ফারুক সুমন- এর কবিতা
মগ্নগিরি, ঝিরিপথ
এই যে মগ্নগিরি, এই যে ঝিরিপথ
এই যে অতৃপ্তি, এই যে আয়ুরথ
তুষারাবৃত মন নিয়ে রয়েছ নিশ্চল
কেমন স্তব্ধতা অথচ শক্তি প্রবল
লুকিয়ে রেখেছ মোহের মোহর।
প্রতিদিন এখানে শতচোখ জুড়ে
আবেগপরায়ণ পাখির বিলাপ
হে হিমালয়, তুমি শুনতে পাও?
অনিকেত মন, অন্তরোৎসার।
এখানে নারীমন খুঁজে ফেরে ঘর
এখানে পুরুষ যেন নিঃস্ব যাযাবর
এখানে শিশু যেন আবেগের চাঁদ
এখানে বৃদ্ধ যেন অন্ধকার রাত।
পাপ ও পতন
হয়তো মোহ, হয়তো মায়াজাল
হয়তো কন্দর্পকান্তির মতো
নিঃশব্দে সময় কাটে
কিছু মৌনমুখ, কিছু মুখরতা দেখে।
এই যে আমাকে দেখ-
কেমন হেসে উঠি গানের জলসায়
কেমন ঝলসে উঠি ধূসর পাতায়
দুধঢালা পর্বতের খাঁজে খাঁজে
হারানো হৃৎচিহ্নের খোঁজে।
মানুষ মূলত চিহ্নের অনুগামী
চিহ্নের খোঁজে উদ্ভিন্ন হয়ে
দিনশেষে ফিরে আসে
পাপ ও পতনের গল্প নিয়ে।
অনার্য সুর
এই যে তুমি চেয়ে আছো
চোখের কোণে বালির পাহাড়
এই যে তুমি চেয়ে আছো
দীর্ঘ জীবন নাওনি আহার।
এই যে তুমি চেয়ে আছো
চোখের কোণে দগ্ধদুপুর
এই যে তুমি চেয়ে আছো
অন্তঃপুরে অনার্য সুর।
এই যে তুমি চেয়ে আছো
প্রলেতারিয়েত জীবন তোমার
এই যে তুমি চেয়ে আছো
যেন সঙ্গবিমুখ যৌথখামার।
ধীবরের ছেলে
পিতা, আমারে ডেকে নাও, কসম
রক্তজলে ধোয়া এই ধীবর জীবন
ভালো লাগে না, পোড়ায় ভীষণ।
জল নেই এখন আর জলের মতন
নদী মরে পড়ে আছে, সাপের জখম
কানপেতে শোনা যায় মাছের মাতম।
শৈশবে, পিতার পাতানো জালে
আমার হাতের ডুলা ভরে যেতো
নানাপ্রকার মাছের আহ্লাদে।
সেই শখ ফুরিয়েছে এই আকালে
বেড়েছে দিনে দিনে দেনা ও দূষণ
জালের জমিন জুড়ে ছেঁড়া হাহাকার
তালি দেওয়া অজস্র চোখের কিনার।
ডুলা হাতে জাল নিয়ে ধীবর জীবন!
পিতা, আমারে ডেকে নাও, কসম
রক্তজলে ধোয়া এই ধীবর জীবন
আর ভালো লাগে না, পোড়ায় ভীষণ।
বাহ্! মনোমুগ্ধকর কবি❤