিমান ক্ষেত্র।
কন কি মিয়া, নেত্র নিয়া?
খোলাস করেন পস্ট
অইটা ঢাকলে কেমনে যামু
মাথাই পুরা নষ্ট!
পুরাপুরি ঢাকি নি তো
একটু খোলা রাখছি
জোশের ঠেলায় এমন কইরা
থাপর দিয়া ডাকছি।
ঢাকলে পরেও শোনেন আদম
সমস্যা নাই বলবো;
আমগো বিমান আল্লারঅস্তে
থাপর দিয়া চলবো।
আসেন আসেন লাস্ট ট্রিপ ভাই
টেনশন নাই মাত্র
করোনা তে সেফ আছে তো
এই বিমানের গাত্র।
স্বাধীন দেশে স্বাধীন জবান
মায়ের ভাষা মায়ের জবান
আল্লাতালার দান তো,
প্রকৃতিতেই যায় মিলে ঠিক
এর পরিধি প্রান্ত।
বাপ-দাদা তো কইছে কথা
সেই সে ভাষার বুলি তে
সেই ভাষাটার লাইগা ভাইয়ে
মরছে পথে গুলি তে।
সেইটা থুইয়া আমরা কেনো
শিখছি ভাষা পোশাকি
স্বাধীন হয়েও আমরা আজো
তাইলে কারো পোষা কী?
আমরা পোষা থাকুম না আর
তোমরা থাকো চাইলে
আমরা এবার ডাল ফালায়া
চুমুক দিমু ডাইলে।
কৃত্রিমতার চর্চা দিয়া
করছো ভাষা মেকি তো
এই বাংলার নিজের জবান
বানাই’ দিছো ঢেঁকি তো।
সেই ঢেঁকি ধান ভানবো কবে
আওয়াজ তুলো গলা তে
ঠোঁট থিকা মা’র জবানটারে
আর দিমু না পলাতে।
লগ ইন টু ফেসবুক
ওয়ান টু থ্রী ফুঁক
লগ ইন টু ফেসবুক
ফেসবুক চলে না
চ্যাটের বাতি জ্বলে না।
চ্যাট জমে না তাই তো
আগের মজা নাই তো।
নেটে ঘেঁটে ইস্তাম্বুল
টেকো মাথায় নাই তো চুল
চুলের বাড়ি হুগলী
চুল নিয়া খুব ভুগলি!
তবু তো চুল গজায় না
বর্ধমানের ভজায় না
এই নিয়া খুব টেনশনে
চুল কেন যায় পেনশনে?
সেইটা নিয়া ঢাকাতে
ভাস্তে এবং কাকাতে
হায়রে কি যে তক্ক
করছো কি কেউ লক্ষ্য?
এখন কি কেউ লক্ষ করে
করলে কোটি পক্ষ করে
হাজার হাজার কিস্তি
করলো বাচ্চু চিশতী!
তাই তো বেসিক ফার্মারে
পাবলিকরে পাড় মারে।
পাড় মেরে ব্যাংক লুটলো
কোথায় দাদা ছুটলো?
সবাই তাতে উৎসুক
লগ ইন টু ফেসবুক
ফেসবুক চলে না
এত্ত কথা বলে না।
গায়েব
মাঠ একটা মাঠ ছিল
এখন সেটা গায়েব
ফ্ল্যাট বানিয়ে মাঠ খেয়েছে
পাড়ার বড় সায়েব।
খাল একটা খাল ছিল
এখন সেটা গায়েব
দোকানপাটে খাল খেয়েছে
নবাবপুরের নায়েব।
নায়েব সায়েব শহরজুড়ে
করছে সবই গায়েব
এইটা বলায় চোদ্দ শিকে
ঢুকলো আবু তায়েব।
শুকুর হাজার
আলবেলা মন স্বপ্ন পুষি
আল্লাহ তুমি এতো খুশি
জীবন জুড়ে ছড়ালে
চন্দ্র তারায় নদীর ধারায়
কানায় কানায় ভরালে।
তোমার দানের নেই কো শুমার
জেলে তাঁতি কামার কুমার
তোমার দানেই বাঁচে যে
পাখিরা গায় গাছের ছায়ায়
পাপড়ি পাতা নাচে যে।
কায়েম দায়েম জিকির বরন
দিবানিশি তোমার স্মরণ
তাই নিতে হয় সালাতে
তোমায় ছেড়ে কেউ কি বেড়ে
কোথাও পারে পালাতে।
আল্লাহ তোমায় শুকুর হাজার
দীনদুনিয়া ভবের বাজার
এত্ত মায়ায় সাজালে
নিত্য বুকে পরম সুখে
ভাবের বাঁশি বাজালে।
আলবেলা
সেই যে সোনার ভোরবেলা
শিউলি বকুল তোর বেলা
শিশির ভেজা ঘোর বেলা
সেই যে সোনার ভোরবেলা।
স্মৃতি হাতায় আজবেলা
দারুণ দুপুর মাঝ বেলা
ছায়ার বিকেল সাঁঝবেলা
স্মৃতি হাতায় আজবেলা।
সেই যে কিশোর কালবেলা
তোর বেণীতে লাল বেলা
আমার তখন আলবেলা
সেই যে কিশোর কালবেলা।