গুচ্ছ কবিতা ফজলুল করিম ফারাজী
আজকের শহরে
সিঁধ কাটা শহরে পথ হেঁটে দেখি-
এতো আমার পুরানো শহর,
পায়ের নিচে মাটি,রঙিন আকাশ,
ব্যস্তময় জন-জীবন,হাতুরি
পেটানো সোনালি সূর্য্য,
এসবই আমার চির চেনা।
ঘাম ঝড়া রোদে ভাবছি,
চিন্তার পরিবর্তন আসছে-
মনের পরিবর্তন আসছে
সভ্যতার হাত বদল হচ্ছে
ঠিক আমার মত করে।
না হলে কোন মাদকতায়-
দিনের আলোয় ধর্ষিত হয় মহাকাল,
সমাজের রন্ধ্রে মিশে থাকে স্বার্থের বেড়াজাল, মানবিকতার ড্রামে-
গ্যালন ভর্তি ভালবাসা আজ মুল্যহীন।
মাটির গন্ধে পাই- রসায়নের সখ্যতা,
চাদোয়ার পিঠে দেখি সোডিয়ামের বিচরণ
অসংগতি কাঁধে নিয়ে দলছুট পথ হাটে পাহাড় চূড়ায়।
ভাবছি এটাই কি- আমার সেই শহর ছিল
বিগত জন্মে পাওয়া উপহার।
জাগতিক দর্পন
ঘুমন্ত নগরীর বিশ্বাস রেখায়,
বৃষ্টির ঝরা পালকে বলাকার ডানায়,
তোমাকে উড়তে দেখেছি, দিগন্তের নীল আচঁলে।
কুয়াশা ঢাকা পথে অমাবস্যার গহীন বনে,
কত প্রহর চলতে দেখেছি আহত পথিকের মিছিলে।
সেদিনও দেখেছিলাম–
শঙ্খ চিলের নখে জীবন সপেঁ দিতে।
মাধবীর কপালে মোহিত লাল টিপে,
রঙ-ঢঙের ক্যনভাসে সাজানো নাটকে,
গদ্যের কস্তূরী ফেলে কবিতার শহরে,
তোমাকে চলতে দেখেছি মুক্তির মিছিলে।
আজও দেখলাম—
কাঁধে ঝুলানো ব্যাগে বস্তাবন্দি সভ্যতা,
তাবেদারী আর মানবিকতায় দৃষ্টি নন্দিত মঞ্চায়ন,
রঙীন চশমার ফ্রেমে সাজানো নীল নকশার কত শত প্রহসন।
শুধু বুঝলাম বিশ্বাস আরো কত দৃঢ় হলে
মানুষেই হরণ হরন করতে পারে মানুষের জীবন।
মাদক
নেশায় বুদ হয়ে যাওয়া প্রতিটি রাত,
কেড়ে নেয় যুবকের সম্ভ্রম।
জমে থাকা স্বপ্নগুলো ফুয়েলের তাপে ছিটকে পড়ে স্মৃতির বেলকুনিতে।
ব্রাউন সুগাড়ের মোহে নিজেকে খুঁজে চলে নিভূ আলোতে।
কখনোবা বেরসিক মন মহান হয়,
কখনোবা নিঃস্ব ভেবে সিগারেটের ধোঁয়ায় আত্মশুদ্ধি করে মননের।
নিকোটিনের রাজ্যে ঈশ্বর মুখ লুকায় কাঁচ ভাঁঙ্গা শহরে।
প্রতিটি পেগে মলিন হয় রঙিন সভ্যতা।
দ্রোহের কষ্টগুলো ছাঁই হয়ে ঠাঁই নেয় রুপালি স্ট্রেতে।
ঝাঁঝালো সংলাপে প্রত্যাশাগুলো কুড়ে মরে আধা জলে।
ঘুম জাগা পাখির ডানায় রাত ভোর হয়
সম্ভাবনাময় জীবনে নেমে আসে বিভৎস অন্ধকার।