মধুমিতা’র কবিতা
সাধ
অতঃপর মেয়েটির এক মাত্র সম্বল ছিল আকাশ,
তাও চুরি হয়ে গেল!
যে পুরুষটাট বুকে মাথা রেখে সুখের সময় যেত।
সেও স্বভাব দোষে চলে গেল নষ্ট নীড়ে
এখন সে নটি বেটির হাতের পুতুল।
গাঁজা-মদের নেশায় আদরের বউটারে
বেঁচে দিল নষ্ট পল্লীতে।
সেই থেকে জীবনের পাতা উল্টে গেল…
অথচ বউটার সাধ ছিল খুব সামান্য!
ছোট্ট নিকেনো উঠোন ওয়ালা একটা ঘর
এক কোণে তুলশী গাছ আর মালতি, শিউলি ফুলের ঝাড়।
যার মালা গেঁথে পরাণের মানুষটারে পড়াবে
আপন মনে
সে সাধ অধরা রয়ে গেল, সেই মানুষটা হয়ে গেল পর।
পসরা সাজানো জীবন হলো আপন ঘর।
কামুক বাবুদের হায়নার থাবায়।
বেদনায় সিক্ত হলো রাঙা ভোর…
প্রিয় আকাশটা হয়ে গেল চুরি!
আবদ্ধ গণ্ডি
কেবলই সকলে আদিম সুখের ছোঁয়ায় মত্ত থাকতে চায়।
সময়ের আবর্তে ভোগ বিলাসে পরিনত হয় যাপিত জীবন।
ততবারই থমকে দাঁড়ায় বোধের কাছে…
আয়নায় নিজেকে দেখে,
আর মনে করে দূরের কোন ধ্বংসাত্মক পাহাড়ের একাকিত্ব বুকে নিয়ে নিয়ত হেঁটে চলেছে দূর্গম পথে।
সময় এসে জানান দেয়, গণ্ডির কাছে আবদ্ধ তারা।
গতিপথের তুমুল বাধা সত্বেও এগিয়ে যেতে ইচ্ছে করে
আরও উদ্দাম গতিতে।
বিমূর্ত মুহূর্তগুলো একদিন শেষ হবে জেনে-
খুচরো পয়সার মত জীবনের হিসেবটা আরেকবার মেলাতে চায়।
কিন্তু সেখানেই গরমিল দেখা দেয় হিসাবের খাতায়।
অন্তহীন মিল মেঘলা দুপুর থেকে ইতি টেনে চলে দিনের বাকি অংশ।
তাই তারা আবারও হতে চায় লাল-নীল ভেলভেটে মোড়ানো প্রজাপতির রঙিন পাখা।
যেখানে ভীড় করে হাজার হাজার মৌয়াল
চুঁইয়ে চুঁইয়ে পড়া মধুর সন্ধানে।
আবার ভালোবাসতে চায় সবুজে ভরা তেপান্তরের মাঠ, বনবাঁদাড়, বুনোফুল, বয়ে চলা ঢেউয়ের ছলাত ছলাত শব্দের তরঙ্গ।
কিন্তু আবদ্ধ মন আবদ্ধ বন্ধনের বেড়াজালে বন্দী হতে আর ভালো লাগে না তাঁদের
মুক্তির আস্বাদে ছুটছে গতিপথহীন প্রান্তরে।
ছুটছে, ছুটছে,বিরামহীন ছুটে চলেছে সার বাঁধা পিঁপড়ের মত!
কোথাও নেই সেই আদিম সুখের ছোঁয়া
রক্তাক্ত হয়েছে হৃদয়ের প্রতিটি অঙ্গন আবদ্ধ গণ্ডির অন্তরালে…
১০/৭/২০২০.