নিলয় রফিক এর কবিতা
অলিন্দফুল
শীতফুলে রাতে ঘ্রাণ সুভাসে প্রণয়
আকাশে কপাটচোখে শব্দের পলক
দূরে-কাছে যেতে যেতে নির্ঘুম প্রদীপ
আরামে ঘুমিয়ে যাও সৃষ্টির শহরে।
বিদায় রজনীশুভ কোন কথা নেই!
গুহায় পাহাড়ে সুখ সুন্দর সকাল
প্রত্যহ নিয়তি পাড়ে কে যেন হাজির
পথের সড়কে ব্লক রিংটোন বাজে।
অসময়ে অভিমানে মেঘের পালকি
বৃষ্টি পড়ে মিষ্টিপানে ক্ষেতের বিরহ
অজ্ঞাত মুচকি হেসে নিষ্ঠুর স্বভাব
সুখের অলিন্দে ফুল ফুটুক সুরভি।
ঠনঠনিয়া
শিল্পীর সুন্দরে টানে কবি সম্মেলন
জ্যামের মিছিলে ঢেউ কুয়াশা আয়না
হলুদ ফুলের হাসি-চোখে দৃষ্টিপাত
ক্লান্তি দূর ইছামতি পাড়ে স্বপ্ন মন।
ঝিকিমিকি করতোয়া পরিযায়ী পাখি
মেধাবী তরুণ পথে-আলো ভবিষ্যতে
রজনী পাগল গানে-নাচে কণ্ঠেপাঠ
উৎসবে আয়োজন শব্দের তোরণ।
সাতমাথা ইতিহাসে মহাস্থানগড়
মনে পড়ে লখিন্দের শান্তির মিলন
পোড়ামাঠি স্মৃতিবুকে অমৃত মৃত্তিকা
শহরে ঠনঠনিয়া সুবর্ণ প্রণয়
কে যেন সমুদ্রে ডাকে নিশিরাতে একা
শিশিরে আগুন মুক্তা খুঁজি ঝাউশিরা।
কুকুরের লেজ
লাঠিটা ফেলে দিলেই অচল সড়ক
আমিও মানুষ মানবিক বীজ বুনি
ভিক্ষার বদঅভ্যাসে সুদের দালান
লাঠিটা ফেলে দিলেই সুখের আগুন।
শীতের মৌসুমে মেঘ দলদাসে গান
নতুন ছুরতে শিঙ নাড়ে শূন্যহাতে
মূর্খপাতা দলবেঁধে আড়ালে গোপনে
ভেসে ওঠে মুদ্রাগুহা পাহাড় সমান।
মুখগুঁজে ছলনার অভিমানে ঢেউ
অভ্যাসে স্বভাবঋতু বদলায় হাতে
চোঙায় হয়না সোজা কুকুরের লেজ
সর্পের কামড়ে বিষে নীল নথিঘরে।
মাথিনের জয়
কার্তিকে পুষ্পসকালে নন্দনকাননে
ঝরাপাতা ঝাউশিরা শরীরে জোয়ার
গোপন তাপপাহাড়ে সৌন্দর্য মিলন
উঁচু নিচু পথরেখা প্রেমের সুরভি।
মুগ্ধ গানে সবুজের সীমান্তে শহরে
নয়নাভিরাম দৃষ্টি পাথুরে সৈকত
গইরে মোহনা খুঁজে ধাক্কায় বিচ্ছেদে
অদৃশ্যে পাটুয়াটেক জীবন সুরত।
প্রকৃতির দৃশ্যমগ্ন ওড়ে যায় মন
রথের রোদেচশমা পড়ে নাফনদী
জলের কল্লোলে নীল হয়ে রক্তলাল!
পুড়া ছাই বাতাসের শেকড়ে-বিলাপ
ধীরাজে ছলনা চোখে ইতিহাসে লিপি
অনাহারে মৃত্যুযাত্রী মাথিনের জয়।
অসাধারণ কবিতা, পড়ে মন ভরে গেল। বর্তমান কবিতা অঙ্গনে এক নাম নিলয় রফিক। কবিতা অঙ্গনে বর্তমান সময়ের তরুণদের মধ্যে ভিন্ন। তাঁর কবিতার ভাষা-ভঙ্গিমা সম্পূর্ণ আলাদা।
সবগুলো কবিতাই মন ছুঁয়ে যায়। বিশেষ করে ঠনঠনিয়া ও মাথিনের জয় বেশি ভালোলেগেছে। কবি তাঁর মনের চোখ দিয়ে যা দেখেছেন কবিতার পংক্তিতে পংক্তিতে তারই প্রতিচ্ছায়া চোখে পড়ে। অনবদ্য তাঁর লেখনি শক্তি। অফুরান অভিনন্দন কবিকে।