বঙ্গ রাখাল এর গুচ্ছ কবিতা
নিমগ্নরাত
এক স্বকরুণ কণ্ঠে ডেকে গেলে তুমি।
লোকালয়-গ্রাম হতে কিছু দূরে একটি
বিষাদী বালক মুক্তিযুদ্ধের গল্গ বলে…
বাবু অনেক দিনের পরিচিত স্বদেশ ছেড়ে কোন গাই- গ্যারামে যাবো,
ঘরে পঙ্গু মেয়ে আর তিনবার তালাক প্রাপ্ত বোন।
আজকাল বন্ধুদের হিজলের গাছে আলেয়াভীতি
অথচ ফড়িংয়ের পিপাসা বুকে নিয়ে বদলায়
আপন অস্তিত্বকালীন কয়েদীজীবন…
আগুন নিয়ে এখন খেলতে ভালোবাসি
আমি ভুল পথের পথিক হলেও জরাগ্রস্ত বৈরাগী নই
যৌনতায় কিনে রাখি নির্বাসিত প্রেম
নারীর অবিরাম আতাফলে নিমগ্নরাত…
আলোকিত সুজন
দূরন্তবালক-তোমার সংগ্রামমুখি জীবনে
আত্মক্ষত নিয়েই ফুটিয়েছো-ডুবোজলের
আলোকিতফুল আর পেলামের গভীর
মমতা বুকের খোড়লে রেখে উড়িয়ে দিলে-
ঘুমকাতুনী মেয়ের ভুল বানানে লেখা ডুবোমাছি স্মৃতি।
ত্রিশূল তোমার বুকের মাঝে অপচয়ের ক্ষরণ মুখস্ত করে
তবুও তুমি বটবৃক্ষের বিষণ্নছায়ায় শান্তির ফাগুন পাঠিয়ে
বুনোঘাসের চরণে রাখো আলোকিতভোর…
রোজ মান্দাসে ভাসে কাঙ্গালীজীবনের খুচরা খুচরা ভুল
তবু তুমি আমি আমরা মানুষ।
ঝরাপাতার মত করে কেন তুমি কুচবরণের মেয়ে হবে…
বেঁচে থাকার বহুল আস্ফালনে তুমি জন্মান্ধ দারোয়ান সাজোনি
কিংবা মুখোশের আড়ালকথনের পাগলীবটশ্বরী…
বুনোনৃত্যের রকমারী চাঁদের পিঠে চড়ে তুমি ক্রমাগত জ্বেলে যাও আলা…
বৈরি সময় আমার
রেবাতী মাহালী
তোমার ঘুমন্ত পাখিগুলো
নিঃস্ব ¯স্নানে শীৎকার দেয় সন্ধ্যাফাগুনে।
স্বপ্নের ঘোড়া অনুতাপে আমি
তাবৎ লুণ্ঠিত ধান ক্লান্ত হয়ে জন্ম নেয়
বিবর্ণ পৃথিবী আমার, রাস্তায় গনগনে আগুন
মা রান্না করে রাতের মৃতবর্তীসকাল।
চোখের গভীরে বালিকা মেয়ে
নিমজ্জিত হয় দীর্ঘশ্বাসের আদিমতা ক্রয় করে…
বন্দুকের নলে আমি আজ বিশ্বাস করি না
মুখচ্ছবি অনেকটা অবসন্ন ধূলায় জমা করে প্রেম-
কুড়িয়ে পেয়ে তোমাদের শৈশব ।
এখন আমি খেলার সাথী খুঁজি না
মৃতের মতো ঘুরপাক খেয়ে খেয়ে প্রস্থান করি।
শোষণের ছায়া
পাখির মতো শুয়ে আছি। নিস্তবব্ধ বালক। ফসলিমাঠ পার হলেই ভেঙ্গে যায় সভ্যতার রোমাল। বৃক্ষমাতা জানে-রৌদ্রে মানুষেরা বাস্তবিকতা ছুঁতে পারে না। গম্ভীর বৃক্ষের ছায়ায়-তুমি অটল চুলে বেঁধে আছো লালফিতা।
রুপকথার কুয়াশারা-বাবাদের জাদুকর করে, উড়িয়েছে মুদ্রার কবুতর আর বৃদ্ধের আঁকা পোট্রেটচোখে জালে পূর্বপুরুষের শোষণের ছায়া …
নম্রতার জালে আবদ্ধ-শোষণের ক্ষুধার্ত উন্মাদনা।
তোমাকেই বিক্রি করি
ডিবোর্সি কাগজে তোমার ছাপ মাঝি ।
নিজেই নিজের গতর শিমুলের বনে, নিবিকারে লুকিয়ে রাখে বনবাসি সকাল।
রাত্রির পোয়াতি লাজ মুখোশের ভিড়ে আমি এক অন্দবালক।
হৃৎপিণ্ডের মায়ের ভীত আর্তনাদ-বন্দি করে বাতিলের ফেলে আসা ভোর।
অশনিসংকেত তুলে তুমি- মাদুলি বিক্রি হাতে ছিঁড়ে ফেলো প্রেমিকার…
ভালো লেগেছে