গুচ্ছ ছড়া হুমায়ূন আবিদ
ভূতের ভয়
এক ভূতের নাম ট্যাপা
রাগে থাকে খ্যাপা
হেলেদুলে চলে
একলা কোনো জন্তু পেলে
চেপে ধরে গলে ।
ট্যাপার ছেলে পটকা
লাগিয়ে দেয় খটকা
রাতকে বানায় দিন
অন্য ভূতকে অংক শেখায়
নয় দু গুণে তিন।
অমাবশ্যা রাতে
কেউ না থাকলে সাথে
ভূতরা ধরে মিলে
হাউ মাউ করে এক মুহুর্তে
খাবে তারা গিলে।
ঘরের ফেলনা ঝাটা
আরো মরিচ বাটা
রাখলে নিজের গায়
ট্যাপা-খ্যাপা ভূতেরা সব
করে যে হায় হায়।
ভূতের বাড়ি
ভূতের বাড়ি জয়দেবপুরে
এখান থেকে একটু দূরে
শ্যাওড়া বনের দ্বারে
সকাল বিকাল ভূতেরা সব
জ্যান্ত প্রাণী মারে।
একটা ভূতের লম্বা মাথা
গায়ে দিয়ে ছেঁড়া কাঁথা
নাকা স্বরে ডাকে
কাকে ধরবে কাকে মারবে
সেই ছবিটা আঁকে।
আরেক ভূতের চক্ষু কানা
সে নাকি হয় ভূতের নানা
লম্বা দাঁতের সারি
অন্ধকারে ঘুরে বেড়ায়
গাঁও গেরামের বাড়ী।
ভূতের বাড়ি মানব জাতি
যেতে মানা হলে রাতি
সবার আছে জানা
ইচ্ছে করে তবুও গেলে
ভূতের হবে খানা।
সকাল হলে
সকাল হলে খুকু হাসে
পুব আকাশের রবি হাসে
হাসে দূর্বাঘাস
পাখপাখালি মেতে উঠে
করে উচ্ছ্বাস।
সকাল হলে শিশির হাসে
গাঁয়ের মাঠে ফসল হাসে
হাসে পাতা ফুল
ঝির বাতাসে মিষ্টি সুবাস
হৃদে তুলে দুল।
সকাল হলে নদী হাসে
খেয়াঘাটের মাঝি হাসে
হাসে পাড়া গাঁও
রঙিন পালে হেলেদুলে
চলে ডিঙি নাও।
সকাল হলে স্বপ্ন হাসে
নতুন দিনের আলো হাসে
হাসে মেঠো পথ
দুঃখ সুখের হিসেব কষে
চলে জীবন রথ।
ভূতের দেশে
শ্যাওড়া গাছে ভূতের বাসা
ভূতের নানা কানা
ছোট বড় সবার আছে
ভূতের কথা জানা।
ভূতের রাজা খায়না তাজা
পঁচা বাসী ছাড়া
ভূতের দেশের বিশ্রী গন্ধে
মানুষ পড়ে মারা।
ভূতের মামা উটকো সাজে
আঁধার রাতে ঘুরে
মাঝে মধ্যে মনের সুখে
গান গায় নাকা সুরে।
ভূতেরা সব সকাল সাঁঝে
যায় না দূরের মাঠে
সারাটি দিন খেলা করে
শ্মশান বাড়ীর ঘাটে।
আমি যখন ঘুমের ঘোরে
ঘুরছি ভূতের দেশে
ভূতের ছেলে ট্যাপা-খ্যাপা
বলছে এইসব হেসে।