কবিতা

কমল কুজু’র গুচ্ছ কবিতা

অবাক সূর্যোদয়

বিবর্ণতার শেষ বিন্দুটুকুও মেখেছি গায়
অবলীলায়;
শরীরের প্রতিটি রোমকূপ ভরিয়ে রেখেছি,
বিষাক্ত শরে-
অবহেলা ভরে!
মৌনতার সাথে গড়ে সখ্য,
রঙমহলের ঝাড়বাতি হয়েই রইলেম পড়ে
চিরটা কাল।
মাতাল !
তোমার জন্যে, শুধুই তোমার জন্যে
নিজের সমস্ত আলো বিলিয়ে
সারা পৃথিবীর আঁধার করেছি দূর –
আমার ই ঘর রেখেছি আঁধারে
ভুলেছি সুরাসুর।
ভরদুপুর!
করেছ পর যত, আপনার চেয়েও আপন হয়েছি তত,
সাধারণের চেয়েও হয়েছি আরো সাধারণ,
ব্যথায় নিত্য হয়েছি চুরচুর।
স্বপ্নাতুর!
অসীমে স্বপ্নেরও শেষ হয়েছে অপমৃত্যুতে।
নিরন্তর!
তবুও এ আঁধারের হবে শেষ!
দেখ চেয়ে, পূব আকাশে নূতন সূর্যোদয়,
হাতছানি দিয়ে ডেকে যায় !

দ্রোহের পণ

এসো ধ্বংস হই!
ভেঙ্গে ভেঙ্গে পড়ি বৃষ্টির মতো;
কালো মেঘের প্রতিটি অংশের
সমাপ্তি ঘটিয়ে
এসো পড়ি ঝরে!
এসো বজ্র হয়ে হানি আঘাত
যত ভ্রষ্ট আচার ও সংলাপে, চূর্ণ
বিচূর্ণ করে
দিই হিংসুক বিবর্ণতা সমস্ত।
কূপমণ্ডূকতায় কতটুকু বাঁচা যায় আর।
– অবতার!
এসো খণ্ড-বিখণ্ড হয়ে যাই কেঁচোর
মতো, ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র হয়ে পড়ে থাকি
কোন এক আঁধার কোণে, টুকরো টুকরো
হয়ে যাই মিশে মৃত্তিকার সাথে!
করি শোধ মাটির কাছে
আছে যত ঋণ!
– শঙ্কাহীন!
কিংবা এসো কোন বিষধর সর্প হই!
আর প্রবল উন্মত্ততায় ছোবলে
ছোবলে বিষময় করি
সমস্ত চরাচর!
এসো –
বর্বর!


আকাঙ্ক্ষা ও প্রাপ্তি

যদি চাও এক সমুদ্র অমৃতরাশি
দিতে পারি তাও, কোটি বছরের সাধনায়
ঐ বিপুল জলধারাকে মুঠোবন্দি করব
এক লহমায়;

তারপর তোমার পায়ের তলায় করব হাজির
শুধুই তোমার কথায়!
যদি চাও গার্ড অফ অনার,
মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে
মাঠ-ভর্তি দর্শকের সামনে-
দৌড়ুবো ১৫ ঘন্টা, থামবো না একবারও!

যদি চাও সাগরভরা পঙ্কে দিব ঝাঁপ,
সারা শরীরে মেখে দাঁড়িয়ে রব ঠায়-নিরুত্তাপ
আবার নিমিষেই আসব ফিরে তোমার এক ছোট্ট ঈশারায়-
হংসের দল যেমন দেয় ডুব সাঁতার
পুকুর-জলে
আর ডাঙায় উঠতেই স্বচ্ছ হিমালয়।
ও হ্যাঁ!
যদি চাও বেঁচে থাকাটাও করবো মধুর
শুধুই তোমার জন্যে!
যেমন করে জোনাকিরা তাদের
সর্বস্ব দিয়ে আলো বিলোয়-
পৃথিবীর আঁধার করতে দূর!
যদি চাও…

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *