গুচ্ছ কবিতা দ্বীপ সরকার
করোনা ও উড়ে আসা গাঙচিল প্লেন
এতোকাল উড়ে এসেছে,প্রশ্ন ওঠেনি
উড়ে এসে পড়েছে সমুদ্রে, প্রশ্ন ওঠেনি
আড়িপাতা শালিকজোড় কালে কালে দেখে এসেছে
সমুদ্রগামী পাগলা হাওয়ারা কালে কালে দেখে এসেছে
গাঙচিল প্লেন, উড়তে উড়তে, সামাজিক হতে হতে
বহুকাল বহু বছর এই আমার দেশে এসে পড়েছে
প্রশ্ন তুলিনি
অথচ, এখন আকাশে প্লেন দেখলেই তেড়ে আসি
সমুদ্রের নীল ডলফিন তেড়ে আসে
কোভিড ১৯ কে বরদাস্ত করতে পারছিনা আর
শালিকজোড় মসজিদ মন্দিরে গিয়ে দিতে যায় তালা
কিছু বকধার্মিক ভুল বুঝে ধর্ম শিখাতে আসে,
অথচ করোনার যদি হাত থাকতো- থাপরে শিখাতো ধর্ম
কিল ঘুষিতে গাঙচিল প্লেনের মটকে দিতো ধাতব পাখা
লকডাউন ও একটি বেড়াঘর
বিদেশ ফেরত মানুষটি-গতবারে এনেছিলো দশ ভরি সোনার লকেট,টাকার হিসেব নেই।
আত্নীয় স্বজনদের বিলিয়ে দিয়েছে ইচ্ছেমত।
একই মহব্বত আলী। এবারও এসেছে। সোনার লকেট আছে, টাকাও আছে। লাল পতাকা সেঁটে দিয়েছে বাড়িতে। পাশে স্ত্রী সন্তান মা বোন-কেউ নেই। স্পর্শ তুলে বাহু বাড়ালেই স্ত্রী সরে যায়-করোনার দিন চলছে এভাবেই–বেড়াঘরে।
লকডাউনে আছিগো ভাই
লকডাউনে আছিগো ভাই, লকডাউন আছি।
স্পর্শের কথা বলি, সেক্সের কথা বলি, কতোনা বাহানার শিস দেই। চোখের ভেতর থেকে ফুরিয়ে যাচ্ছে চাহনীর কলা
থেকে থেকে হা করে চেয়ে থাকে প্রেমিকা। অথচ চুম্বনের কতোনা দিন গেছে–অপেক্ষা বিছিয়ে দিয়েছি ঠোঁটের মাদুরে
বিস্মময়কর বেঁচে থাকা- বেঁচে আছি–কেনমতে লুকিয়ে আছি–ঘরের কোণে, বিছানার নিকটে।
কি যে বসন্তের কথকতা! শিমুল ফুলও বদলে ফেলেছে ফাগুণের ঘ্রাণ। করোনার দৌড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে ফাগুণ দিনের রোদ
লকডাউনে আছিগো ভাই, ধৈর্য্যের সুনসান পেরিয়ে উতরে গেছে প্রেম ও নিবেদনের পদ্ধতি
কোলাকুলি নেই, স্ত্রীর গাঢ় ঠোঁটও ধর্তব্য নয়–
নিশ্চিত কিছু ঘটে যাবে-হয়তো ঘটবেওনা
পৃথিবীটা আর গা ভাসিয়ে উঠবে কিনা জানা নেই