দ্বীপ সরকারের গুচ্ছ-কবিতা
বিরান হওয়ার রাত
একটা বিরান হওয়ার রাত-
জামদানি কুয়াশার ভেতরে থেকেছি নিশ্চুপ
চারপাশে জ্বালাময়ী ঝোপঝার
সেদিনের সেই ভৌতিক রাতের কথা ভুলিনি-
আঘাতে আঘাতে বিলুপ্ত কথারা মরে যাচ্ছিলো-
লুণ্ঠণের আওয়াজ থেকে শিখেছি বিরহের গান
চোখজুরে নিশিন্দারার কোমল স্পর্শ
তাথৈ নাচে কিছু অন্ধকার এসে ঘিরে ফেলে আমায়
আমি আকণ্ঠ পান করে নিচ্ছি ভয়ার্ত শিয়ালের ডাক
তবুও নিজেকে দাঁড়িয়ে রেখেছি-
অপেক্ষার ভেতরে অপেক্ষাদের কতোনা ব্যাপার থাকে!
হেমন্তের সাদাসিধে বয়ান
সকালের কিনারে গিয়ে রোদ কেড়ে খাচ্ছি
মুড়ি মুড়কির সাথে- আলো বাতাসের কি যে খেউড়!
উঠোনে একজোড়া কবুতর-
ভুল সংস্কৃতি থেকে সরে দাঁড়ালে হয়ে গেলো একটা বুনোচিল
শিশিরের ঘাড় ঘেঁষে উড়ে যাচ্ছে পানকৌড়ি
বহুদূর-
নিশানার কাছে পড়ে আছে নদীর তীর
ফুলকপির খোপে খোপে আটকে থাকা নিওর
গড়িয়ে যাচ্ছে নদীর শরীরে শরীরে
গোপনে পানকৌড়ি চেটে খাচ্ছে নদীদের উঠতি বয়স
চাদরের ভাঁজে গুছিয়ে রাখা নদীদের কথা নিয়ে
পানকৌড়ি আর আমি কথা বুনিয়ে যাচ্ছি হরেক রকমের।
নিওরের টিপ
আকাশ পেখম মেললে- পৃথিবীও ছড়িয়ে ছিটিয়ে প’ড়ে
ছায়াঘেরা কুয়াশার চোখফোটে,দূর্বাঘাসের কি যে উল্লাস!
কাশবনে মেঘসমূহের দরদ ভরা হাসি-
কুকুরে কুকুরে ইশারার ঝর- অদ্ভূদ সঙ্গমের দিন ওদের
অতঃপর প্রযত্নের জোসনাসমূহ
কুয়াশার খাম থেকে বেরিয়ে আসে
খিল খিল করে হাসে জানলার কার্টেইনের কাছে
এ কারণেই শরতকে বলি- আসো ফিরে ফিরে
বহকাল ঘুরে ঘুরে ফের আসো
পৃথিবী সমর্পিত হলে- পলাতক শীতও আসে দেশে ফিরে
কুহুক জড়ানো গোধূলীরা ডুবে যাচ্ছে যাক একখন্ড “নিওরের টিপ” নিয়ে
পরের সকালে খোঁপায় বেঁধে মুদ্রিত হয় নতুন করে