ছড়া

মোস্তাফিজুল হক- এর গুচ্ছ ছড়া

ছড়া মানে

ছড়া মানে বড়া আর প্রিয় ডাল-খিচুরি,
বৈয়ামের মুখ খুলে খানিকটা ঘি চুরি।
কারো কারো মতে ওটা খুদকণা বিদুরই
কুটকুট কেটে চলা ধড়িবাজ ইঁদুরই!

ছড়া মানে গাছ থেকে আতাফল ছিঁড়ে আনা,
আধুলিটা দিয়ে কেনা মুচমুচে তিলটানা!
ছড়া হল ছিপ নিয়ে খলসে ও পুঁটি ধরা,
তেলেভাজা ফালি করা প্রিয় পিঠা গড়গড়া।

ছড়া মানে মিলেমিশে লুডু নিয়ে সাপখেলা,
মা’র গড়া কাঁথা মুড়ে শুয়ে থেকে যায় বেলা।
ছড়া মানে খোকাখুকু মোটা-বেঁটে লিকলিকে,
হাসিমুখে দাঁতগুলো দুধসাদা ফিকফিকে।

ছড়া মানে নয়াটিন, আহামরি চিকচিকে
দুপুরে তা রোদ পড়ে রুপাসম ঝিকমিকে।
ছড়া হল আমগাছে দোয়েলের শিসকাটা,
মোরগের ব্যঞ্জনে আদা-জিরা-ধনে বাঁটা।

ছড়া মানে কাজ নেই? বসে বসে খইভাজা,
প্রজাটজা নেই কেউ মনে মনে তবু রাজা!
ছড়া হল আনমনে কতকিছু ভেবে চলা,
পাগলের মতো করে একা-একা কথা বলা!

ছড়া মানে জাদুকর, পরী আর ভূতটুত,
দাগ কেটে নেচে খেলা খুব প্রিয় কুতকুত!
ছড়া যেন আর কী কী? ধুত্তোরি মনে নাই!
যাহা মনে আসে তাহা আনমনে লিখে যাই।

গিরিমল্লিকা

অচেনা কোন পাহাড় দেশে
চৈতীমেয়ে ঝরছে হেসে
গন্ধে পরাণ ভরে!
পাখির মতো বেড়ায় ভেসে
বাসন্তী ঘ্রাণ ছড়ায় এসে
মন যে কেমন করে!

গিরির পরী মল্লিকা সে
শুভ্রবসন জড়িয়ে আসে
অচেনা প্রান্তরে!
কুরচিমেয়ে বনসোহাগী
শূলের ব্যথায় রাত্রি জাগি
আসবে কখন ঘরে?

উল্টোমতি

বাঁধতে গিয়ে একটি রাখি
আঁকিয়ে ফেলি একটি পাখি;
যায় সে উড়ে ফুড়ুৎ করে!

আপন বলে টানতে থাকি
হঠাৎ দেখি দেয় সে ফাঁকি
যায় ভেগে সে সুড়ুৎ করে!

গড়তে গিয়ে একটা কিছু,
ছুটে বেড়াই ভাঙার পিছু
যায় ভেঙে তা ঝুরুৎ করে!

হাতে রাখা তেলের শিশি
ভরতে কারা দিচ্ছে হিসি
এই কথাটা বলবো কাকে?

যতই ভাবি চাপছি কাছে
ততই যেন পড়ছি পাছে
সবার থেকে অনেক ফাঁকে!

গভীর প্রেম

তোমার সাথে আমার কেন
এত্তো গভীর প্রেম?
শোনো আমি বলছি ওটা
নেই কোনো প্রবলেম।

তোমার বাবা দোস্ত আমার
কী ভেবেছো? লুল?
এ কারণেই তোমার খোঁপায়
গুজতে পারি ফুল!

তোমার সখের বাবা ভালো,
তার মতো কেউ হয়?
আপদকালে টর্চের আলো,
তার মতো কেউ নয়!

চলার পথে তোমার বাবা
মন করেছে জয়,
এই সুযোগে তোমার সাথে
সখ্য মধুময়।

তোমার রূপের তুলনা কী
ঠিক জানি না আমি,
বর্গাকারের আদলে ঠিক
হাতি ভেবেই ঘামি!

মাটির জালা বলুক লোকে
দোস্ত যে কয় ষোলো,
গোয়ালন্দের ইলিশ তুমি
রসনায় ঢেউ তোলো!

ভোটের ছড়া

চাচা মিয়ার বাড়ির রূপে
গুলশানই ঠিক জাপান,
কিন্তু তিনি কোন কারণে
তৈরি করেন চা-পান?

ভোটাভুটি আজ নগরে
ভোটটা যদি না পান,
এই কারণে আবুল মিয়া
চা বানিয়ে হাঁপান!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *