তাসলিমা কবির রিংকি’র কবিতা
জীবনবোধ
শহরের নির্জন রাস্তায় তুমি সবুজ হলুদ লালবাতি হয়ে জ্বলো নিত্যকার
যদি বলি আবার শীতের দিনে মাথার উপর হও দুপুরবেলার তপ্ত সূর্য,
আমাকে তুমি গল্প ভেবে পড়ো,
মনে গেঁথে করো পর্যবেক্ষণ!
বেশ কিছু দিন যাবত!
আমাকে ছুঁয়ে দেখার তাড়না তোমার,
অবশ্য আমিই এখন তোমার নিয়মিত গল্প কবিতার অংশ বিশেষ
তোমার সকল কিছুর উর্ধে আমায় রেখে গন্তব্য ঠিক করা,
আমি যেনো তোমার সীমারেখার সীমানাপ্রাচীর ওই টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া!
গল্পের চরিত্রের মতো পোশাকী ক্যানভাসের তুলি।
তোমার চোখের দিকে তাকালে মনে হয় প্রখর দৃষ্টিতে সমস্ত শরীরের ছবি তুলে আনে!
আজ সেই প্রেমময় মুখ মলিন! মুখভর্তি কাঁচাপাকা দাড়ির আস্তরণ!
আমি স্তম্ভিত!
দাঁড়িয়ে দার্শনিক ভাবনায় খুঁজে বেড়াই অসমাপ্ত জীবনবোধ।
প্রহেলিকা মন
হাহাকার করা অবাক বিশালতায়
দেখো আকাশ কেমন নিজেকে আড়াল করে কাঁদে,
ধোঁয়াসা কুয়াশায় পাতার মর্মরে শোন শিশিরের দীর্ঘশ্বাস
যানজটে মুখরিত মুর্খ শহর অঙ্কুরিত হয় দূষণে বারবার
এখানে জীবন মানে হাস্যরসের খোরাক!
প্রতিনিয়ত সুরার মত পান করা হয় পবিত্র বিশ্বাস
প্রতিটা মানুষ যেন জীবন্ত আগ্নেয়গিরি
চোখ দিয়ে ঢালে ফুটন্ত লাভা
নিকোটিনের সাথে উড়ে যায় মায়া
তবুও জীবন জীবন খুঁজে বেড়ায়।
একদা এখানে থরেথরে সাজানো ছিল স্বপ্ন
নিয়ত চাষাবাদ হতো সুখের
শীতল পরশ বুলিয়ে যেত আশা
আর ভালবাসার খোরাক ছিল কবিতা
তখনও লেখা হয়নি জীবনের অদেখা ভুবন
ভিন্ন সুরে বাজেনি পিয়ানো
স্বচ্ছ জলের দিঘী ভেবে নেমে
দেখি অকুল পাথার হাবুডুবু
হাহুতাশ শোনিতের বুদবুদ
গাটে বাধা স্বপ্ন নিয়ে মৃতুর আমন্ত্রণ
তখন আমি নিতান্তই নাবালক
ভ্রান্তির প্রলভে পড়ে প্রহেলিকা মন
মিথ্যে বিশ্বাসে টেনে নিয়ে চলি
মরিচিকা ক্ষণ।
চিরদিন বাঁচার প্রয়াস
ফেরারী কষ্ট কিনেছিলাম
তোমাকে ভালবেসে,
বার বার মৃত্যুকূপে নিক্ষিপ্ত হয়েছি
তোমার অবহেলার উৎসবে,
ক্লান্ত চোখে খুঁজে নাও ফাঁদ
তুমি মত্ত অমৃত পিয়াসে
আমাকে ছুঁড়ে ফেলে আঁধারে
একাকী নিঃস্ব দুপুরে
মন পোড়া গন্ধে হাসছো তুমি
আমি নির্বাসিত
আমার অবলা কথাগুলো
পড়ে থাকে বিরহী সমাধিরাজে
একাকী দুপুর বিকেল নিঃস্ব রাত কেটে যায়
ডুবে যাওয়া ভুমিহীন আশাগুলি এলেনেলো হাওয়ায় উড়ে আর তোমাকে পাওয়ার মিমাংসা খুঁজে
মাঝে মাঝে তোমার স্পর্শে ফিরে পাই
ক্ষণিক প্রশান্তির আবির।
সুচতূর তুমি সবটুকু সুখ নিয়ে
আনমনে হেঁটে যাও নবদিগন্তে।
আলোছায়ার নিশিরাতে
আমি নিশ্চুপ অভিমানে
সমর্পিত হই তোমারই ধ্যানে,
মুদে যাওয়া চোখে প্রেমের স্বপ্নবাহনে
তোমাকে ছুঁয়ে যাই চিরদিন বাঁচার প্রয়াসে।
এ গল্প চিরন্তন
পুলিশ যেভাবে অপরাধীর ঘর চারপাশ ঘিরে
তল্লাশি করে, ঠিক সেভাবেই তুমি আমাকে…
পুলিশ যেভাবে অপরাধীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে সেভাবেই তুমি ইঁদুর বেড়াল খেলা খেলো আমার সাথে!
তবে কী তুমি অভিজাত এলাকার ভদ্রলোক মাস্তান?
আমার চোখ খোলা কিন্তু মুখ বন্ধ করে দেখে যাচ্ছি
পুলিশ আর মাস্তান ও প্রেমিকার এমন জীবন বন্দি খেলা।
আমাদের এই গল্প অভিশপ্ত মনে হয় আজকাল আমার কাছে।
এ গল্প চিরন্তন, যুগ যুগ ধরে সনাতন থেকে নিত্যদিনের নৈমিত্তিক গল্প।