ঈদসংখ্যার কবিতা।। নবনীতা।। শেখ শামীম
“নবনীতা,
আজ থেকে প্রতিজ্ঞা করো,
তোমার এই নিরন্ন প্রেমিকের মুখ
আর দর্শন করবেনা।
হাজারো ক্লেশ, দৈন্য আর
দারিদ্র্যতার অভিশাপ নিয়ে জন্মানো ছেলেটা..
পৃথিবীর জঞ্জাল।
এক মুঠো অন্ন যোগানোর
যোগ্যতা যার নাই,
নারীর ভালবাসা, তার সাঁজে না।
প্রতিদিন তি ন কিলো হেঁটে
সস্তা টিউশন,
চটি টা ক্ষয়েছে মাস তিনেক!
অভাবের তারনায় তা আর
কেনা হয় নাই।
জানো নবনীতা, তুমি যখন সকালে, গভীর ঘুমে আছন্ন থাকো।
আমি তখন,
খালিপেটে তিন কিলো হাটি।
একবেলা ২ টা লেড়ে বিস্কুট, আর দুটো কলা খাওয়ার লোভে।
কখনও কখনও তাও জোটেনা।
তাই বলছি নবনীতা, তোমার এই অভুক্ত প্রেমিকের মুখ..
আর দেখোনা।
ডিগ্রির ঝুঁড়িটা পরিপূর্ণ হলেও
পকেট টা একদম খালি।
সারাদিন শুধু নেই নেই,
কিছু নেই, বলেই দিন কেটে যায়।
ডিগ্রি পেয়ে কি লাভ নবনীতা?
যদি দুটো নীল টিপ
তোমায় কিনে না দিতে পারি।
চাকুরির বাজারে ভীষণ আগুন,
কাঙ্গালেরা সে আগুনে
পুরে মরে।
যার বাপের কাড়ি কাড়ি নোট আছে
সেই শুধু সে আগুনে খঁই ভাজে।
স্বপ্নও এখন দেখি না নবনীতা,
ভাল স্বপ্ন দেখতেও
পেটে দানা লাগে।
কত মিষ্টি বসন্ত পেরিয়ে গেল,
তোমার সাথে গিটছড়া
বাঁধা হলো না।
তোমার দীঘল রেশমি চুলে,
একটি রাঙা জবা
গোঁজা হলোনা।
অভাব আমার পিছু ছারবে না নবনীতা।
কবিতাও আর লিখবোনা,
দু-বেলা দু মুঠো ভাত জোগাতে
যার দিন শেষ,
তার কাছে কবিতা বিলাসিতা।
ভালবাসতে কিছু লাগে না,
কিন্তু, ঘর বাঁধতে,পয়শাঁ লাগে নবনীতা।
বাবা মায়ের পছন্দের ছেলেকে
বিয়েটা করে নাও নবনীতা!
আমার দৈন্যের সাথী
হতে চেয়ো না।
প্রেমিকের সবচেয়ে বড় শত্রু
কি জানো নবনীতা?
… দারিদ্রতা।
দুনিয়াতে ভালবাসা গুলো
পূর্ণতা পায় না
শুধু এরই কারণে।
কেউ ভাল মন খোঁজে না,
সবাই ভাল ঘর খোঁজে।
তাই বলছি নবনীতা,
তুমি আর এসোনা।
এই নিরন্ন প্রেমিকের মুখ
আর দর্শন করোনা।