ছড়া

শচীন্দ্র নাথ গাইন- এর গুচ্ছ ছড়া

খেলা

কে বলেছে মাগো আমার

পড়াতে নেই মন,

লেখাপড়া ভাল্লাগে না

মোটেই  সারাক্ষণ। 

বিকেল হলে মাঠে গিয়ে

একটু যদি খেলি,

চেঁচিয়ে বাবা মাতায় বাড়ি 

খোকন, কোথায় গেলি?

বন্ধুগুলো খেলতে আমায়

যেই নিতে চায় খোঁজ,

তোমার দিকে তাকিয়ে বুঝি

 হও না রাজি রোজ। 

পড়ার সময় তোমার খোকার

নেইতো অবহেলা, 

একটু আমায় ছাড় দিয়ে মা

করতে দিও খেলা। 

খেলায় গঠন করতে পারে

সুস্থ মন ও দেহ, 

সময় মতো খেলতে গেলে

রাগ করো না কেহ। 

দুষ্টুমি

সারাদিন দুষ্টুমি কাজে আর অকাজে, 

এই নিয়ে বাবা তাকে কত দেয় বকা যে। 

চোখ নয়, কালো করে কপালটা কাজলে, 

অহেতুক নাচানাচি দেখে মা’র গা জ্বলে।     

এটা সেটা লুকিয়ে সে বসে থাকে আঁধারে, 

খুঁজে খুঁজে দাদু বলে, কোথা গেল গাধারে?

অল্পেই রাগ করে ভেঙে ফেলে হাঁড়ি সে, 

যার তার সাথে তাই দেয় শুধু আড়ি সে। 

চোখ মোটা করে কেউ পাশে এসে দাঁড়ালে, 

নিমেষেই ছুটে যায় দরোজার আড়ালে। 

গাদাগাদা দুষ্টুমি আজ তার দখলে, 

তবু তাকে ভালোবাসে পড়শিরা সকলে। 

রিমোটের  পুতুল

গা তুলতুল খুকুর পুতুল

গড়া তা নয় মাটিতে,

এই  মানুষের মতোই তবু

 ভালোই  পারে  হাঁটিতে।

হেলেদুলে চলার সাথে

 মন খুশিতে নাচে সে,

হাত ইশারায় ডাকলে তাকে

দৌড়ে আসে কাছে সে।

বকলে তাকে রাগ করেনা

শুধুই থাকে তাকাতে,

দুধের বাটি চায়না নিতে

ভাত পারেনা মাখাতে।

সোনালি চুল উড়তে থাকে

একটুখানি বাতাসে,

গানের তালে এপাশ ওপাশ

দোলায়  নিজের মাথা সে।

খুকুর সাথে পাল্লা দিয়ে

ঘরেই পারে লাফাতে,

দেখেনি কেউ ক্লান্ত হয়ে

মোটেই তাকে হাপাতে।

সেই পুতুলে বায়না ধরে

চায়না কারো জ্বালাতে,

যা পারে তা দেখতে হলে

রিমোটটা হয় চালাতে।

ঝিঙেফুল

রোজ সকালে উঠেই দেখি দিচ্ছে ওরা উঁকি, 

আলতো হাওয়ায় দোদুল দুলে জানায় কত সুখী! 

জানলা দিয়ে হাত বাড়িয়ে পাইনে ওদের ছোঁয়া, 

চোখ জুড়ানো রূপ ছড়ানো রাতের শিশির ধোয়া। 

লতিয়ে যাওয়া গাছের ডগায় মজার হাসি হাসে, 

বন্ধু হতে প্রজাপতি উড়ে বেড়ায় পাশে। 

হলদে বরণ গাঢ় রঙে কীযে দারুণ আঁকা, 

দৃষ্টি কাড়ে যখন থাকে  সোনালী রোদ মাখা।        

শরৎকালের স্নিগ্ধ রূপের সাজিয়ে ডালি রাখে, 

খুশির খেয়ায় ভাসে ওরা তাকিয়ে পাতার ফাঁকে।      

ঝিঙেফুলের গন্ধে মেতে মৌ-ভোমরা জোটে,

গুনগুনিয়ে গান গেয়ে যায় জড়িয়ে মধু ঠোঁটে। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *