কবিতা ।।ইলিয়াস ফারুকী।। ফেব্রুয়ারি কবিতা উৎসব সংখ্যা
ক্ষুধা
কেওক্রাডং পাহাড় চুড়ায় সূর্যের শেষ রশ্মি মাথা ঠেকায় লজ্জিত সন্তর্পণে।
রাতের দৌরাত্ম্য তাকেও কাঁপায়।
ক্ষুধার্ত যুবতীর কুমারীত্ব পরীক্ষার দাবি
তোলে লুচ্চা সমাজ সাধক।
নেড়ি বুড়ি থরথর কাঁপে স্মরণ করে তার
স্মৃতির অতীত।
সমাজের কোলে চড়ে বিহবল চোখে তাকিয়ে
থাকে শিশু কন্যা।
ক্ষণিক পূর্বে মা তার ঢুকেছে অন্দরে।
শিশুটির পেটে দুধ পড়েনি আজ চারদিন।
অবুঝ কন্যার চোখে দোলে ঝুলন্ত বোধন।
সমাজপতিরা আগ্রহ নিয়ে ভবিষৎ হিসাবে ব্যাস্ত।
অবিন্যাস্ত সময়
হৃদয়ে গভিরে দোলে যখন অশান্ত ঢেউ
নোনা জল ঝাপসা করে দেয় নিটোল সৌন্দর্য
কেঁপে উঠে হাট, নিকষ যৌবন
আঘাতে হৃদয় ভাঙ্গে, চিৎকারে শব্দের জৌলস
আত্মীয় বন্ধুরা তিতিরের মতো ঢুকে পড়ে বাঁশ ঝাড়ে
জটাধারী সাধু ধ্যানের গভিরে চলে যায়
হাতি খাঁদে পড়ে শুধুই মেতায়।
মাতৃত্ব
লক্ষ ভোল্টেজ কষ্টের পর যে চিৎকারে
পৃথিবী ঘোষণা শুনে এসেছে নতুন প্রাণ।
আগুন, বাতাস, শান্তির অস্তীত্বে তার
বিদ্রোহে, বৈভবে, ঘোষণায় বারবার
নাড়ি ছিড়ে বুকে এসে ধীরলয়ে যার
নিঃশ্বাসে, প্রশ্বাসে গেঁথেছে গভীর টান
যেখানে থমকে থাকে জননের ঘ্রাণ
সেখানেই বীজ বুনে সৃষ্টি হয়ে নতুন আখ্যান।
লালন
লালনের গানে থাকে অমরত্ব
লালনের প্রাণে থাকে জীবনের তত্ত্ব
লালনের ধ্যানে থাকে মানুষের টান
লালন বোঝেন মানবের বেদনার স্থান
জীবনের যত ছাই ভস্ম অস্থিরতা
লালনে বিরাজ করে নীরব আধ্যাত্মিকতা।