কিংবদন্তি কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেনের জন্মদিনে কাব্যশীলনের শুভেচ্ছা
শুভ জন্মদিন একুশে পদক ও স্বাধীনতা
পুরস্কার প্রাপ্ত ঔপন্যাসিক সেলিনা হোসেন
জন্ম : ১৪ জুন ১৯৪৭ ইং
হাঙর নদী গ্রেনেড পড়েননি বা এই সিনেমাটি দেখেননি এমন মানুষ এই দেশে খুঁজে পাওয়া ভার। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে এমন উপন্যাস আমাদের দেশে আর কোন নারী লিখেছেন কি-না আমার জানা নেই।
সেই ‘ উত্তর সারথী দিয়ে শুরু। তারপর একে একে লিখে গেছেন ‘ গায়ত্রী সন্ধ্যা বা পোকা মাকড়ের ঘরবসতি’র মতো
নামকরা সব উপন্যাস। এমনকি নজরুল সঙ্গীতের স্বরলিপি
নিয়ে লিখেছেন যিনি, তিনি আমাদের বাংলাদেসের কিংবদন্তি লেখিকা। নাম তার ‘সেলিনা হোসেন ‘
আসুন কিছু কথা জেনে নেই সেই গুণী নারী সম্পর্কে –
প্রখ্যাত ঔপন্যাসিক সেলিনা হোসেন তার উপন্যাসে প্রতিফলিত হয়েছে সমকালের সামাজিক ও রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব সংকটের সামগ্রিকতা। বাঙালির অহংকার ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের প্রসঙ্গ তার লেখায় নতুন মাত্রা যোগ করেছে। তার গল্প উপন্যাস ইংরেজি, রুশ, মেলে এবং কানাড়ী ভাষায় অনূদিত হয়েছে।
সেলিনা হোসেনের ১৯৪৭ সালের ১৪ ই জুন রাজশাহী শহরে জন্মগ্রহন করেন। তাঁর পৈতৃক নিবাস লক্ষ্মীপুর জেলার হাজিরপাড়া গ্রামে। বাবা এ কে মোশাররফ হোসেন এর আদিবাড়ি নোয়াখালি হলেও চাকরিসূত্রে বগুড়া ও পরে রাজশাহী থেকেছেন দীর্ঘকাল; কাজেই সেলিনাকে একেবারে মেয়েবেলায় নোয়াখালিতে বেশিদিন থাকতে হয়নি। সেলিনা হোসেনের মায়ের নাম মরিয়ামুন্ননেছা বকুল।
সেলিনা হোসেনের কর্মজীবন শুরু হয় ১৯৭০ সালে বাংলা একাডেমির গবেষণা সহকারী হিসেবে। তিনি ১৯৬৮ সালে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বেরিয়ে চাকরি পাওয়ার আগ পর্যন্ত বিভিন্ন পত্রিকাতে উপসম্পাদকীয়তে নিয়মিত লিখতেন।
কর্মরত অবস্থায় তিনি বাংলা একাডেমির ‘অভিধান প্রকল্প’, ‘বিজ্ঞান বিশ্বকোষ প্রকল্প’, ‘বিখ্যাত লেখকদের রচনাবলী প্রকাশ’, ‘লেখক অভিধান’, ‘চরিতাভিধান’ এবং ‘একশত এক সিরিজের’ গ্রন্থগুলো প্রকাশনার দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও ২০ বছরেরও বেশি সময় ‘ধান শালিকের দেশ’ পত্রিকা সম্পাদনা করেন। তিনি ১৯৯৭ সালে বাংলা একাডেমির প্রথম মহিলা পরিচালক হন। ২০০৪ সালের ১৪ জুন চাকুরি থেকে অবসর নেন। প্রথম গল্পগ্রন্থ উৎস থেকে নিরন্তর প্রকাশিত হয় ১৯৬৯ সালে। ভ্রমণ তাঁর নেশা। তাঁর মোট উপন্যাসের সংখ্যা ২১টি, গল্প গ্রন্থ ৭টি এবং প্রবন্ধের গ্রন্থ ৪টি।
সেলিনা হোসেনের উপন্যাস ‘পোকামাকড়ের ঘর বসতি’ ও হাঙর নদী গ্রেনেড চলচ্চিত্র তৈরি হয়েছিলো।
সেলিনা হোসেন বিভিন্ন পুরস্কার ও সম্মাননায় সম্মানিত হয়েছেন। ২০১৮ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় তাকে সন্মানসূচক ডি-লিট ডিগ্রিতে ভূষিত করে, এছাড়াও বিশেষ উল্লেখযোগ্য গুলো হলো,
ড: মুহম্মদ এনামুল হক স্বর্ণপদক – ১৯৬৯, উপন্যাসে অবদানের জন্য বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার – ১৯৮০, আলাওল সাহিত্য পুরস্কার – ১৯৮১, কামার মুশতারি স্মৃতি পুরস্কার – ১৯৮৭, ফিলিপস্ সাহিত্য পুরস্কার – ১৯৯৪, অনন্যা সাহিত্য পুরস্কার – ১৯৯৪, ভাষা ও সাহিত্যে একুশে পদক – ২০০৯, রবীন্দ্রস্মৃতি পুরস্কার – ২০১০, সাহিত্যে স্বাধীনতা পুরস্কার – ২০১৮।
আজ তার জন্মদিনে জানাই অফুরন্ত শুভেচ্ছা ও শ্রদ্ধাঞ্জলী। কাব্যশীলন পরিবারের পক্ষ থেকে ।