কবিতা

মারুফুল ইসলাম- এর কবিতা

ভ্রষ্ট লগ্ন

পৃথিবী হারায় পৃথিবীর বিপরীতে
পরপার কাকে বলে আমি জানি নাতো
একাকী হাঁটছি গোধূলির সন্ধিতে
তোমার শরীর প্রপঞ্চে প্রতিভাত

বিশ্বাস শুধু শব্দে সমর্পিত
কোথায় কৃষ্ণ কোথায় রাধার প্রেম
অঙ্গীকারের অঙ্গ কলঙ্কিত
ভালোবাসাবাসি নয় নিকষিত হেম

ভ্রষ্ট লগ্ন নিমগ্ন মৌতাতে
রাতের আগুনে কয়লা দিনের কাঠ
ভ্রমণের ইতি রমণের সংঘাতে
এক লহমায় মিথ্যে রাজ্যপাট

অপার্থিব

পৃথিবীর প্রান্ত থেকে নাভিশ্বাস ছুটে আসি কেন্দ্রে
বুকের কপাট খুলে দেখি
সেখানে নতুন কোনো অসুখ জন্ম নিল কি না
সকালগুলো সমর্পিত হয় নৈশ ধূসরতায়
অভ্যস্ত অনিদ্রায় নতুন কোনো অস্বস্তির আমন্ত্রণ নেই

শব্দের অন্তরে ভরে দিতে চাই শ্বাসরোধী
পুরনো যন্ত্রণা
মুগ্ধতার মন্ত্রজাল কেটে উড়িয়ে দিতে চাই শূন্যের রুমাল
প্রেমেও এখন কোনো প্রার্থনা খুঁজে পাই না
তাহলে কি বেঁচে থাকতেই ফুরিয়ে যায় জীবন

কোনো কিছুই যখন কোনো মানে রাখে না
তখন খেলাঘরে প্রবেশ করে দস্যু
সিন্দুক হারায় সম্ভ্রম
সম্পদ হারায় সংজ্ঞার্থ
বেঁচে থাকা হারায় বিবেচনা

অপার্থিব অর্থহীনতার অতলে ডুবে যেতে যেতে ভাবি
পার্থিব পরিভ্রমণের আদৌ কোনো প্রয়োজন ছিল কি না

অন্তর্লীন

যেখানে সমস্ত সত্য এসে সন্তর্পণে থমকে দাঁড়ায়
সেখানে মিথ্যের রাজত্বের শুরু
সেখানে তোমার মুখচ্ছবি অপস্রিয়মান
রাজদণ্ড ক্রমে কঠিনতর হতে থাকে
ক্ষমতা দেখায় ক্ষমাহীন ছেদনদন্ত
কাললগ্ন সাধুসঙ্গ স্বার্থমগ্ন তথা

বেপথু যৌবন তখন হাতড়ে মরে বাজারে মাজারে
খাবি খায় সতীত্বের নাকছাবি
অবিশ্বস্ত সম্পর্কের গ্রন্থি আলগোছে আলগা হয়ে পড়ে
পাখির পালকে লেগে থাকে অপচিত রেণু

প্রবাদবাক্যের পথে পচা শামুকে কাটে পা
না, আমার আর হাঁটা হয়ে ওঠে না অভ্যস্ত সড়কে
মড়কে উজাড় সংসার
শিশুর চোখে অনিশ্চয়তার ভীতি
কাঁপতে কাঁপতে কথামালা লুটিয়ে পড়ে রক্তঝরা প্রাঙ্গণে

সময়ের আঙুল ধরে সমান্তরাল পদক্ষেপে এগিয়ে যাওয়ার কাহিনি
অন্তর্লীন মহাজাগতিক প্রহেলিকায়
কেবলই মিথ হয়ে যায় নিত্যকার অনিত্যতায়

পরাজয়

বাঘের চোখে হরিণ ছুটে যায়
গোল পাতারা বাতাস নাড়ে বনে
কুমির ঘোলা জলের ঘ্রাণ পায়
মাছের পোনা বাঁচে সন্তরণে

চাঁদের গায়ে চাঁদের লীলাখেলা
ঘামের স্রোতে কামের নিরাময়
আমার প্রেমে তোমার অবহেলা
কাঁটার কাছে ফুলের পরাজয়

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *