কবিতা

সাইয়্যিদ মঞ্জু’র গুচ্ছ কবিতা

লাশের নামতা

পলায়ন পথধরে পৃথিবীর জানবাজি দৌড়
ক্ষুর্ধাত কুকুর চোখে এক দুই লাশের নামতা
শশীর বুক কেবল ভীতিকর শোক কাতরতা
একাকার কারাগার এই ভব আঁধার বিমূঢ়।

খাঁচার ভেতর নাচে রুদ্ধশ্বাসে ক্ষুধা কান্না তুড়
পরাবলী ছুঁতক্রীড়া, রণমাঠ কেমন শূন্যতা
শৈত্যাধিক্যে থর থর,নিঃশব্দ-গর্জন, শালিতা
প্রকৃতির এ সময়, সভ্যতার অগন্তব্য মোড়।

মাহফিলে ডলফিন প্রাণোচ্ছ্বাসে নীলজলে রেস
দূরপথ উত্তরণ গর্ভবতী সহাস্য কাছিম
নৈসর্গিক সম্বোধন গঙ্গালতা সৈকতের শোভা
কাঁকড়ারা ঝাঁকে ঝাঁক সারাবেলা ছড়ায় আবেশ,
প্রলয়-বলয় মুছে ভূবলয় পবিত্র আদম
পূণর্জন্মের শপতি অভেদাত্মা অনুরাগ আভা।

পুড়ানদী খরাঘর

দরিয়ার বুকে উঁচে তিক্ত নোনাজল
উষ্ণতায় অসহিষ্ণু বিরূপ বাতাস
জলবায়ুর খোলসে দানবের খেল
কড়া নাড়ে দরজায় মানব হতাশ।

পুড়ানদী খরাঘর ডাকে মেঘ পানি
ভয়াল তুফান আনে জলের পার্বণ
থেমে নেই অযাচিত শিল্পায়ন খনি
রাক্ষুসে মোড়ল পুড়ে পুঁজির কার্বন।

ভাবনার এ সময় অনাগত দিন
প্রতিকূল জলবায়ু প্রভাব বিনাশ
বাসযোগ্য বসুমতি নিষ্কলঙ্ক সিন
উপকূল চাষামুখে সুখের আভাস।

এখানে বিরান ভয়ে আর্তনাদ স্বর
বিশ্বকর্ণ শুনছে কি বেদনা লহর।

উদ্বাস্তুকাল

মরুর তৃষ্ণা স্পর্শ করে আছে বুক
দূর থেকে বয়ে আসা কোনো এক জলধারা
কলতানে লিখে যায় পিপাসার দীর্ঘায়ু।

নির্ঘুম চোখ আঁকে রাতের মানচিত্র
নিশাচর ডেকে যায় খুউব কাছাকাছি
কোন সে পাখির ডানা-
ভারে তুলে আনে পরমাদরের নরোম ভিটে মাটি৷

অঝোরে নহর, বিম্বিত এ আঁধার-
অগোচরে বহমান অমুদ্রিত বর্ণের চোখ
সাক্ষী থেকো যামিনী
কতোটা শূন্য বিরান, দুঃসহ- এই উদ্বাস্তুকাল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *