ছড়া

মোঃ শফিউল আলম বেলালী’র ছড়া-কবিতা

মতের পরিণাম

আম-জনতার রোষানলে
জ্ঞান-হারাদের পোষাবলে
করছে তারা কাজ–
নয়তো বছর কয়েক চলে
থাকতো পড়ে গভীর জলে
সত্য কী-না আজ?

প্রথম ছিলো ওদের সাথে
সঙ্গ দিয়ে হাতে-হাতে
বলে ছিলো আগাও !
ইচ্ছা পূরণ হইলো তাতে
নিজেরা এখন এক সাথে
বলছে ওদের ভাগাও।

এইটা যদি হয় নীতি ভাই
নীতিবান আজ কোথায় পাই
বলতে পারেন কেউ?
আগা-গোড়ার মিল নাই
হিসাব কষে পেয়ে যাই
কুকুর ছানার ঘেউ।

আশা ছিলো বাঁধবে বাসা
যাদের নিয়ে ছিলো আশা
আইক্কা ওয়ালা বাঁশ–
তাদের দিকে করছে তাড়া
হারামজাদারা ঘর ছাড়া
হইছে এখন দাস।

নারীর অধিকার

নারী অামার মায়ের জাতি
খোদার সেরা দান
জন্ম নিয়েও মায়ের পেটে
দেইনি প্রতিদান।

লক্ষ কথায় মুগ্ধ রাখে
দয়াল মায়ের মুখ
তাঁর বুকেতে রেখে মাথা
ঠেকাই মনের দুঃখ।

ভালোবাসা যে অপূর্ণ তাই
বলার থাকে শেষ
নারীর মাঝে লুকিয়ে অাছে
স্থান-কালের রেশ।

মা-জননীর ভালোবাসা
স্ত্রীর প্রতি কভূ নয়
নারীর অংশ বোনের তরে
অন্য রকম হয়।

মেয়ে যে অামার লক্ষী সোনা
বাবাতে বেশী কাঁদে
ভালোবাসার এই গোলাপটি
পাবেনা-তো চাঁদে।

অাদরটুকু কেমনে বলি
একেক মতে সাঁই!
পাঠিয়ে দিলেন ধরাধামে
সৃষ্টি কূলের লাই।

মা বলে ডাকি যখন
কসম খোদার মানুষ
সত্যি করে বলোনা সবাই
মা কী থাকে খামুস?

এইতো এবার ঠিক হলো যে
স্যালুট ম্যান মা!
কবির কথায় সিক্ত মায়ে
প্রতিদান নিবেনা।

ইসলামের বিধান মতে
নারীর অধিকার
বুঝে নিলে নারী দিবসে
লাগবে চমৎকার।

দুই ভাগেতে সৃজন করে
জগৎপতি অাজ
হৃদয় চোখে বলছে দেখো
নারী-পুরুষ রাজ।

গর্ব যারা খর্ব করবে
শ্রেষ্ঠ মায়ের জাতির
দুই জাহানে ধ্বংশ তারা
পাবেনা অালো-বাতির।

বিজয় মিছিল

বিজয় ধ্বনির স্বর উঠেছে
ঈশান অগ্নি নৈঋতে,
বায়ুর কোণে বয়যে বাতাশ
হাসি কান্নার বৈরীতে।

গর্ভে ছিলো নতুন দেশটি
নয়টি মাসে জন্ম তার,
দিন – মাস পূরণ করে থামলো
মায়ের অাহাজার।

মা-জননী প্রসব ব্যথায়
যদিও লুটে চিৎকারে,
বিজয় পুত্রের জামা বুনে
লাল-সবুজ মিকসারে।

শহর – নগর গ্রামান্তরে
বিজয় মিছিল চলছে,
সাতচল্লিশ অার বায়ান্ন খোকা
বাংলা কথা বলছে।

শ্রদ্ধাসহ করছি স্মরণ
শহীদদের অাবিস্কার,
মানচিত্রে অাসন দেয়ায়
স্যালুট পুঁছি বারংবার।

এলো জগৎ রবি

এলো জগৎ রবি–
এলো সকল ঈদের রবি
ঈদ-এ মিলাদুন্নবী
ত’ব অালোতে শ্রষ্টার সৃষ্টি
প্রকাশ পেলো হে নবী —
এলো জগৎ রবী।

এলো জগৎ রবি দ্বীনের ছবি
মাহবুবে খোদা
উঠলো রবি ফুটলো রবি
বাহ্! জন্মই অালাদা —
এলো জগৎ রবি।

তুমি নূরের রবি, দূর অাকাশের
চন্দ্র-সূর্য না
ওগো সৃষ্টির শ্রেষ্ট রবি
মোদের মুক্তির মোহনা —
এলো জগৎ রবি।

অাঁধার ঘেঁষে প্রদীপ জ্বেলে
দেখায় পথের ঢালা
খোদার সৃজন ঘুরে দেখে
সে যে নবীদের অা’লা —
এলো জগৎ রবি।

রবির অাশিক অাল্লাহ্ তায়ালা
জনম বাঁধিয়া
প্রেমের গোলাপ দিলেন মা’বুদ
মুক্তির হাদীয়া–
এলো জগৎ রবি।

রবিউল অাউয়ালে বারীতা’লা
জানায় হুলিয়া
অামার মতো-ই সালাম জানাও
হৃদয় খুলিয়া–
এলো জগৎ রবি।

রেসকোর্সের দিন

বছর ঘুরে এলো ফিরে
লাল-সবুজের মাস
রক্ত ঝরা এই মাসেতে
পুরলো মোদের আশ।

স্বাধীনতার স্বপ্ন পূরণ
যেই ভাষণে দেখ্
রেসকোর্সে বলে ছিলেন
সেই আমলের শেখ্।

লড়াই মাঠে শপে দিয়ে
নিজের তন ও মন
আদায় করে নিলো সে দিন
ক খ গ প্রিয় জন।

যুদ্ধ করে মুক্তি দিলো যতো
শহীদ-গাজী ভাই
সালাম দেই অকাতরে
এখনও মুক্তি চাই।

ভাষা ও ডিসেম্বর

পূব অাকাশে দুলছে নিশান
পহেলা ডিসেম্বর,
মুক্তি সেনার মিশিন গানের
যাত্রা ক’দিন পর্।
চল্ , বিজয় মিছিল ধর্।

দেশ স্বাধীনে সাধক জোয়ান
যৌবনে করে ভর্ ,
পণ্ করেছে বিজয় অানার
ছিলোনা মনে ডর্।
চল, বিজয় মিছিল ধর্।

রাত পোহালে বাঁজবে সাঁনাই
স্বর উঠেছে স্বর্ ,
যুদ্ধে যাবার সময় ক্ষেপণ
করলে হবে পর্।
চল,বিজয় মিছিল ধর্।

লাল বৃত্তের সবুজ চাদর
নারী অথবা নর্ —
প্রাণ উজাড়ে করতে বরণ
বাংলা স্বাধীন কর্।
চল,বিজয় মিছিল ধর।

অস্ত্র ভান্ডার নেইযে মোদের
দূর্বার গতি গড়্ ,
এই গতিতে জয়ের নায়ক
হতে চাইলে মর্।
চল,বিজয় মিছিল ধর্।

শান্ত-সালাম রফিক জব্বার
অাছে মরে অমর,
স্বর্গ-সাগর তাঁদের জুটুক
ওরা বিজয় বর্।
চল,বিজয় মিছিল ধর্।

পথ শিশুর ফরিয়াদ

পথে-ঘাটে থাকি মোরা
এই বলে ভাই,
খোঁজ নেয় কেবা কন্?
দুঃখী হলে তাই।

রপ্ত করে মত্ত হয়ে
চন্দ্র যবে যায়,
অালো-বাতি নেই ভেবে
তাড়া করে খায়।

বুঝে অাসে দীপ্তি হীনা
কক্ষ গুলো কালো,
প্রভূ জ্যোতি দেখে চোখ
জপ্ করে ভালো।

থলে ভরা টাকা নেই
ধারে তৈল অানি,
সৌর শক্তি লুপ্ত হলে
অন্ধে জোটে পানি।

অালো চাই-দূর হোক
গৃণ্য যতো রাগ্,
যোগ করো ওগো মহি
খুলে প্রেম বাগ্।

জয় বলি প্রাণ ধ্বনি
স্নিগ্ধ অাঁচে সব্,
পার করো দিবা স্বামী
কালি মাখা ভব্।

গাত্র খোলা রেখে বলো
ঘুমে নাকী শান্তি?
দিবা-রাতি এক মতে
বেড়ে যায় ক্লান্তি।

কালা-মালা ফুল-পরি
ভয়ে হয় কাবু,
জ্যোস্না বিনে অন্ধ ঘরে
কাঁদে কতো সাবু।

নাম নেই-দাম নেই
শুধু দাও নীড়,
সাথে কিছু খানা দিয়ে
করে নাও বীর।

তালাক নিলাম

এই নাও! তোমায় ফুল দিলাম
সাথে একখান মালা
অামার মালাতে কইও কথা
যখন সইবেনা জ্বালা।

ফুলের মালায় সিক্ত গলায়
হাসি দেবেতো প্রাণখোলা?
হাছনা-হেনার ঘ্রাণ মহিমে
হৃদয় যে হয় উতালা।

তোমার বুকে লালচে দাগ–
যেনো কোনো জীবাণুর লালা,
বেলার মধ্যে ডাক্তার পেলে
হবেনা অাঁখির জলে নালা!

নিষ্ঠুর,নিঃদয়া, নির্ঘাত পাপিষ্ঠ
অামায় মেরেছো তালা,
এখন তুমি তালাক দিয়েছো
বলছো অামি না কী শালা!

রঙ্গিলা বুকের মন মাঝিয়ে
বলছে, জোরে বৈঠা চালা;
প্রাণটি তখন পাগল করে
নতুন ঢেউয়ের থালা।

মুক্ত খোঁজে যেই নদীতে অাজ
শুধু দেহ করছি কালা,
কেমনে তোমার তালাক নেবো
কও দেখি মানিক বালা?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *