উপন্যাস ।। অন্য মানুষ ।। প্রিন্স আশরাফ ।। সপ্তম পর্ব
- উপন্যাস ।। অন্য মানুষ ।। প্রিন্স আশরাফ ।। প্রথম পর্ব
- উপন্যাস ।। অন্য মানুষ ।। প্রিন্স আশরাফ ।। দ্বিতীয় পর্ব
- উপন্যাস ।। অন্য মানুষ ।। প্রিন্স আশরাফ ।। তৃতীয় পর্ব
- উপন্যাস ।। অন্য মানুষ ।। প্রিন্স আশরাফ ।। চতুর্থ পর্ব
- উপন্যাস ।। অন্য মানুষ ।। প্রিন্স আশরাফ ।। পঞ্চম পর্ব
- উপন্যাস ।। অন্য মানুষ ।। প্রিন্স আশরাফ ।। ষষ্ঠ পর্ব
- উপন্যাস ।। অন্য মানুষ ।। প্রিন্স আশরাফ ।। সপ্তম পর্ব
- উপন্যাস ।। অন্য মানুষ ।। প্রিন্স আশরাফ ।। অষ্টম পর্ব
- উপন্যাস ।। অন্য মানুষ ।। প্রিন্স আশরাফ ।। নবম পর্ব
- উপন্যাস ।। অন্য মানুষ ।। প্রিন্স আশরাফ ।। দশম পর্ব
সপ্তম পর্ব
হামিদ ভাইকে লাশের কথা বলতেই একটু ভেবে নিয়ে বলল, ‘কবে লাগবে ছোট ভাই?’
হাসান বলে উঠল ‘আমাদের তাড়া নেই। আপনি যখন সুবিধে করতে পারেন তখন হলেই চলবে।’
‘দু’চারদিনের মধ্যে যদি ব্যবস্থা করি? অসুবিধা হবে?’
আমি দুদিকে মাথা নেড়ে বললাম, ‘না না। দেরীতে আমাদের কোন অসুবিধে হবে না। আপনার অসুবিধে না হলেই হলো।’
‘অসুবিধে আর কি! যারা লাশ বাসায় পৌছে দেবে ওদের কিছু টাকা খাওয়াতে হবে।’
হাসান তড়িঘড়ি করে বলে উঠল, ‘টাকা নিয়ে আপনাকে চিন্তা করতে হবে না হামিদ ভাই। টাকার ব্যবস্থা করাই আছে। আপনি শুধু লাশ দেন।’
‘কেমন লাশ দরকার?’
‘দুর্ঘটনায় হাত-পা কাটা লাশ হলে চলবে না। টাটকা তাজা আর অল্পবয়স্ক লাশ হলেই ভাল হয়।’
তারপর হাসান আমার দিকে তাকিয়ে চোখ টিপে বলল ‘সবচেয়ে ভাল হয় যুবতী মেয়ের লাশ হলে। শুটিং ও কাটাকুটি দুই সময়েই আরাম পাওয়া যাবে। নাকি বলিস!’
হামিদ ভাই বলল ‘মেয়েদের লাশ পাওয়া কঠিন। বেওয়ারিশ তো আরো। মেয়েরা সহজে মরে না।’
আমি বললাম ‘ওর কথা বাদ দেন তো হামিদ ভাই। পুরুষ লাশই যথেষ্ট। মেয়েদের লাশ কাটা ঝামেলা। স্কিনের নিচে প্রচুর ফ্যাট থাকে। কাটতে তো হবে আমাকেই। চর্বিতে মাখামাখি হয়ে যাব।’
হাসান কৃতজ্ঞ চোখে আমার দিকে তাকাল।
হামিদ ভাই রাতে বেরুনোর আগে বলল, ‘লাশ পাঠানোর আগে আমি জানাব। রাতেই পাচার করতে হবে। আপনারা রেডি থাইকেন।’
তিনদিন হয়ে গেল হামিদ ভাই কোন রেসপন্স করে না। আমরা পড়াশুনায় লেগে গেছি। হাসান অবশ্য ক্যামেরার কাজ নিয়ে পড়ছে।
পরদিন বিকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে হামিদ ভাই বলল, ‘আজ রাতে একটা লাশ আসবে মর্গে। বেওয়ারিশ লাশ। আপনাদের পছন্দমত লাশই। খবর পেয়েছি লাশটা তাজা এবং যুবক। কিন্তু লাশ আনতে গেলে আপনাদের একটু কাজ করতে হবে।
‘কি কাজ?’
‘কাজটা হলো মর্গে যে দিনে ডিউটি করে, সালাম ভাই, তাকে বলা আছে সে লাশটা একটা ট্রলির উপর চাদর দিয়ে ঢেকে রাখবে। নাম্বার না দেয়ায় ওই লাশ ড্রয়ারে ঢোকানো হবে না। একটা কাঠের সস্তা কফিন কিনে নিয়ে মর্গের ট্রলি থেকে ওই লাশটা নিয়ে আসতে হবে।’
‘আমাদের? আপনি থাকবেন না?’
‘আমি থাকার চেষ্টা করব। যদি না থাকি তবু ওখানে লাশ নিয়ে আসে এরকম দুজন কর্মচারীকে বলা থাকবে। তারাই লাশ বের করার কাজে সাহায্য করবে।’
‘আপনি মর্গে না থাকলে কই থাকবেন?’
‘দেখি থাকার চেষ্টা তো করবই। না থাকলে ওদের কাছে চাবি দিয়ে যাব। আজ রাতে লাশের খবর জানতে এক জায়গায় যাওয়ার কথা আছে আমার। না গেলে হয়তো মর্গে থাকতে পারি। ঠিক বলতে পারছি না। আমি সব বলে রাখব। আপনারা গেলেই ম্যানেজ করে দেবে। আর মেডিকেলের আইডি কার্ড দেখালে রাস্তায় পুলিশী ঝামেলা এড়াতে পারবেন।’
‘তবু আপনি স্পটে থেকে আমাদের সাথে সাথে বাসায় ফিরলে ভাল হতো।’
‘আরে না না। রাতে যেখানে থাকি ফিরে এসে আমাকে লাশকাটা ঘর পাহারা দিতে হবে। জীবিত মানুষের চেয়ে মৃত মানুষের পাহারাটা জরুরী। মৃতের শক্তি বেশি।’