সাজিদ মোহনের কিশোর কবিতা
পাখিটির চোখে ঘুম নেই
বকুলের ডালে পাখিটি বেধেঁছে বাসা
শুকনো পাতা ও
জড়ো করে খরকুটো
একদিন গিয়ে দেখলাম আমি তাতে
সাদা কালো ছোপ
ডিম পারা আছে দুটো।
কিছুদিন পর সরিয়ে আসাম লতা
সাদা কালো ডিম
দেখতে গেলাম আবার
আমাকে দেখেই মুখ খুলে দিলো ছানা
ভেবেছিলো আমি
এনেছি ওদের খাবার।
গজিয়ে ওঠেনি পালক ফোটেনি চোখ
হাত দিয়ে দেখি
তুলতুলে দুটো ছানা
নিরাপদ দূরে আমাকে দস্যু ভেবে
মা পাখিটি খুব
ঝাপটালো তার ডানা।
আমি সরে যেতে বাসাটির কিছু দূরে
পাখিটি ফিরলো
ভীরু ভীরু পায়ে বাসায়
ছানাদের পাখি আড়াল করলো ঢেকে
ভাসালো হৃদয়
উপচানো ভালোবাসায়।
পাখিটির চোখে ঘুম নেই কিছুদিন
সারারাত ধরে
ডেকে যায় একটানা,
হয়তো বা ঝড়ে ভেঙে গেছে তার বাসা
নিচে পড়ে গেছে
ফুটফুটে দুটো ছানা।
বন্ধু বানাতে
তুমি যদি বসে থাকো
নদীটার ধারে
একদিন দুইদিন
তিনদিন পরে
দেখবে সে করে নেবে
বন্ধু তোমারে।
তুমিও বন্ধু করে
নেবে নদীটারে
নদীটার সাথে যেও
অথই পাথারে।
আঁকিবুঁকি কর যদি
পাখি সারি সারি
একদিন দুইদিন
তিনদিন পরে
দেখবে বন্ধু তুমি
হয়ে গেছ তারই।
পাখিও বন্ধু করে
নেবে যে তোমারে
বন্ধু বানাতে বল
কজনই বা পারে!
একটু ভালোবেসো
একটা ছোটো চিরল বিরল
গাছ লাগালাম আমি
গাছটা শুধু গাছ না যেন
সোনার চেয়ে দামি।
একটু বড় হতেই গাছে
বাঁধলো পাখি বাসা
উঠলো জমে গাছের ডালে
পাখির ভালোবাসা।
কদিন পরে বাড়লো গাছের
ডালপালা ও পাতা
গাছের নিচে বসলো এসে
একটা ছেলে
বৃষ্টি এসে বাতাস যখন
উড়িয়ে নিলো ছাতা।
রৌদ্র খরতাপে
বসলো এসে ক্লান্ত পথিক
গাছ বিছালো ছায়া
গাছটা যেন মাতৃস্নেহ
গাছটা যেন মায়া।
কদিন যেতে গাছের শাখা
সাজলো ফলে ফুলে
গাছটা তখন তার হৃদয়ের
দরজা দিলো খুলে।
তার হৃদয়ের দরজা খুলে
ডাকলো এসো এসো
তোমার হৃদয় দরজা খুলে
একটু দিয়ো আদর তাকে
একটু ভালোবেসো।
ইতিহাসের পাতায় দেখ
সমুদ্র কি তোমার
নাকি হাঙর,শুশুক মাছের?
এই পৃথিবী
নয় তো তোমার একার
এই পৃথিবী শিমুল পলাশ গাছের।
এই পৃথিবী পাখির
এই পৃথিবী ফুলের
হঠাৎ এসে ভাগ বসিয়ে
কদিন পরেই কাঁদবে তুমি
গুনবে মাশুল ভুলের।
তোমার ঘরে দেয় দেয়নি হানা
কখনো বাঘ-শেয়াল
উল্টো তুমিই বন জ্বালিয়ে
গড়ছ আবাস পাহাড় কেটে
তুলছ বিভেদ দেয়াল।
এক পা দু পা আকাশটাও
করছ তুমি দখল
আসছে সময় প্রমাণ হবে
আসল কে আর নকল।
পড়েছে কার পায়ের চিহ্ন
প্রথম বসুন্ধরায়
ইতিহাসের পাতায় দেখ
মিথ্যে অহমিকা তোমার
পথের ধূলোয় গড়ায়।