কবিতা

গুচ্ছ কবিতা।। মাহফুজুর রহমান সৌরভ

নাগরিক স্কেনের শেষ দৃশ্য

উৎকন্ঠায় ছিলাম শ্রমজীবী ভাবনায়
অবশেষে মৃত্যুর উপঢৌকন পাঠালে-
রৌদ্রজ্জ্বল ঘামের সুঘ্রাণ চূর্ণপ্রাণে
ঈশ্বরের মন্ত্রপাঠ শেষে চলে যাও অন্ধপরিব্রাজক
এ তল্লাটে এখন অনুশোচনার পটভূমি;
ঝুলে আছে বিশুদ্ধ প্রান কথার অনিদ্রার সমীকরণ
পতনমুখোরিত দৈনন্দি ঘুমগুলো কেড়ে নেয়
বিষণ্ণ বিরহে স্বপ্নাহত রঙিন ভোর ছুঁয়ে
প্রদর্শন হয় লাশের মিউজিয়াম
সুবর্ণ এই মুখোশ নগরে উত্তর পুরুষে…
হাইব্রিড নগ্ন উল্লাস

স্বপ্নতাড়িত এই লজ্জারাঙা মুখ!
মনোহরণে প্রলুব্ধ হই বেহুলা মন
ঈশ্বরও চেয়ে দেখেন নাগরিক
স্কেনের এই শেখ দৃশ্য
বহুদিন প্রভূচ্ছাসে জেগে আছি
অন্ধকার ফসিল ছড়াবে
আমি দেখবো সূর্যোদয়ের মুখোশ।

জ্যোৎস্না মুদ্রিত নারী

বর্ণিলপ্রভায় সোনারঙ বিকেল শেষে
রাতের অবাধ্য জ্যোৎস্নাকে রেখে দিলাম
তোমার খোলা জানালার বাহুতে
পৃথিবীর দীর্ঘ উড়াল শেষে
ক্ষীণ আলোয় একটি জোনাকি পোকা
তোমার কামিজের অন্ধ ছায়াপথে ভুল ভ্রমণ!
আঙুলের মিহিন স্পর্শে পতঙ্গপ্রান ফিরে দিয়ে
অবশেষে লজ্জারাঙা মায়াবী নোঙর।

তোমর হাসির তরজমায়
ভোর হয় সূর্য হাসে
মুদ্রিত আলো রেখায় মন্ত্রমুগ্ধ হয় সোনার সংসার
দার্শনিক ভাবনায় আমি হেঁটে যাই
জ্যোৎস্না মুদ্রিত নারী আর আলোর মাখামাখি।

চন্দ্রপাঠ

এই সোডিয়াম রাতে কাস্তে চাঁদকে টাঙালাম
তোমার আঙিনা জুড়ে
তোমার সকল মান অভিমান নিভৃত পঙক্তি মালার জংশন জুড়ে খুলে দিলাম বিবর্ণ রাত
জ্যোৎস্নার করতলে স্বপ্নবোনা স্বপ্নচাষী
রাতের মৈথুন শেষে বিনিদ্র চুমু এঁকে দিলাম
তুমি দীর্ঘজীবী হও ধারাপাত জীবনের এক সমুদ্র তৃষ্ণায়
ইচ্ছে হলে ব্যাকরণে পাঠ নিও
তোমার আঙিনায় টাঙানো চন্দ্রপাঠের আসরে

দেখবে তুমুল সম্ভাবনায় জেগে উঠবে
মুঠোভরতি সজনেপাতার রোদ্দুর
এ রাতের রানওয়ে জুড়ে নেমে আসবে নক্ষত্রের মিছিল
তোমার ঠোঁটের আশীষ উষ্ণতায়-
আমাদের গোপন ভূমিকা;
তথাপি তোমার হাত ধরে পরস্পর প্রজাপতি হবো
এক রঙিন পৃথিবীর।

নোনা জলের ঢেউ

যাবতীয় আয়োজন শেষে কত ভেঙেছি
এই নদীতে নোনাজলের মিছিলের ঢেউ
শব্দবাণে স্বপ্নবোনা মানবিক হয়েছিলাম
কল্লোলিত জল আর আগুনের বিপরীতে
লুণ্ঠিত এ জলের ফোয়ারায়
নাইলন দু’চোখে ভেসে ওঠে অনুবাদ
দু’ কূলে তার ভাওয়াইয়া আর ভাটিয়ালি তাল
সম্ভাবনার রংবাহারি সূর্যরঙা ফুল

এ নদীর নোনতা জলে পলি মাটির প্রণয়ী ঘ্রাণ
শস্যর আরাধনায় রুপালী হাওয়ায় বেজে উঠে
নিগুঢ় ঘন্টাধ্বনি;
রচে গেছি বর্ষামঙ্গলদিনে নিজ মুদ্রা সমতলে
নৈশব্দে হাসে জ্যোৎস্নাগলা কুমারী নক্ষত্ররা
ও নদী চলো দূরে বহুদূরে-
দূরত্বের সীমারেখায় নোনাজল তীর্থে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *